More

Social Media

Light
Dark

হাতুরুর বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় আফিফ আছেন তো?

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিলো অনেকটা ধ্রুবতারারই। সাদা বলের ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। অধিনায়কের নামের পর বাংলাদেশের একাদশে যে কয়টা নাম নিশ্চিত থাকতো ঠিক তেমনি একটা নামই ছিলেন আফিফ। সেই আফিফই কিনা বিশ্বকাপের মাত্র মাস ছয়েক আগে স্কোয়াড থেকেই বাদ পড়লেন। মাস তিনেক আগেও যাকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ভাবা হচ্ছিলো তিনিই কিনা বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা পাওয়া নিয়ে শঙ্কায়।

বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই দারুণ পারফর্ম করে সবার নজর কাড়েন আফিফ। ২০১৬ বিপিএলে স্বপ্নের মত আবির্ভাবের পর ২০১৮ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করে জায়গা করে নেন আফিফ। সেই থেকে ধরা হচ্ছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেটে পরবর্তী তারকা হতে যাচ্ছেন এই ধ্রুব। ২০১৮ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হলেও, মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি খেলেই দল থেকে বাদ পড়েন আফিফ।

দেড় বছর পর ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি ফরমেটের ত্রিদেশীয় সিরিজে আবারও দলে ডাক পান আফিফ। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই হন ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এর পরপরই অভিষেক হয় ওয়ানডেতেও। সাদা বলের দুই ফরমেটেই ক্যারিয়ারের শুরুতে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন আফিফ। টি-টোয়েন্টিতে তো একটা সময় ছিলেন দলের সেরা ব্যাটার। বাংলাদেশকে জেতাতে থাকলেন একের পর এক ম্যাচ।

ads

টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে জেতানো কিংবা গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক ৯৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়া, বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের ভরসার নাম উঠে উঠেছিলেন এসব পারফরম্যান্সেই।

কিন্তু হঠাতই যেন ছন্দপতন আফিফের ক্যারিয়ারে। সর্বশেষ গত বছরের জিম্বাবুয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংসের পর যেন রান খড়া চলছে আফিফের ব্যাটে। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে রান পেলেও ওয়ানডেতে যেন রান করতেই ভুলে গেছেন আফিফ।

ভারত সিরিজের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ, আফিফের ব্যাট হাসেনি একটুও। সর্বশেষ ছয় ইনিংসে আফিফের স্কোর গুলো এমন- ১৫,২৩,৯,৮,০,৬। এই স্কোর গুলোই বলে দেয় কতটা বাজে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আফিফ। দলের গুরুত্বপূর্ণ সাত নাম্বার পজিশনে এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সে দলও ভুগছিলো প্রবলভাবে।

আফিফের একাদশ থেকে বাদ পড়াটা তাই মোটামুটি অনুমিতই ছিলো। শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন এই অলরাউন্ডার। এর আগে বাংলাদেশের জার্সিতে টানা ৬১ টি-টোয়েন্টি খেলার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টির একাদশ থেকে বাদ পড়েন আফিফ। চান্দিকা হাতুরুসিংহের গুড বুক থেকে যে আফিফ দ্রুতই মুছে যাচ্ছেন তা বোঝাই যাচ্ছে।

সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডের একাদশে জায়গা মেলেনি। তৃতীয় ওয়ানডের একাদশে জায়গা পাবারও খুব একটা সম্ভাবনা ছিলো না। তৃতীয় ওয়ানডের জন্য ঘোষিত স্কোয়াডেও নেই আফিফ। বলা হচ্ছে, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে খেলার জন্য স্কোয়াড থেকে ‘ছুটি’ দেয়া হয়েছে আফিফকে। কিন্তু এবারের ডিপিএলে খুব দারুণ কিছু করতে না পারলে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা আস্তে আস্তে দূরে সরে যাবে আফিফের জন্য।

আফিফের জায়গায় আয়ারল্যান্ড সিরিজে সুযোগ পেয়েছেন ইয়াসির আলী রাব্বি। প্রথম দুই ওয়ানডেতে তেমন একটা কিছু করার সুযাগ পাননি রাব্বি, তবুও তাঁর ব্যাটিং ছিল সেই সাত নম্বর পজিশনের চাহিদা মেটানোর মতই। রাব্বি আরো বেশ কিছু ম্যাচ সুযোগ পাবেন নিশ্চিতভাবেই। সেখানে রাব্বি সফল হলে হাথুরুর বিশ্বকাপ পরিকল্পনা থেকে আফিফ কাটা পড়বেন এটা নিশ্চিতই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link