More

Social Media

Light
Dark

ভদ্রলোকের মেজাজ খারাপ

২০১৯ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া করোনা মহামারীর পর পৃথিবীর বাকি সব কিছুর মতোই থমকে গিয়েছিলো ক্রিকেট অঙ্গন। ২০২০ পুরো সালটা কেটেছে আতঙ্কে, বিনোদনের খোরাক তখন জুগিয়েছিল আপনজনদের সাথে কাটানো সময়। ক্রিকেট তখন ছিল বহুদূরে।

তবে ২০২১ এ দৃশ্যপট বদলায়, প্রচুর পরিমাণে আয়োজিত হয়েছে ক্রিকেট। দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে বড় বড় দলগুলোর দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। ক্রিকেট মাঠে ফিরেছে তাঁর পূর্ণ উত্তেজনা নিয়ে। সেই উত্তেজনায় খেলোয়াড়রা গা ভাসাবেন না তা কি করে হয়। ক্রিকেটের উত্তেজনায় মত্ত্ব খেলোয়াড়েরা মাঠেই জড়িয়েছে নানান বাকবিতণ্ডায়। ২০২১ এর সেই সকল মুহূর্তগুলো একজায়গায় করার প্রচেষ্টা।

  • জসপ্রিত বুমরাহ (ভারত) ও জস বাটলার (ইংল্যান্ড)

ভারতীয় পেস আক্রমণের অন্যতম কান্ডারি জসপ্রিত বুমরাহ সচারচর ক্রিকেট ময়দানে বাকবিতণ্ডার এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এবছরের অন্যতম এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির শুরু তিনিই করেছিলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে চলমান পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ডের ব্যাটার জেমস অ্যান্ডারসনকে বেশকিছু বাউন্সার মেরে ইংলিশ শিবিরকে খানিকটা চটিয়ে দিয়েছিলেন বুমরাহ। যার ফলশ্রুতিতে টেস্টের পঞ্চম দিনে যখন তিনি ব্যাটিং করতে নামেন তখন তাঁকে সম্মুখীন হতে হয় স্লেজিং এর।

ads

স্লেজিং এর পাশাপাশি অ্যান্ডারসনের একেরপর এক বাউন্সার যেন নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছিলো বুমরাহ। তখন জস বাটলারের করা স্লেজিং এর প্রতিউত্তর দিতে দেখা যায় জসপ্রিত বুমরাহকে। সেখানে সৃষ্টি হয় মৃদু উত্তেজনার। তবে সব ধরণের স্লেজিং এবং বাউন্সার উপেক্ষা করে বুমরাহ তাঁর দলের জন্যে ৬৪ বলে ৩৪ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে যথাযথ জবাব দিয়েছিলেন ইংলিশদের। তাঁর সেই ইনিংস ভারতকে ম্যাচ জিততে সহয়তা করেছিল।

  • বিরাট কোহলি (ভারত) ও জেমস অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড)

বছরের শেষ দিকটায় ভারত সিরিজ খেলতে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। টেস্ট সিরিজ চলাকালীন সময়ে। জসপ্রিত বুমরাহের মতো বিরাট কোহলিও জড়িয়েছিলেন মাঠের ভেতরকার তর্কে। জেমস অ্যান্ডারসরনের সাথে কথাচালাচালি করতে দেখা যায় বিরাটকে। শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যাওয়ায় হয়ত চাপমুক্ত হতেই বিরাট বেছে নিয়েছিলেন খোঁচা মেরে কথা বলার পথ। যাতে খানিকটা বিপরীতমুখি চাপের সৃষ্টি করা যায় প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর।

স্ট্যাম্পে থাকা মাইকে শোনার যায় বিরাট অ্যান্ডারসনকে বলছেন, ‘তুমি আমাকে কটুক্তি করছো? এটা তোমার বাড়ির ব্যাকইয়ার্ড না।’ এর আগে অবশ্য কিছু একটা বলেছিলেন অ্যান্ডারসন যা শোনার যায়নি। তাঁর প্রতিউত্তরেই ওমন মন্তব্যের পাশপাশি বিরাট আরো বলেছিলেন, ‘বুড়োদের মতো বকবকই করতে পারবে তুমি।’

  • কাইরেন পোলার্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (ভারত)

জাতীয় দলের কোন ম্যাচে নয়, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার কাইরেন পোলার্ড ও ভারতীয় উদীয়মান তারকা প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা। বরাবরের মতো পোলার্ড ছিলেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের সদস্য অপরদিকে এ বছর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা নিজের জায়গা খুঁজে পেয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সে ডেরায়।

এই দুই দল আইপিএলের নিয়মানুসারেই মুখোমুখি হয়। যখন পোলার্ড ব্যাটিং করতে নামেন তখন বল করতে আসেন কৃষ্ণা। পোলার্ডের করা একটি স্ট্রেইট ড্রাইভ সোজা কৃষ্ণার হাতে আসলে কৃষ্ণা তা পোলার্ডের দিকে থাকা স্ট্যাম্প বরাবর মারা ভঙ্গি করে। এরপর দুই কদম এগিয়ে খানিক রাগিয়ে দেওয়া চেষ্টা করেন পোলার্ডকে। তাঁর পরের ওভারে তাঁদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। ম্যাচের পরবর্তী সময়েও এই দুই খেলোয়াড়কে একে অপরের ব্যাপারে মন্তব্য ছুড়ে দিতে দেখা যায়।

  • লিটন দাস (বাংলাদেশ) ও লাহিরু কুমারা (শ্রীলঙ্কা)

২০২১ সালে ক্রিকেটের মেগা ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। ২০২০ এর পিছিয়ে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় এ বছর। সেই টুর্নামেন্টের মূল পর্বের গ্রুপ-১ এর ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন দাশ ও নাইম শেখ শুরু থেকেই ছিলেন দারুণ ছন্দে। তাঁদের ব্যাট থেকেও রান আসছিলো। স্বভাবিক ভাবেই কিছুটা দুশ্চিন্তা গ্রস্থ ছিল পুরো লঙ্কান শিবির।

ম্যাচের ষষ্ঠ ওভারে লঙ্কান বোলার লাহিরু কুমারার বলে আউট হয়ে যান লিটন দাস। তারপর লাহিরুকে দেখা যায় লিটনের উদ্দেশ্য়ে কিছু বলছেন তিনি। লিটন রাগান্বিত অঙ্গভঙ্গিতে তেড়ে গেলেন লাহিরুর দিকে। উত্তেজনা আন্দাজ করতে পেরে কর্তব্যরত আম্পায়ান ও মাঠে থাকা লঙ্কান খেলোয়াড়েরা এসে মিমাংসা করার চেষ্টা করে। তবে লাভ খুব একটা হয়নি। পুরো ম্যাচ জুড়েই সেই ঘটনার রেশ রয়ে গিয়েছিল। ক্রিকেটের ময়দানে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী ঘটনার মধ্যে এটি অন্যতম।

  • ইয়ন মরগান (ইংল্যান্ড) ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)

এই ঘটনাটিও আইপিএলের। ইয়ন মরগানের নেতৃত্বাধীন দল ছিল কোলকাতা নাইট রাইডার্স। অপরদিকে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ছিলেন দিল্লী ক্যাপিটালসের শিবিরে। এই দুই দলের মধ্যকার ম্যাচে বিরল এক ঘটনা সূত্রপাত ঘটে।

সচারচর ইয়ন মরগানকে দেখা যায় না কোন ধরণের বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন তিনি। তবে সেবার দেখা গিয়েছিলো দিল্লি ক্যাপিটালসের ব্যাটিং ইনিংসের শেষের দিকে তাঁকে রবিচন্দ্রনের অশ্বিনের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে দেখা যায়। তাতে খানিক উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও পরবর্তিতে সে ঘটনা আর বেশিদূর গড়ায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link