More

Social Media

Light
Dark

কুলিং অফ বিতর্ক ও গাঙ্গুলির দ্বিতীয় অধ্যায়

সৌরভ গাঙ্গুলি কি আর ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মানে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি থাকবেন? এই মুহূর্তে অনেক জল্পনা কল্পনার প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর এখন নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উপর। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আবেদন মেনে ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ড তুলে দিতে রাজি নয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চে শুনানি হয়।

মঙ্গলবারের শুনানিতে কুলিং অফের সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত। আদালতের তরফ থেকে এ দিন বলে দেওয়া হয়, ‘কুলিং অফ ছাড়া টানা ১২ বছর অনেকটা সময়। আমরা বলতে পারি রাজ্য সংস্থায় এবং বোর্ডের দায়িত্বের মাঝে কুলিং অফ না থাকলেও হবে। কিন্তু দুই জায়গা মিলিয়ে নিজেদের সময় শেষ হওয়ার পর কুলিং অফে যেতেই হবে।’

যদিও সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত উকিল মনিন্দর সিং এ দিন সৌরভদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন। তিনি সুপারিশ করেছেন, কোনো ব্যক্তি  রাজ্য সংস্থায় একটি টার্ম কাটালে তাঁকে বিসিসিআই-তে পরপর দুটি টার্ম কাজ করার অনুমতি দেওয়াই যায়। অর্থাৎ, সৌরভদের দাবি আংশিকভাবে মেনে নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। যদিও তাঁর সুপারিশ আদৌ শীর্ষ আদালত মানবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। 

ads

বুধবার দুপুর দুইটায় এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত শীর্ষ আদালত যদি এই রায়ই দেয়, তাহলে সেটা সৌরভ ও জয় শাহদের জন্য মোটেই ভাল খবর হবে না। সুপ্রিম কোর্ট কুলিং অফ তুলে না নিলে দায়িত্ব ছাড়তে হবে বোর্ডের এ দুই শীর্ষ কর্তাকে। এমনকি বিসিসিআইয়ের নতুন নির্বাচনে তারা অংশ নিতে পারবেন না। 

লোধা কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সংস্থা বা বিসিসিআই-এ কোনো ব্যক্তি একটানা ছয় বছর কোনও পদে থাকলে তাঁকে তিন বছরের জন্য বাধ্যতামূলক ‘কুলিং অফ’ পিরিয়ডে যেতে হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী বছর দুয়েক আগেই শেষ হয়েছে সভাপতি সৌরভ ও বোর্ড সচিব জয় শাহের কার্যকাল।

গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব পদে জয় শাহ আসেন ২০১৩ সালে। বিসিসিআই-এ আসার আগে পর্যন্ত তিনি সেই অ্যাসোসিয়েশনেই ছিলেন। সৌরভও সিএবিতে প্রথমে সচিব, পরে সভাপতি হিসেবে পাঁচ বছর কাটিয়েছেন। ২০১৯ সালে বোর্ড নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন তিনি। তাই লোধা কমিশনের আইন মানতে হলে সৌরভ-শাহদের এতদিনে পদ ছেড়ে দিতে হত। 

কিন্তু, বোর্ডের তরফে আগেভাগেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে রাখা হয়, যাতে কুলিং অফ পিরিয়ড বাতিল করে দেওয়া যায়। বিসিসিআই-এর যুক্তি ছিল, এত কম সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে তেমন কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাছাড়া তাঁদের কার্যকালের বেশিরভাগ সময়টা করোনা মহামারীর মধ্যে কেটেছে। এ ছাড়া আগামী বছর দেশের মাটিতে রয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

কুলিং অফ পিরিয়ড তুলতে চেয়ে এই পরিস্থিতিতে যদি তাঁরা দায়িত্ব ছেড়ে দেন তাহলে বেশি সমস্যায় পড়বে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডই। তাই সব দিক দিয়ে ভেবে চিন্তে ‘কুলিং অফ’ তুলে দেওয়া হোক। কুলিং অফ ছাড়া বোর্ডের কর্তাদের জন্য বেঁধে দেওয়া বয়স নিয়ে কথা বলেন আরেক আইনজীবী।

তিনি বলেন, ‘কর্তাদের অবসরের মেয়াদ যেভাবে ৭০ বছরে বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেটা তুলে দেয়া হোক। কারণ অভিজ্ঞদের নিয়ে বোর্ডের কাজ চালাতে সুবিধা হয়।’

তবে পাল্টা প্রশ্নে আবার আদালত অন্য দেশের বোর্ডের বয়সসীমা টেনে আনে। অর্থাৎ অন্য দেশেও কি সত্তর ঊর্ধ কেউ বোর্ডের কাজে আছেন? বিসিসিআই আইনজীবীর কাছে এ প্রশ্নের কোনো উত্তর ছিল না।  রায় আসবে বুধবারে। এখন দেখার বিষয়, ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কী রায় দেয় এই বিষয়ে। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link