More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

২০০৭ সেমিফাইনাল ও একজন ভাজ্জি

তারুণ্যের মিশেলে গড়ে ওঠা পুরো একটি দল। শচীন থেকে সৌরভ,  নেই কোনো বড় নাম। একদমই এক আনকোরা দল নিয়ে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল টিম ইন্ডিয়া। ঐ এক আনকোরা দলটাই সেবার গড়েছিল বহু কীর্তি। সঙ্গী হয়েছিল অনেক ‘প্রথম’ এর সাথে। তখন সুপার ওভার না থাকায় তখন টাই হওয়া ম্যাচ নির্ধারিত হতো স্ট্যাম্প নিশানা করে। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সে স্ট্যাম্প নিশানায় ম্যাচ জিতেছিল ভারত। আবার ঐ পাকিস্তানকেই ফাইনালে হারিয়ে ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল তাঁরা।

ভারতের সে বিশ্ব জয়ের ১৫ বছর পেরিয়েছে। সেই দলের রোহিত শর্মা এবারের বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক। রোহিত শর্মা বাদে ঐ দলের আর একজনই এবারের বিশ্বকাপ খেলছেন। তিনি দীনেশ কার্তিক। এ ছাড়া ঐ দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারই এই মুহূর্তে নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।

২০০৭ এর আধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার বয়সটা প্রায় ২ বছর হতে চলল। ঐ বিশ্বকাপের ফাইনালের ৭৫ রানের ইনিংস খেলা গৌতম গম্ভীর, একই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডের বিপক্ষে এক ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকানো যুবরাজ সিংও ক্রিকেটে ছেড়েছেন বহুদিন হলো। এ ছাড়া ইরফান পাঠান, হরভজন সিংও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইশ গজ থেকে অবসর নিয়েছেন বহু আগেই।

ads

ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন, তবে বছর ঘুরে তো সেপ্টেম্বর মাসটা আসেই। ২৪ বছর পর সেই ২৪ সেপ্টেম্বরেই তো ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিল এক ঝাঁক তরুণ। সেই তরুণদের অবশ্য এখন তারুণ্য নেই। তবে মনের তারুণ্যে তো প্রতি বছরই ঘুরে আসে সেই ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রাই। পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে শেষ ওভারটাই ওই বিশ্বকাপের আজকালকার স্মৃতিচারণায় বেশি আলোচিত হয়। তবে, এর আগে সেমিফাইনালের লড়াই ছিল।

যেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ তিন ওভারে ৩০ রান ডিফেন্ড করতে হয় ভারতকে। ভারতের বিপত্তিটা হল, তাদের পেসার যোগিন্দর শর্মা প্রথম ২ ওভারেই দিয়ে ফেলেছেন ৩১ রান। এমন অবস্থায় কাকে বোলিং দেওয়া হবে সেটা নিয়ে বেশ দ্বিধায় পড়ে যান অধিনায়ক ধোনি। তবে এ পর্যায়ে নিজে থেকে বল করতে আসেন হরভজন সিং।

এসেই মাইকেল ক্লার্ককে দুর্দান্ত এক ইয়র্কর দিয়ে বোল্ড করেন তিনি। আর ঐ আউটের পরেই মোমেন্টাম পেয়ে যান তিনি। সব মিলিয়ে ঐ ওভারে মাত্র ৩ রান দেন তিনি। আর ঐ একটি ওভারেই পাল্টে যায় ম্যাচের চিত্র। ভারত শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিতে নেয় ২২ রানে। এর মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে উঠে যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।

১৫ বছর পর সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে ম্যাচের স্মৃতিচারণা করেছেন হরভরজন সিং। তিনি বলেন, ‘যখন অস্ট্রেলিয়ার ৩ ওভারে ৩০ রান লাগে তখন আমি ধোনিকে বলি, আমাকে বল দাও। এর পর আমি বলে যাই এবং মাইকেল ক্লার্ককে আউট করাসহ ঐ ওভারে আমি ৩ রান দিই। ঐ সময়ে ধোনি অধিনায়ক হিসেবে সবার পরামর্শ নিত। ম্যাচ পরিস্থিতিতে যেটা বেস্ট সিদ্ধান্ত মনে হতো, সেটিই আমরা একত্রে নিতাম। ধোনি এ ব্যাপারে খুবই ওপেন ছিল।’

এ ছাড়া গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টাই হওয়া ম্যাচের পর স্ট্যাম্প নিশানার মুহূর্ত নিয়ে কথা বলেন হরভজন। তিনি বলেন, আমরা ৩/৪ স্টেপে রানে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কারণ বেশিদূর রানিং নিয়ে বল করলে ব্যালান্স হারিয়ে নিশানা লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে পারে। আমাদের সে বুদ্ধি কাজে দিয়েছিল। আমরা সব ক’টিই নিশানা ভেদ করতে পেরেছিলাম এবং জিতেছিলাম’।

গ্রুপ পর্বের সে ম্যাচের পর ফাইনালে আবারও মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। তবে আগের মতোই জয়টা পেয়েছিল ভারত। শ্বাসরূদ্ধকর এক ম্যাচে ৫ রানে হারিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের গৌরব অর্জন করে ভারত। ১৩০ কোটি মানুষের দেশের জন্য সেবারের শিরোপা ছিল অতি আকাঙ্ক্ষিত এক জয়। তাই বছর ঘুরে সেপ্টেম্বর মাস আসলেই ২০০৭ এর স্মৃতিতে চলে যান সমর্থক থেকে শুরু করে ক্রিকেটাররাও। এখনও মনে সেই সুর বাজে, ‘শ্রীশান্ত টেকস ইট এন্ড ইন্ডিয়া উইন দ্য ওয়ার্ল্ড কাপ।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link