More

Social Media

Light
Dark

জয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে

মাত্র এক মাস আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক। ওপেনিংয়ে অভিষেক টেস্টেই ছিলেন চরম ব্যর্থ। সব মিলিয়ে মোটেও শুভকর ছিলো না মাহমুদুল হাসান জয়ের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে স্কোয়াডে ডাক পাওয়ার পর সমালোচনার মাত্রাটা বেশ খানিকটা বেড়ে যায়।

নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে এই তরুণ তুর্কি নিল ওয়াগনার, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্টদের পেস, বাউন্সের সামনে ক্যারিয়ারটাই নষ্ট করে দেন কি না সে নিয়েও হচ্ছিলো বেশ আলোচনা। দেখে বোঝার কোনো উপায় ছিল না, টেস্ট ক্যারিয়ারটা মাত্র শুরু হয়েছে জয়ের। টেকনিক নিয়ে আর একটু কাজ করতে পারলে জয়ে আশার প্রদীপ দেখতেই পারে বাংলাদেশ দল।

প্রস্তুতি ম্যাচেই একটা ফিফটি করে আশার প্রদীপ জ্বালিয়েছিলেন জয়। সেটি ধরে রেখে নিউজিল্যান্ডের করা ৩২৮ রানের বিপরীতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনশেষে অসাধারণ এক ফিফটি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। তার ব্যাটে চড়েই এখন প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে চোখে চোখ রেখে লড়াই করছে বাংলাদেশ দল।

ads

১৬৫ বলে নিজের দ্বিতীয় টেস্টেই ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন জয়। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ২১১ বলে ৭০ রানে অপরাজিত আছেন এই তরুন ওপেনার। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এক ইনিংসে ২০০ বল খেলতে পারা প্রথম ওপেনার জয়! এর আগে ২০০৮ সালে জুনায়েদ সিদ্দিকি ১৪৪ বল খেলেছিলেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ইংলিশ ওপেনার ররি বার্নস নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ২০০ টি ডেলিভারি মোকাবেলা করেন।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে ৪৩ রান করেন সাদমান-জয়রা। এরপর দলীয় ৪৩ রানে ব্যক্তিগত ২২ রানে নিল ওয়াগনারের শিকার হয়ে ফিরেন সাদমান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্তর সাথে ১০৪ রান যোগ করেন জয়!

এই জুটির পথে ৬৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে আউট হন শান্ত। তবে এক প্রান্তে থিতু ছিলেন জয়। বোল্ট-সাউদি, ওয়াগনারদের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করেন তিনি। ১৪৭ রানে শান্ত বিদায়ের পর ফিফটির দেখা পান জয়।

নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে দলে নেই, সাইফ-সাদমানরাও নিয়মিত ব্যর্থ ওপেনিংয়ে। তামিম ইনজুরি থেকে ফিরলে হয়তো বাদ পড়তে হতো জয়কে। ওপেনিংয়ে বাকিদের ব্যর্থতায় মূলত সুযোগ দেওয়া হয় জয়কে। তবে অভিষেকে ঘরের মাটিতে সফল হতে পারেননি তিনি।

সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে বাংলাদেশী ওপেনারদের থেকে খুব বেশি প্রত্যাশাও ছিলো না সমর্থকদের। তবে স্রোতের বিপরীতে যেয়েই যেনো দুর্দান্ত এক ইনিংস খেললেন জয়। এক মাস আগেই সমালোচনার বৃত্তে থাকা জয় নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে এখন পর্যন্ত ব্যাট হাতে দলকে টেনে নিচ্ছেন।

সর্বশেষ দু’বছর আগে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছিলেন জয়। এছাড়া এক ম্যাচে ৯৯ রানের আক্ষেপময় এক ইনিংসও খেলেন তিনি। পরবর্তীতে যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সেঞ্চুরি করেন তিনি!

এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজের অভিষেক ম্যাচেই অসাধারণ এক ফিফটি করলেন এই ওপেনার। বোঝাই যাচ্ছে কন্ডিশন আর ফরম্যাট যাই হোক না কেন – ‍নিউজিল্যান্ড তাঁর প্রিয় প্রতিপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link