More

Social Media

Light
Dark

‘লর্ড’ তকমাতেই ফিরছেন শান্ত

কী দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই না বিশ্বকাপের মঞ্চে এসেছিলেন বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্ত। ২ সেঞ্চুরির পাশে ৫ টা হাফসেঞ্চুরি, প্রায় পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই ব্যাটিং গড়, সাথে এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজার ছোঁয়ার হাতছানি। 

সব মিলিয়ে শান্ত চলতি বছরে যে ফর্মে ছিলেন, তাতে তরুণ এ ব্যাটার এবারের বিশ্বকাপ রাঙাবেন, তা এক প্রকার অনুমেয়ই ছিল। বাংলাদেশের হয়ে এবারের বিশ্বকাপে যে শান্তই হবেন মূল ব্যাটিং স্তম্ভ, তিনিই যে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করবেন, এমন ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলেছিলেন অনেকে। 

তবে বিশ্বকাপের অর্ধেক পথ পাড়ি দেওয়ার পর পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। ছন্দে থাকা শান্ত যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। যদিও আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন টুর্নামেন্ট জুড়ে ব্যাট হাতে দারুণ কিছু করার আভাস শুরুতেই দিয়েছিলেন শান্ত। 

ads

কিন্তু এরপর যত সময় গড়িয়েছে, সমানুপাতিক হারে কমেছে শান্তর ব্যাটিংয়ে ধার। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই পঞ্চাশ পেরোনো শান্ত পরের চার ম্যাচে নিজের রানকে দুই অঙ্কেই নিতে পারেননি। 

উল্টো দুইবার শূন্য রানে ফিরে গোল্ডেন ডাকের শিকার হয়েছেন তিনি। যা বাংলাদেশের হয়ে এক আসরে তো বটেই, পুরো বিশ্বকাপের ইতিহাসেই বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ গোল্ডেন ডাকের বিব্রতকর রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে।

দেশের ব্যাটিং লাইনআপে মূল স্তম্ভ হওয়ার পথযাত্রায় শান্তকে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি। ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সমর্থকদের তীব্র রোষানলের মধ্যেও পড়তে হয়েছে এ ব্যাটারকে। শুধু তাই নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ট্রল, টিপ্পনীর সাথে চর্চিত হয়েছে শান্তর নাম। সেখানে মাত্র এক বছরের ব্যবধানেই নিজের উত্তরণ ঘটিয়েছিলেন শান্ত। 

টেস্ট, ওয়ানডে এমনকি টি-টোয়েন্টি, সব ফরম্যাটেই ধারাবাহিকভাবে রান করে গিয়েছেন এ ব্যাটার। আর তাতে অনেকের মাঝে শান্তকে নিয়ে প্রত্যাশাও জেগেছিল আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু বিশ্বমঞ্চে এসে সেই আস্থার প্রতিদান দিতে এখন পর্যন্ত মোটাদাগে ব্যর্থ এ ব্যাটার।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বৈশ্বিক আসরেই চাপেই কি তবে নুয়ে পড়ছেন শান্ত? নাকি স্রেফ একটা ব্যাডপ্যাঁচ? শেষ পাঁচ ম্যাচে শান্তর আউট হওয়ার ধরনগুলো দেখলে অন্তত এ সময়টাকে ব্যাডপ্যাঁচ আখ্যা দেওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রায় প্রতি ম্যাচেই সফট ডিসমিশালে প্রতিহত হয়েছে। আর তাতে আত্মবিশ্বাসহীনতার স্পষ্ট ছাপ দেখা গেছে। 

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বাকি আর তিন ম্যাচ। সেমির রাস্তা যে অনেকটা দূরে সরে গেছে, সেটা মানছেন সবাই। তবে ফিরে আসার রাস্তাটা বন্ধ হচ্ছে না শান্তর জন্য। এখনো নিজেকে রাঙানোর সময় পাচ্ছেন এ ব্যাটার। তবে পারফর্ম করার চাপে শান্ত নির্ভার হয়ে খেলতে পারবেন কিনা, সেটাই এখন দেখার ব্যাপার। 

শান্ত অবশ্য প্রবল সমালোচনার স্রোতের প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে পারফর্ম করেছেন। এবার তাঁর সঙ্গী প্রবল সমালোচনা নয়, শঙ্কা। শান্ত স্বরূপে ফিরতে পারবেন তো? নাকি শান্তর সামর্থ্যটাই আটকে গেছে দ্বি-পক্ষীয় সিরিজ অবধি? 

নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদটা তাই নিশ্চয়ই এখন অনুভব করছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্রারিক্ত ট্রল, ‘লর্ড শান্ত’ নামে তামাশাপূর্ণ টিপ্পনী— এমন সব অযাচিত সমালোচনা, শান্তর চেয়ে কেই-বা ভাল জানেন? শান্ত নিশ্চিতভাবেই তাই নিজের গড়ে তোলা জায়গাটা অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইবেন না। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link