More

Social Media

Light
Dark

নীলাম্বরের উজ্জ্বল নক্ষত্র

সব গল্পের শুরুটা একরাশ দু:খ দিয়ে শুরু হয় না। আবার সবার গতিপথ জীবনের একটা সময় এসে পরিবর্তন হয় না। কিছু কিছু গল্প একেবারে একঘেয়ে। কারও কারও নিয়তি যেন শুরুতেই লেখা। এমনই এক গল্পের প্রধান চরিত্র ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড।

চেলসির কিংবদন্তি হয়েই যার ফুটবল থেকে প্রস্থান। শেষভাগে অবশ্য তিনি ম্যানচেস্টার সিটির জার্সিও গায়ে জড়িয়েছিলেন। তবে জীবনের একটা বড় সময় জুড়েই তো লন্ডনের ক্লাবটির সাথে স্মৃতি তাঁর। নিজের ক্যারিয়ারটা তো ওই গাঢ় নীল জার্সিতেই উজ্জ্বল।

১৯৭৮ সালের ২০ জুন, তিনি জন্মেছিলেন লন্ডনের পূর্বাঞ্চলে। তাঁর বাবা ফ্র্যাঙ্ক রিচার্ড ল্যাম্পার্ডও ছিলেন পেশাদার ফুটবলার। বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করেই তিনি ছোটবেলা থেকেই ফুটবলে ছিলেন মত্ত। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের একাডেমিতে জায়গা হয় তাঁর।

ads

তবে এটা বলা হয় তিনি তাঁর সময়ের বাকি কিশোরদের থেকে এগিয়ে ছিলেন। ফুটবলীয় দক্ষতায় তিনি মুগ্ধতা ছড়াতে বিন্দুমাত্র কালক্ষেপণ করেননি। দলের প্রতিটি পেনাল্টি শ্যুট নেওয়ার দায়িত্ব তাঁর উপরই থাকতো ন্যাস্ত। মধ্যমাঠের চালিকা শক্তিও বনে যান তিনি।

নিজের মধ্যের ফুটবলীয় দক্ষতার প্রকাশ তিনি দেখিয়েছেন। ১৯ বছর বয়সেই তিনি ওয়েস্ট হামের প্রথম দলে নিয়মিত হতে শুরু করেন। শৈশবের ক্লাবটার হয়ে তিনটি মৌসুম দাপিয়ে বেড়ান তিনি। এরপর তাঁর দিকে ইউরোপের বড় ক্লাবগুলোর নজর আরও প্রখর হতে শুরু করে।

অন্যদিকে ওয়েস্ট হ্যামের দুর্দিনের শুরুটাও হয়ে যায়। নতুন করে চুক্তিবদ্ধ হলেও, ল্যাম্পার্ডের ক্লাব ছাড়া যেন ছিল সুনিশ্চিত। উদীয়মান তরুণ তারকা একজন ফুটবলার নিশ্চয়ই নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়টা নষ্ট করতে চাইতেন না। ধুকতে থাকা ক্লাবে থেকে নিজের ক্যারিয়ার হুমকির মুখে ফেলে দিতে কেউই হয়ত চাইবে না।

ল্যাম্পার্ডও চেয়েছেন ফুটবলের আকাশটায় তিনিও বনে যেতে পারেন একজন ধ্রুব তারকা। সেটাই বনে গেছেন তিনি। লন্ডনের আরেক ক্লাব চেলসির হয়ে। ২০০১/০২ মৌসুমে শুরু হওয়া যাত্রার ইতি ঘটে ১৩ মৌসুম পড়ে। এই সময়টাই তিনি চেলসির মধ্যমাঠটা নিজ শিশুর মত করেই যেন আগলে রেখেছিলেন। এই দীর্ঘ সময়ের স্মৃতিময় ভ্রমণে চেলসির হয়ে শিরোপা জিতেছেন অগণিত।

তবে ২০০৫ ও ২০০৬ সালে টানা দুই দফা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের স্মৃতি নিশ্চয়ই মলিন হয়ে যায়নি। তরুণ এক খেলোয়াড়ের জন্যে এত বড় অর্জন তো রোমাঞ্চের মহাসাগরে ডুব দেওয়ার মতই। সেই দুই মৌসুমে লিগে মোট ২৯ খানা গোল করেছিলেন ল্যাম্পার্ড। দলের শিরোপা জয়ে সামনে থেকে অবদান রাখা বলতে যা বোঝায় আরকি।

সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি। তাঁর ক্যারিয়ারটা ছুটে চলেছে আপন গতিতে। চেলসির উত্থানের সাথে সাথে নিজের ক্যারিয়ারটাও যেন সমৃদ্ধ হতে শুরু করে ল্যাম্পার্ডের। চেলসির হয়ে অর্জনের খাতা যখন ভরতে শুরু করে তখন জাতীয় দলেও সমান উজ্জ্বল তিনি। তবে সেখানটায় শিরোপা খরায় কখনো মেঘের দেখা মেলেনি।

চেলসির হয়ে সম্ভাব্য প্রায় সবকিছু জেতা হয়ে গিয়েছিল। এ যেন মুদ্রার দুই পিঠ। বুট জোড়া তুলে রেখে তিনি এখন হাতে নিয়েছেন চক। বোর্ডে আঁকছেন বিভিন্ন ছক। এখন তো তিনি কোচ। তাঁর উপর দায়িত্ব থাকে মাঠের বাইরে দলকে গুছিয়ে নেওয়ার।

নতুন পরিচয়ে তিনি আবার ফিরেছিলেন স্ট্যামফোর্ডে ব্রিজে। তবে খেলোয়াড় ল্যাম্পার্ড খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। অগ্যতা ব্যর্থতার দায় মাথায় নিয়ে তিনি ছেড়ে গেছেন ব্লুজদের ডাগআউট। ফুটবল থেকে আর দূরে থাকা তো আর সম্ভব না। তাই তিনি মুখিয়ে রয়েছে এভারটনের হয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের মহাসমুদ্রে ঝাপ দেবেন বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link