More

Social Media

Light
Dark

নাছোড়বান্দা স্ট্রাইকার ভিয়াল্লি

জিয়ানলুকা ভিয়াল্লির চলে যাবার খবরটায় চমকে গেছি। এই তো গত বছরই, তাঁর অভিন্ন হৃদয় বন্ধু রবার্তো ম্যাঞ্চিনির সঙ্গে মিলে ইতালিকে ইউরো চ্যাম্পিয়ন করালেন। আর্জেন্টিনায় যেমন পাবলো আইমার, তেমনই ইতালিতে ছিলেন ভিয়াল্লি। কোচ রবার্তো মানচিনির সঙ্গে স্কোয়াডের ভারসাম্য বজায় রাখা, স্ট্র্যাটেজি, পরিকল্পনা ও তার রূপায়ন, এই ছিল ভিয়াল্লির কাজ।

আসলে মানচিনি আর ভিয়াল্লির কথা একসঙ্গে বললেই মনে পড়ে যায় ১৯৯০-৯১ মৌসুমের সাম্পদোরিয়ার কথা। গোলে জিয়ানলুকা পাগলিউকা, আর আপফ্রন্টে ভিয়াল্লি-ম্যাঞ্চিনি ছাড়া সামান্য পরিচিত হয়তো ছিলেন ইতালির ডিফেন্ডার পিয়েত্রো ভিয়ের্চোয়োড আর ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার টোনিনহো। কিন্তু এই দল নিয়েই ভিয়াল্লিরা সেরি আ কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। উইং দিয়ে ম্যাঞ্চিনি আর মাঝখান দিয়ে ভিয়াল্লি। প্রচণ্ড মোবাইল, গোলের গন্ধ পাওয়া এবং নাছোড়বান্দা স্ট্রাইকার ভিয়াল্লি।

১৯৯০এর বিশ্বকাপে চোট থেকে ফিরে আসার পর সেভাবে খেলা খোলেনি তাঁর। বরং ইতালিয়া ’৯০-র গোল্ডেন বল ও গোল্ডেন বুট নিয়ে যান সাল্ভাতোরে টোটো সিলাচি। কিন্তু তার পরের বছরই সারা ইতালি দেখেছিল, সাম্পদোরিয়ার দুই বন্ধুকে। বাস্তেনের মিলান অথবা লোথার ম্যাথিউজ আর ইয়ুরগেন ক্লিন্সমানের ইন্টার। অনেক চেষ্টা করেও হারাতে পারেনি সাম্পদোরিয়াকে। ১৯৯০-৯১ মৌসুমে সাম্পদোরিয়া হল ২০১৫-এর লেস্টার সিটি।

ads

সে বছর সেরি আ জেতার পর রেকর্ড অর্থে ভিয়াল্লি চলে যান জুভেন্তাসে। সেখানেও ১৯৯৪-৯৫এ সেরি আ আর তার পরের বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ফ্যাব্রিজিও রাভানেল্লি আর আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরোর সঙ্গে দারুণ কম্বিনেশন। ভিয়াল্লি তখন অধিনায়ক। তারপর ক্যারিয়ারের শেষের দিকে জন্মস্থান চেলসিতে আসেন তিনি। রুদ খুলিতের কোচিং-এ এফএ কাপ। সব মিলিয়ে বর্ণময় ক্যারিয়ার তাঁর।

অসুস্থ ছিলেন জানতে পারিনি। তাই চলে যাওয়াতে সত্যিই আশ্চর্য হয়েছি। একটা সময় ইতালিতে স্ট্রাইকারদের লাইন লেগে গিয়েছিল। ‘৯০এর কথাই ধরুন, সিলাচি, ভিয়াল্লি, বাজ্জিও, তারপর রাভানেল্লি, দেল পিয়েরো, ভিয়েরি, টোটি। কিন্তু মজার কথা যে বার বিশ্বকাপ জিতলে ইতালি, সে বছর স্ট্রাইকার ছিল লুকা টোনি। ক্লাব ফুটবলে দারুণ, হোল্ড আপ প্লে দারুণ কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে গোল করতে পারেন না।

ঠিক যেন জার্মানি গোমেজ। তবে সে সব কথা থাক, ভিয়াল্লির কথাটাতেই শেষ করি। ১৯৯০ এর ইতালি নিজের দেশে ফেভারিট ধরা হয়েছিল কারণ ছিল জিয়ানলুকা ভিয়াল্লি। কখন কোন খান থেকে যে গোল মেরে দেবেন তা নিয়ে বিপক্ষ ডিফেন্স সব সময়ই ভয়ে ভয়ে থাকত। কিন্তু হ্যামস্ট্রিং-এর চোট সারিয়ে সময়ে ফেরা হয়নি তাঁর, ইতালিরও জেতা হয়নি বিশ্বকাপ।

কিছু কিছু অধরা স্বপ্ন থেকে যায় বলেই ভিয়াল্লিদের লোকে ভোলে না। আসলে ফুটবলে জেতাটাই তো সব নয়, আবার গোল করাটাও। নাকি গোল যারা করে তাদেরই আমরা বেশি করে মনে রাখি। ভিয়াল্লির চলে যাবার খবরটা তাই একটু বেশিই নাড়া দিয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link