More

Social Media

Light
Dark

হার্দিক পান্ডিয়া ২.০!

বাসার নিচের মুদির দোকানে এককালে ঋণের পাহাড় হয়ে যেত। আর এখন তো অন্যতম দামী খেলোয়াড় হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চলেছেন এক ফ্রাঞ্চাইজির অধিনায়ক হিসেবে। জীবন হয়ত এমনই। আপনাকে টিকে থাকতে হবে, লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সে কাজটা খুব ভাল করেই করতে জানেন হার্দিক পান্ডিয়া। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ২০২২ আসরে গুজরাট টাইটান্সের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া।

হার্দিক পান্ডিয়াকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। ভারতের এ সময়ের আলোচিত কিংবা সমালোচিত ক্রিকেটারদের একজন হার্দিক পান্ডিয়া। হার্ডহিটিং আর কার্যকরী বোলিং তাঁকে নিয়ে এসেছিল আলোচনার শীর্ষে। ক্রিকেট বহিঃর্ভূত নানা কাণ্ডে সমালোচনাও সইতে হয়েছে তাঁকে। তবে এসব কিছুর উর্ধ্বে গিয়ে হার্দিকের এখন লক্ষ্য জাতীয় দলে আবার নিজের জায়গাটা খুঁজে পাওয়া।

এ বছরের শেষ ভাগে অর্থাৎ ২০২২ এর অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়াতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২১ আসরের মতো কোন ভুল হয়ত করতে চাইবে না ভারত। সে জন্যে এই বছরে যতটুকু সময় পাবে তাতেই তাঁদের আগামী বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করে ফেলার একটা প্রক্রিয়া চালানোর চেষ্টা করবে। যেহেতু এই বছর আইপিএল অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেহেতু ভারতীয় নির্বাচকদের কাজটা খানিক সহজই হয়ে গেল।

ads

দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে অনুষ্ঠি হবে আইপিএল। নির্বাচকদের নজর থাকবে তীক্ষ্ম। হার্দিক পান্ডিয়া হয়ত এই সুযোগটা আরও একটিবার কাজে লাগাতে চাইবেন নিজের জন্যে। তাঁর পরিবারের জন্যে। প্রাণপন চেষ্টা করে যাবেন জাতীয় দলে আবার নিজের জায়গাটা খুঁজে পেতে। তবে সেখানটায় বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে তাঁর বোলিং অপারগতা।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে একজন বাড়তি পেসার খেলানোর প্রয়োজন নিশ্চয়ই রয়েছে। সেদিক থেকে হয়ত দলগুলো একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডারদের দিকে ঝুকবে। অতএব হার্দিককে আবার বল হাতে তাঁর স্বরুপে ফিরতে হবেই। তাঁর অস্ত্রাগারে বোলিংটা যুক্ত করা অনিবার্য। যদিও অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাই মনে করেন হার্দিক শুধু ব্যাটিং দিয়েও সুযোগ পেতে পারেন দলে কিংবা একাদশে।

হ্যাঁ, এ কথাও ফেলে দেওয়ার উপায় নেই। হার্দিকের ব্যাটটা দারুণ চলে। বিশেষ করে স্লগওভারে। আবার ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে খেলার সামর্থ্যও রয়েছে তাঁর। অতএব একজন পুরোদস্তুর ব্যাটার হিসেবেই তিনি দলে সুযোগ পেতে পারেন। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন অলরাউন্ডারদের বেশ চাহিদা। আর অস্ট্রেলিয়ার পেস কন্ডিশনে একজন পেস-বোলিং অলরাউন্ডার যেন বনে যেতে পারেন তুরুপের তাস।

তবে ব্যাটিং হোক কিংবা বোলিং হার্দিক যেকোন সময়েই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা রাখেন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে জয়ের পাল্লাটা সবসময় হার্দিকের দিকেই ঝুকে ছিল। জাতীয় দল কিংবা আইপিএল কোথাও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তাছাড়া ফিল্ডিংটাও দূর্দান্ত তাঁর। আলাদা একটা মেজাজ তিনি ছড়িয়ে দিতে পারেন দলের মধ্যে। বিশেষ করে এই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।

অতএব এখন গুজরাট টাইটান্সের অধিনায়ক হিসেবে হার্দিক পান্ডিয়াকে আবার নিজেকে প্রমাণ করতে হবে আইপিএলের মঞ্চে। নিজের সামর্থ্যের সম্পূর্ণ প্রমাণ রেখেই তাঁকে জায়গা করে নিতে হবে বিশ্বকাপ দলে। সে জন্য অবশ্য তাঁকে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হবে। তবে সে অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।

জীবনের সংগ্রাম করেই হার্দিক পৌঁছেছেন এই অবধি। জীবনের একটা পর্যায়ে তাঁর বাবা যখন নিদারুণ যন্ত্রনায় কাতর, অসুস্থতা ঘিরে ধরেছে তাঁকে সে তখন থেকেই হার্দিক পান্ডিয়া জানেন সংগ্রাম করতে। এই জৌলুশও তাঁকে সেদিনগুলোর কথা ভুলিয়ে দেয়নি। তাইতো কঠোর লকডাউনের মাঝেও তিনি সে সব মানুষদের পাশে থেকেছিলেন যারা পান্ডিয়া পরিবারের দু:খের সময় তাঁদের পাশে ছিলেন।

সংগ্রাম করতে জানেন হার্দিক। প্রতিভাও রয়েছে তাঁর। এখন খেলাটা আসলে সময়ের। মঞ্চও প্রস্তুত হার্দিকের দ্বিতীয় সংস্করণের আবিভার্বের জন্যে। আইপিএল ২০২২-কে নিজের মত করে রাঙিয়ে তুলতে নিশ্চয়ই অপেক্ষা করছেন হার্দিক পান্ডিয়া। নিজেকে আবার স্বরুপে ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে জয়ী হবেন হার্দিক পান্ডিয়া?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link