More

Social Media

Light
Dark

সাত নম্বরের চার পরীক্ষা, পরীক্ষক হাতুুরুসিংহে

‘সাত নম্বর’- না বিপদ সংকেত না। আবার বিশাল বড় এক বিপদ সংকেত। বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ নিদেনপক্ষে প্রতিদিন একবার করে এই সাত নম্বর শব্দজোড়া পড়েছেন কিংবা শুনেছেন। কি আর করার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলও তো রয়েছে এই নিয়ে বিপাকে।

সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগে এশিয়া কাপ। মাঝে সময় শুধু আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। এই একটি সিরিজই রয়েছে খেলোয়াড়দের পরখ করে দেখার। তবে এক সিরিজে একই পজিশনে তো আর চার-পাঁচ জনকে খেলিয়ে দেওয়া যায় না। তাইতো নির্দিষ্ট সেই পজিশনের জন্য বিবেচনায় থাকা সব খেলোয়াড়দের রাখা হয়েছে জাতীয় দলের সাথে।

সাত নম্বর পজিশন বিবেচনায় আফিফ হোসেন ধ্রুব রয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে। তবে তিনি ছাড়াও নির্বাচকরা নজরে রাখছেন আরও তিন জনকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সৌম্য সরকার, শেখ মেহেদী ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

ads

একটা সময় পর্যন্ত ইয়াসির আলী চৌধুরিও ছিলেন আলোচনায়। কিন্তু তিনি যেন নিজে হাতেই বন্ধ করে দিয়েছেন সে সব আলোচনা। সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে হয়েছেন ব্যর্থ। ঠিক সে কারণেই বিকল্প খেলোয়াড়দের দিকে টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট দিয়েছে বাড়তি নজর।

এমন কি আফগানদের বিপক্ষে দলে থাকা আফিফ থেকে শুরু করে সৌম্য, মোসাদ্দেক ও মেহেদী সবাইকে সবদিক থেকেই পরখ করে নেওয়া হচ্ছে। মূলত এই পজিশনে একজন ব্যাটিং অলরাউন্ডারের খোঁজে রয়েছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। যার মূল দায়িত্বটাই থাকবে ব্যাট হাতে। তবে প্রয়োজনে তিনি হাত ঘুরিয়ে অন্তত পক্ষে ওভার পাঁচেক দলকে সার্ভিস দেবেন।

ঈদের আগে বাংলাদেশ দলের তিন দিনের ক্যাম্প অন্তত সে বার্তাই দিচ্ছে। কেননা সৌম্য সরকারকে প্রথম দিন বল হাতে দেখা গেছে। সেই সাথে শেখ মেহেদীও একটানা হাত ঘুরিয়েছেন নেট অনুশীলনে। দ্বিতীয় দিন আবার মোসাদ্দেক ও আফিফকে সরব দেখা গেছে বল হাতে।

তবে প্রত্যেকে নিজেদেরকে ব্যাট হাতে ঝালিয়ে নিতে ভোলেননি। বরং সেদিকটায় ছিল সবচেয়ে বেশি মনোযোগ। কিন্তু তাদের প্রতি যেন বাড়তি মনোযোগ ছিল আরেক জনের। তিনি হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। প্রতিটা খেলোয়াড়কে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন চান্দিকা হাতুরুসিংহে। হোক সেটা বোলিং কিংবা ব্যাটিং। ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, ভাল করবার তালিমও দিয়েছেন চান্দিকা।

সাত নম্বরের দৌড়ে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে এই পজিশনে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১৯ ম্যাচ খেলা মোসাদ্দেকের পরের অবস্থানে রয়েছেন আফিফ হোসেন, ১৫ ম্যাচ খেলে। সৌম্য আর মেহেদী যথাক্রমে খেলেছেন তিনটি ও একটি করে ম্যাচ।

সেদিক থেকে সবচেয়ে অভিজ্ঞ সম্ভবত মোসাদ্দেক। প্রায় ২৭ গড়ে এই পজিশনে তার রান ৩৭৪। একটি ফিফটিও রয়েছে তার নামের পাশে। সেটিও আবার বাংলাদেশকে শিরোপা জেতানো ম্যাচে।  অন্যদিকে, গড় বিবেচনায় আবার এগিয়ে আফিফ। তার গড় ৩১। তিনি রান করেছেন ৩৭২। ফিফটি আছে দুইটি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জয়টা তো এসেছিল তার হাত ধরেই।

এই পজিশনের বিবেচনায় থাকা বাকিদের ব্যাটিং পারফরমেন্সের দিকটা তুলে আনা বেজায় অহেতুক। কেননা তাদের স্যাম্পেল সাইজটা বেশ ছোট। ব্যাটিং পরিসংখ্যানের দিক থেকে তাই আফিফেরই সুযোগ পাওয়ার কথা বিশ্বকাপ দলে। তবে বাংলাদেশ এবার যে শুধু ব্যাটার খুঁজছে না।

কেননা আটজন ব্যাটার নিয়ে খেলা মানেই তো একজন বোলার কম নিয়ে খেলা। সেদিক বিবেচনায় একজন পার্টটাইম বোলার অন্তত থাকা চাই। যে কিনা অন্য বোলারদের খারাপ দিনে অন্তত সহয়তা করতে পারবে। সেদিক থেকে আবার খুব একটা ভাল বিকল্প না আফিফ হোসেন। প্রায় ২৮ স্ট্রাইকরেটে আট ইনিংস বল করে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

অন্যদিকে, মোসাদ্দেক ৬৬ স্ট্রাইকরেটে বল করেছেন ৪১ ইনিংসে। উইকেট সংখ্যা তার ১৯টি। স্ট্রাইকরেট বিবেচনায় আবার সৌম্যও এগিয়ে মোসাদ্দেকের চাইতে। তিনি প্রায় ৩৬ স্ট্রাইকরেটে উইকেট শিকার করেছেন ১১টি। বল করেছেন ১৮ ইনিংসে। এদিক থেকেও আলোচনায় ঢের পিছিয়ে শেখ মেহেদী। তাইতো বোলিং পারফরমেন্স বিবেচনায় সৌম্য হতে পারেন সমাধান। কেননা ব্যাকআপ ওপেনারের প্রয়োজনও তো মিটে যায় তাকে দলে নেওয়া গেলে।

গেল দুইদিনের চিত্র বলে হেড কোচ সবদিক থেকেই এগিয়ে রাখছেন সৌম্য সরকারকে। বিশেষ পরিচর্যার মধ্য দিয়েও যাচ্ছেন তিনি। বিশ্বকাপ দলে সৌম্যের অন্তর্ভুক্তি বাঁধা কেবল তার রানে ফেরা। সেটাও হয়ত তিনি ঘুচিয়ে ফেলতে পারবেন আসন্ন ইমার্জিং এশিয়া কাপে। তেমনটা হলে সৌম্যই এগিয়ে থাকছেন বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে।

কেবল আফিফ, মোসাদ্দেক আর মেহেদীর মধ্যে থেকে কেউ একজন বিশেষকিছু করে দেখাতে পারলেই সৌম্যকে টপকে যাবেন তিনি। মোসাদ্দেক ও আফিফকে ভরসা জোগাচ্ছে নিকট অতীতে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে তাদের পারফরমেন্স। চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর হয়ে এই দুইজন মাঠ মাতিয়েছেন। তাছাড়া আফিফের সামনে সুবর্ণ সুযোগ আফগানিস্তান সিরিজ। এখন দেখার পালা, শেষ অবধি জল কতদূর গড়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link