More

Social Media

Light
Dark

সমুদ্রে পেতেছি শয্যা শিশিরে কি ভয়!

‘ফাস্ট বোলারদের জন্য ইনজুরি বন্ধুর মত’ – অবলীলায় এই কথা গুলো বলেছিলেন বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদ। তরুণ ক্রিকেটার। নীলাম্বরে উড়ে বেড়ানোর স্বপ্নে বিভোর। তবুও পাখাটা ঠিক মেলে ধরতে পারছেন না। ইনজুরি এসে হরহামেশাই দিচ্ছে বাঁধা। পৃথিবীর অভিকর্ষজ ত্বরণের থেকেও শক্তিশালী কিছু একটা আটকে রাখছে হাসান মাহমুদকে। তবে তারুণ্যের শক্তি যে মানে না কোন বাঁধা।

সে বাঁধ না মানা শক্তি হয়েই তো তিনি জায়গা করে নিয়েছেন এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে। টাইগারদের পেস আক্রমণের এক সক্রিয় সেনানী হয়েই তিনি যাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। খুব বেশিদিন হয়নি তাঁর জাতীয় দলের যাত্রা। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট দিয়ে যাত্রার শুরু হলেও, ইতোমধ্যে ওয়ানডে ফরম্যাটের জার্সি জড়িয়ে ফেলেছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবারই তিনি খেলতে যাচ্ছেন তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ।

স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশার চাপটা একটু বেশিই। হয়ত পারিপার্শ্বিক চাপটা তেমন নেই। তবে নিজেকে প্রমাণ করবার এর থেকে বড় মঞ্চ নিশ্চয়ই খুঁজে পাবেন না হাসান মাহমুদ। তাইতো তিনি ঘাম ঝড়াচ্ছেন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ক্রমাগত নিজেকে প্রস্তুত করে নিচ্ছেন। বল হাতে তিনি নেট অনুশীলন করছেন প্রতিনিয়ত। নিজের লাইন লেন্থ ঠিক রাখার কাজ করার সাথে সাথে গতি বাড়ানোর প্রচেষ্টাও করছেন হাসান।

ads

তাছাড়া ইয়োর্কার লেন্থে বল করবার চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে তাঁর মধ্যে। আজ হোম অব ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানকে বেকায়দায় ফেলানোর চেষ্টাও করেছেন। তবে আজ সোহান যেন ছিলেন অন্য ছন্দে। এই ব্যাটার নেট অনুশীলনে থাকা প্রায় প্রতিটা বোলারকেই তুলে মারবার চেষ্টা করেছেন। বাউন্ডারি ছাড়া করবার প্রচণ্ড প্রয়াশ চালিয়েছেন সোহান। সাফল্যও এসে ধরা দিয়েছে বহুবার।

তবুও হাসান ঠিকঠাক নিজের কাজটা করে গিয়েছেন। বল হাতে চার ওভারের মত বল করবার পর, খানিক ব্যাটিং অনুশীলনে মনোযোগ দিতে দেখা যায় হাসান মাহমুদকে। আধুনিক ক্রিকেটের টেলএন্ডারদেরও ব্যাট হাতে বহু সময় অবদান রাখতে হয় দলের জন্যে। সে সুযোগটা পেলেও যেন হেলায় হারিয়ে না ফেলেন হাসান, সে প্রচেষ্টাই যেন করছিলেন তিনি। ব্যাটে বলে সংযোগটাও হয়েছে মনমত।

নেট অনুশীলনে সবারই প্রবণতা ছিল বড় শট খেলা। ব্যতিক্রম ছিলেন না হাসান মাহমুদও। তিনিও হাতখুলে ব্যাট করেছেন। শেষের দিকে দ্রুত রান তুলতে তিনিও যেন পারেন তাঁরই এক পূর্ব প্রস্তুতি সেরে নিলেন তরুণ এই পেসার। তবে এত সব অনুশীলনের ফলাফলটা তাঁকে মাঠেই দেখাতে হবে। সে কাজটা বড্ড কঠিন, তা হয়ত ভাল করেই জানেন হাসান মাহমুদ।

বিশ্বকাপের আগে অবশ্য ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেবেন হাসান। সেখানেও নিজেকে প্রমাণের একটা মঞ্চ অন্তত পাবেন হাসান মাহমুদ। নিজের মধ্যে থাকা ক্রিকেটীয় প্রতিভা আর কঠোর অনুশীলনে অর্জিত শৈলি, সবকিছুর মিশ্রণটা নিশ্চয়ই ঘটাতে চাইবেন হাসান। তাছাড়া খুব করে প্রার্থণা করবেন বিশ্বকাপের আগে আবারও ইনজুরি আক্রান্ত না হতে। তেমনটা হলে অবশ্য বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষাটা আরও দীর্ঘায়িত হবে তাঁর।

হাসান মাহমুদের উপর প্রত্যাশা নিশ্চয়ই টিম ম্যানেজমেন্টের রয়েছে। নতুবা শরিফুল ইসলামের মত পরীক্ষিত একজন বোলার নিশ্চয়ই স্ট্যান্ডবাইতে থাকার কথা নয়। শরিফুল দলের বোলিং আক্রমণে বাড়তি বৈচিত্র্যও যুক্ত করতে পারত। তবুও যেহেতু হাসানের উপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট তিনি নিশ্চয়ই সেই আস্থার প্রতিদান দিতে চাইবেন। তিনি জ্বলে উঠবেন, নাকি দপ করে নিভে যাবেন তা বলে দেবে সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link