More

Social Media

Light
Dark

‘আমি তো ক্রান্তিকালেই দায়িত্ব পাই’

অধিনায়ক হিসেবে সে কালের সেরা মনে করা হতো। কিন্তু ভাগ্যবিপর্যয়ে ‘সেরা’ অর্জন করতে পারেননি। তবে প্রধাণ নির্বাচক হিসেবে সত্যিই বাংলাদেশের সফলতম হয়ে উঠেছিলেন। সেই ফারুক আহমেদকে আবার প্রধাণ নির্বাচক পদে ফেরানোর একটা গুঞ্জন চলছে।

ফারুক নিজেও এই গুঞ্জনের সত্যতা জানেন না। তিনি কেবলই পত্রিকার পাতায়, সংবাদ মাধ্যমে খবরটা দেখেছেন। খেলা ৭১-এর সাথে আলাপকালে বলছিলেন, আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে তিনি এই ব্যাপারটা বিবেচনা করবেন; তার আগে এ নিয়ে ভাবছেন না।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন ঘোরতর এক দু:সময় যাচ্ছে। এমন সময়ে দলের দায়িত্ব নেওয়াটা ক্যারিয়ারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এ নিয়ে ভাবিত নন ফারুক আহমেদ। তিনি আগের দু বারের অভিজ্ঞতা থেকে বলছিলেন, এমন ক্রান্তিকালে দায়িত্ব নিয়েই অভ্যস্ত তিনি। ফলে এটা নতুন কিছু নয়।

ads

নতুন করে প্রধাণ নির্বাচক হওয়ার গুঞ্জজের কথা তুলতে ফারুক আহমেদ বললেন, ‘আমিও এটা আপনার মতই জানি। পত্রিকার পাতায় দেখেছি। কেউ আমাকে কিছু বলেনি। কোনো প্রস্তাবও পাইনি। ফলে এ নিয়ে মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।’

ফারুক আহমেদ প্রথম জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক হন ২০০৩ সালে। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে কানাডা ও কেনিয়ার বিপক্ষেও হেরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে তখন টালমাটাল অবস্থা। সেখান থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দলকে গুছিয়ে ফেলেন।

২০০৪ সালে, ফারুকের সময় বাংলাদেশ দীর্ঘকাল পর ওয়ানডে ম্যাচ জেতে। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট ম্যাচ ও টেস্ট সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। সে বছরই বাংলাদেশ কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারায়। ২০০৬ সালে বেশ কিছু সিরিজ জয় এবং ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠাটা ফারুক আহমেদের সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখে। এ ছাড়া ওই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তখনকার র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারায়।

ফারুক আহমেদ দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচক হন ২০১৩ সালে। সেটাও বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য টালমাটাল একটা সময়। বাংলাদেশ তখন ঘরে ও বাইরে এক গাদা সিরিজ হেরে ক্লান্ত। সেই দলকে ঢেলে সাজিয়ে ২০১৫ বিশ্বকাপে নিয়ে যান ফারুক। সেখানে বাংলাদেশ ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। এরপর ঘরের মাটিতে পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ এবং ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়।

বাংলাদেশের ক্রিকেট আরেকটা ক্রান্তিকালে দাড়িয়ে। এই সময় যে কারো জাতীয় দলের প্রধাণ নির্বাচক হতে ভয় পাওয়ার কথা। এই ভয়টার কথা শুনে ফারুক হাসলেন। বললেন, ‘আমি তো ক্রান্তিকালেই দায়িত্ব পেয়ে অভ্যস্ত। আপনিই জানেন, আগে কোন কোন সময়ে আমি দায়িত্ব নিয়েছি। ফলে এসব নিয়ে আমার কোনো ভয় নেই। আমি যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরী থাকি।’

এখন বাংলাদেশে অন্তত টি-টোয়েন্টিতে নতুন খেলোয়াড় তুলে আনা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সেটাতেও ফারুক সিদ্ধহস্ত। বাংলাদেশ তাদের ইতিহাসে যে সবচেয়ে সফল ক্রিকেট ব্যাচটা পেয়েছে, সেই সাকিব, মুশফিক, তামিম, রিয়াদরা উঠে এসেছেন ফারুকের হাত ধরে। আবার পরের প্রজন্মে সৌম্য সরকার, মুস্তাফিজুর রহমানদেরও উত্থান ফারুক আহমেদের সময়ে। ফলে তার ওপর ভরসা করা যেতে পারে।

কিন্তু ফারুক কী ফিরতে রাজী হবেন?

সর্বশেষ তিনি কাজ করার স্বাধীনতা না পেয়ে দায়িত্ব থেকে সরে দাড়িয়েছিলেন। সে সময় বোর্ড দ্বিস্তর বিশিষ্ট্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া করায় এবং খেলোয়াড় নির্বাচনে নানারকম শর্ত দেওয়ায় পদত্যাগ করেছিলেন ফারুক। এখন কী সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে?

ফারুক আহমেদ এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাইলেন না সরাসরি। তবে বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি আপোষ করবেন না, ‘আসলে এসব আলোচনা এখন খুব বেশী আগাম হয়ে যায়। আগে প্রস্তাব আসুক। আমি টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন দেখবো। কাজ করার সুযোগ কেমন আছে, তা জানবো। তারপর বিবেচনা করবো। আপাতত এসব ভাবছি না।’

ফারুক না ভাবলেও তাকে নিয়ে বাংলাদেশ ভাবছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link