More

Social Media

Light
Dark

বিরাট-রোহিত বাহিনী, চালাও পানসি আহমেদাবাদ

পুরো দলটায় যে যার নিজের রোল প্লে করেছে একদম ঠিকঠাক। এর থেকে পারফেক্ট ম্যাচ হয় না। বিরাট ব্যাটেড স্টুপেনডাসলি। কিন্তু রোহিত বা শ্রেয়াসের কথা ভুললে চলবে না। বিশেষত: রোহিত। ফিউহ! ভারত পিচ খুব ভালো পড়েছে। মনে রাখবেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বোলিং লাইন আপ এই বিশ্বকাপে দুর্দান্ত জায়গায় বল রাখছেন। সকলেই লম্বা। তাই স্পঞ্জি বাউন্সও পাচ্ছেন। এই অবস্থায় জ্যানসেনকে আক্রমণ করাটা ফ্যান্টাস্টিক।

আপনারা ভাববেন, হয় রোহিত, না হলে কোহলি রান পাচ্ছে। যে দিন দুজনেই পাবেন না? সেদিন বাকিরা খেলে দেবে, চিন্তা করবেন না। একটা খারাপ দিন হতেই পারে। কিন্তু এই দলটা নিজেদের জাদু কাঠিটা খুঁজে পেয়ে গেছে। রোহিত, প্রথমেই ফিফথ গিয়ার, গিল ধীরে ধীরে নিজের ছন্দে আসবেন।

উইকেট পড়লে বিরাট পিচ অনুযায়ী ম্যাচ সাজাবেন, শ্রেয়সকে লাইসেন্স দেওয়া আছে, পঞ্চম গিয়ারে চালাবার। একদিন রোহিত আর শ্রেয়সকে একসঙ্গে ব্যাট করতে দেখতে চাইছি। হ্যাঁ। শ্রেয়াসের শর্ট বলে সমস্যা আছে। কিন্তু সেটা গতিময় পিচে। এই সব উইকেটে দাঁড়িয়ে দশটার মধ্যে নটা পুল মেরে দেবেন শ্রেয়াস। রাহুল আবার তারপর অ্যাঙ্কর আর স্কাই ইনিংস শেষ করবেন জাদেজার সঙ্গে। মূল কথা পার্টনারশিপ। হ্যাঁ, হার্দিক থাকলে অশ্বিনকে খেলাবার কথা ভাবা যেত কিন্তু যে নেই সে নেই। এই ভারত তার জন্য কাঁদবে না।

ads

বোলিং। বিশেষত পেস বোলিং। এখন ভারতে বল বিশেষ স্যুইং করছে না। বাকিরা স্যুইং পাচ্ছে না তেমন। শুরুর দিকে সিরাজও পাচ্ছিলেন না। কিন্তু ওঁকেও লাইসেন্স দেওয়া আছে। কিছু হলে বুম বুম সামলে নেবেন কিন্তু সিরাজ শ্যুড গো ফর উইকেটস। কী ভাবে, যতটা সম্ভব স্যুইঙ-এর চেষ্টায় যাবেন। শুরুর দিকে ফোর্থ স্টাম্প লাইন ব্যাটারদের জন্য সমস্যা তৈরি করে, শিশিরে বল স্কিড করছে যদি সিমের উপর বা পাশে পড়ে। ওয়াবল সিম বা ক্রস সিম খুব একটা সিরাজ চেষ্টা করছেন না প্রথম স্পেলে।

বুমবুম নিয়ে কিছু বলার নেই। ওই যে বলেছিলাম এই নেকড়ের দলের ও নেতা। ও বাকিদের জন্য খাবার তৈরি করবে। প্রয়োজনে নিজে খাবে, যেখানে বাকিরা খেয়েছে বা পারছে না। তারপর মঞ্চ দুই সতীর্থর জন্য ছেড়ে দেবে। ভয়ানক কব্জির ব্যবহার, আউটস্যুইংকে নিয়ন্ত্রণ।

এর পর শামি। প্রথম চারটে ম্যাচে না থেকেও ১৬টা উইকেট। রিলিজ লক্ষ্য করুন। আগের সামির থেকে পার্থক্য খুব বেশি না হলেও ফলো থ্রুটা দেখুন। বল ওই ছন্দে পড়ার পর গতি বাড়াচ্ছেন, সিম পজিশন নিয়ে তো আলাদা করে কিছু বলার নেই। বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা বোধহয় বর্তমানে।

শামি অনেকটা নেহরার মতো বোলার। ঠিক মাথার উপর রিলিজ করছেন, ফলো থ্রু অনেক বেশি ডাইরেক্ট। যে জায়গায় বল ফেলছেন, ব্যাটারের মনে দ্বিধা তৈরি করা সময়ের অপেক্ষা। আজ মারক্রমের উইকেটটা ভাবুন। স্লো উইকেটে বল পিচের উপরের সার্ফেস চুমু খেয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। কোনওটা স্যুইং করে বাইরে যাচ্ছে, কোনওটা ঢুকছে। সিম মুভমেন্ট। ব্যাটারকে ধাঁধায় ফেলার জন্য যথেষ্ট।

কেশব মহারাজের মত ক্লাসিকাল বোলারকে খেলা যেখানে সমস্যা সেখানে রবীন্দ্র জাদেজার মতো আমার দেখা সেরা বুদ্ধিমান বাঁ হাতি স্পিনার তো আনপ্লেয়েবল হয়েই যাবেন। (ড্যানিয়েল ভেট্টরি, মিচেল সান্টনার খুব কাছাকাছি থাকবেন) জাদেজার উচ্চতার কারণে বল ফ্লাইট না করলেও সামান্য বেশি সময় হাওয়ায় থাকে। জাদেজা বল করছেন লেট এইট্টিজ বা আর্লি নাইন্টিজে। এই উইকেটে সামান্য সময় বল পিচ ঘুর্ণনের সঙ্গে ঘর্ষণ হলেই চলবে। তাতেই স্পিন তুলে নেবে সাপের ফণার মতো। আর ডার্ট বল যেটা সোজা যাবে তার কথা তো ছেড়েই দিলাম।

কিন্তু, কুলদীপকে দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে। আজই বলছিলাম শেন ওয়ার্নের ড্রিফটের কথা। সাধারণত লেগস্পিনারের বল লেগ থেকে অফে ড্রিফট করে তারপর আবার টার্ন নেয়। কিন্তু শ্যেন বলকে বাঁ হাতি অর্থোডক্স স্পিনারের মতো অফ থেকে লেগে ড্রিফট করাতেন। তাই স্পিন সামলানো সমস্যা হতো।

স্পিন তো ম্যাকগিলেরও বড় ছিল, শেন ওয়ার্নের থেকেও বড় ছিল। কিন্তু ড্রিফট ছিল না ওরকম। কুলদীপকে একই রকম করতে দেখলাম। সামান্য রাউন্ড আর্ম অ্যাকশন, কাঁধ, কোমরের ব্যবহার। কুলদীপ উইকেট তো এমনিতেই পাবেন কিন্তু যেভাবে যে গতিতে বল করছেন, ব্যাটাররা চাইলেই দুম করে মারতে পারছেন না।

যাই হোক, ল অফ অ্যাভারেজ, চেসিং, সেটিং দ্য স্কোর। এই দলটা দুর্দান্ত খেলছে। এদিক ওদিক হতেই পারে, কিন্তু গিয়ার পাল্টানোর কথা ভাবা যায় না। ব্র্যাডম্যানের কথাটা মনে পড়ল। ইটস বেটার টু গেট স্টাম্পড বাই থ্রি মিটার দ্যান মেয়ার থ্রি ইঞ্চেস।

ভারতীয় দল সেই সিলেবাসেই পরীক্ষা দিচ্ছে। এবং মনে হয় আগের বারের সেমি ফাইনালের কথাটা মনে আছে। নিজের টার্মসে খেলুক, প্ল্যান বি থাকুক কিন্তু সেটাই যেন সাবধানতা অবলম্বন করে প্ল্যান একে ঢেকে না দেয়। আর প্ল্যান এ? টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা বোলিং ব্যাটিং লাইনআপকে একশর নিচে আটকে ফেলছে।

চালাও পানসি আহমেদাবাদ। যেমনই হোক, এক লক্ষ মানুষের সামনে কাপ অবধি যেতে তিনটে ম্যাচ। কিন্তু এক এক করে। এক এক করে জুলফিকার, বারিশ ভি সাথ দে দেগা তুমহারা জানেমান!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link