More

Social Media

Light
Dark

ডি ইয়ং ট্রান্সফার সাগা!

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রান্সফার উইন্ডোতে অন্যতম আলোচিত একজন ফুটবলার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। নতুন কোচ এরিক টেন হ্যাগের আগমনের পর থেকেই এই ডাচ ফুটবলারের জন্য দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টিম ম্যানেজম্যান্টের সাথে নিজের প্রথম সভাতেই স্বদেশী এই তারকাকে দলে চেয়েছিলেন টেন হ্যাগ।

আয়াক্সে থাকাকালীন কোচ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন এরিক টেন হ্যাগ। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে আসার পরেই পরিকল্পনা করে ফেলেছেন দলের প্লেয়িং স্টাইল কেমন হবে। ইতোমধ্যে তাঁর একাদশে ভারসাম্য আনার জন্য ক্রিস্টিয়ান এরিকসন এবং লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে নিজেদের ক্লাবে ভিড়িয়েছে ইউনাইটেড।

কিন্তু কোচের মূল চাহিদা একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে সেরা পছন্দ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং।

ads

এরিক টেন হ্যাগ এবং ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং – দুই ডাচের সম্পর্ক অনেক আগের। টেন হ্যাগ নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন ডি ইয়ংকে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আয়াক্সে তাকেই কোচ হিসেবে পেয়েছিল এই মিডফিল্ডার। ডি ইয়ং এর ইউরোপের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার হয়ে উঠার পিছনে উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে টেন হ্যাগের। 

বাইরের গুঞ্জনে কান না দিয়ে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসার দিকেই বেশি মনোযোগী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টেন হ্যাগ এবং তাঁর ক্লাব – দু’পক্ষই ডি ইয়ং এর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আগমনের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আর তাই ধৈর্য ধরেই অপেক্ষা করছে ইংলিশ পরাশক্তিরা।

বার্সেলোনার বর্তমান আর্থিক অবস্থা বেশ জটিল। উচ্চ বেতনের খেলোয়াড়ের আধিক্যের কারনে দলটির বেতন-কাঠামো এখন বড্ড নড়বড়ে। তাই বেতনের ভারসাম্য ঠিক করার জন্য দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হওয়া সত্ত্বেও ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে বিক্রি করে ফেলতে রাজি বার্সেলোনা।

আর এটিই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ভরসার কারণ – তাঁরা জানে মোটামুটি দাম পেলেই এই ফুটবলারকে ছেড়ে দিবে কাতালান ক্লাবটি।

বার্সেলোনা শুরুতে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংয়ের জন্য ৮৫ মিলিয়ন ইউরো দাবি করেছিল কিন্তু তাদের দুরাবস্থার কারনে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দর কষাকষির সুযোগ পায়। ফলে ডি ইয়ং এর দাম এসে দাঁড়ায় ৫৫ মিলিয়ন ইউরোতে। শেষ দিকে অবশ্য আরো আট মিলিয়ন বাড়িয়ে ৬৩ মিলিয়ন ইউরোতে সম্মত হয় দুই দেশের দুই ক্লাব।

তবে বাদ সাধেন স্বয়ং ডি ইয়ং নিজে। নিজের বর্তমান ঠিকানাতেই থাকতে আগ্রহী তিনি। তবে তাঁর অনিচ্ছায় ক্লাব যদি বিক্রি করে দেয় তবে নিজের বকেয়া বেতন গ্রহণ করেই যাবেন এই ডাচ। ধারণা করা হচ্ছে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে অতিরিক্ত আট মিলিয়ন ইউরো ডি ইয়ং এর বকেয়া বেতন ভাতা পরিশোধের জন্যই নিয়েছে বার্সেলোনা। 

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড অবশ্য বিশ্বাস করে, ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং নিজের পুরোনো কোচ এরিক টেন হ্যাগের সাথে একত্রিত হতে উন্মুখ হয়ে আছে। বার্সেলোনার সাথে আর্থিক দ্বন্দ্বের সমাধান হলেই তারা ডি ইয়ংকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে নিয়ে আসতে সক্ষম হবে। আপাত পরিস্থিতিতে এটা প্রায় নিশ্চিত যে, ডি ইয়ং শীঘ্রই রেড ডেভিলদের একজন হতে যাচ্ছে। 

ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ম্যানইউনাইটেডের মূল লক্ষ্য হলেও বিকল্প হিসেবে বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে ক্লাবের হাতে। বিকল্প খেলোয়াড়দের একজন অবশ্য হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। লিডসের কেলভিন ফিলিপসকে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানসিটি নিজেদের করে নিয়েছে।

এছাড়া উলভসের রুবেন নেভেসের দিকে চোখ রেখেছে রেড ডেভিলরা। আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলে হয়তো প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ফুটবলারকে দলে ভেড়াতে পারবে তারা। আবার লেস্টার সিটির ইয়োরি তিয়েলমাসের কথাও ভেবেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। অবশ্য এই বেলজিয়ান তরুণের আর্সেনালে যোগ দেয়া নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। 

ওয়েস্ট হ্যামের ডেকলান রাইস হতে পারে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং এর আরেক বিকল্প। ইংলিশ এই মিডফিল্ডারের জন্য অবশ্য ১০০ মিলিয়নের বেশি চায় ওয়েস্ট হ্যাম। তাই আপাতত রাইসের প্রতি আগ্রহ নেই ইউনাইটেড ম্যানেজম্যান্টের। 

সবমিলিয়ে ডি ইয়ং ইস্যুতে সৃষ্টি হয়েছে ত্রিভুজ সমস্যা। একদিকে সময় চলে গেলেও ইউনাইটেড বিকল্প চিন্তা না করে ডি ইয়ং এর অপেক্ষা করছে, অন্যদিকে বার্সেলোনা তাদের তারকাকে বিক্রি করে দিতে চায়। আবার ডি ইয়ং নিজে ইংল্যান্ডে আসতে রাজি হলেও সেটা হতে হবে তাঁর মন মতো। 

শেষমেশ যাই ঘটুক, রেড ডেভিল ভক্তদের প্রত্যাশা থাকবে সিদ্ধান্ত দ্রুত আসুক। ডি ইয়ংকে পাওয়া গেলে তো ভালোই; যদি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে যেন অন্য কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় থাকে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link