More

Social Media

Light
Dark

সোনালি দিনের নীরব কিংবদন্তি

বিশ্ব ফুটবলে স্প্যানিশ লিগ কিংবা লা লিগা সবসময়েই সেরার কাতারে ছিল। এই লিগেরই রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সালোনা বিশ্বের সেরা পাচটি ক্লাবের দুইটি সেটা নি:সন্দেহে বলা যায়। তবে এত দূর্দান্ত ঘরোয়া লিগ হওয়া সত্বেও ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত স্পেন জাতীয় ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক সাফল্য কখনোই আশানুরুপ ছিল না।

১৯৬৪ সালের ইউরোই বড় ধরণের প্রতিযোগিতায় তাদের একমাত্র শিরোপা ছিল। অথচ যুগে যুগে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে ফেবারিট হয়েই খেলতে নেমেছিল। ভাগ্যদেবী হয়তো বিরুপ ছিল। সেজন্য কোয়ার্টার ফাইনালের দল নামেই পরিচিত ছিল স্পেন।

শেষ পর্যন্ত ভাগ্যদেবী মুখ ফিরে তাকালো। ২০০৮ সালের ইউরোতে বিশ্ব দেখলো এক নতুন স্পেনকে। অপরাজিতভাবেই জিতলো সেই টুর্নামেন্ট। হারালো ইতালি জার্মানদের মতো জায়ান্টদের।

ads

নতুন স্পেনের এই পথযাত্রায় মোটামুটি ভালোই অবদান রাখলেন ডেভিড ভিয়া। চার গোল করে টুর্নামেন্টের গোল্ডেন বল জিতে নিলেন। টুর্নামেন্টের সেরা একাদশেও জায়গা পেলেন। তবে গোল চারটিই গ্রুপ স্টেজে করায় খুব বেশি লাইমলাইটে আসতে পারলেন না।

তবে ইউরো তো বিশ্বের সর্বসেরা টুর্নামেন্ট না। দেখার বিষয় ছিল বিশ্বকাপে স্পেন কি করে!

প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের কাছে হারার পর মনে হলো বিশ্বকাপে সেই আগের স্পেনকেই সম্ভবত দেখা যাচ্ছে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই ভিয়ার জোড়া গোলে হন্ডুরাসকে হারিয়ে কক্ষপথে ফিরে এলো স্পেন। পরের ম্যাচে চিলিকে ২-১ গোলে হারানো ম্যাচেও এক গোল করেন ভিয়া।

দ্বিতীয় পর্বে মুখোমুখি হয় পর্তুগালের। সেই ম্যাচে স্পেন জয়ী হয় ১-০ গোলে, গোলদাতা ভিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি প্যারাগুয়ের। ১-০ গোলে জেতা সেই ম্যাচের গোলদাতাও ভিয়াই। সেমি আর ফাইনালে গোল পাননি। তবে দল বিশ্বকাপ জিতলো।

পুরো টুর্নামেন্টে স্পেন করে আট গোল, এর মাঝে ভিয়া করেন পাঁচ গোল, একটি অ্যাসিস্ট। জিতে নেন টুর্নামেন্টের ব্রোঞ্জ বলের পুরস্কার। এছাড়া পান সিলভার বুট। ২০১০ বিশ্বকাপের ড্রিম টিমেও সুযোগ পান। স্পেনের একমাত্র বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় অবদান তাঁরই।

বর্তমানে ৫৯ গোল নিয়ে স্পেনের সর্বোচ্চ গোলদাতা, বিশ্বকাপে স্পেনের পক্ষে সর্বোচ্চ গোলদাতা, স্পেনের হয়ে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচে (৬) গোল করার রেকর্ড, স্পেনের হয়ে ১ ক্যালেন্ডার ইয়ারে সবচেয়ে বেশি গোল (১২) করার রেকর্ড এই ভিয়ার।

স্পেনের সোনালি সময়ের উজ্জ্বল পারফর্মার ছিলেন। কিংবা কে জানে, তিনি উজ্জ্বল থাকার কারণেই হয়তো স্পেনের সোনালি সময় এসেছিল। শুধু জাতীয় দলে না, ক্লাব ফুটবলেও ভিয়া অসাধারণ ছিলেন।

ভ্যালেন্সিয়া দলের টানা ৫ মৌসুমে (২০০৬-২০১০) সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন। এছাড়া ২০০৬-০৭ এ স্পেনিশ লীগের সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট দাতাও ছিলেন। ভ্যালেন্সিয়ার হয়ে জিতেছেন কোপা দেল রে। এর আগে রিয়াল জারাগোজা হয়েও জিতেছেন কোপা দেল রে আর স্প্যানিশ সুপার কাপ।

তবে, সর্বোচ্চ সফলতা পেয়েছেন বার্সালোনায় আসার পর। মাত্র তিন মৌসুম খেলেই আটটি ট্রফি জিতেছেন যার মাঝে ছিল দু’টি লিগ আর একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। যদিও, তিনি খুবই আন্ডাররেটেড একজন তারকা ছিলেন তাঁর বার্সা জীবন কিংবা এর পরবর্তী সময়ে।

বার্সেলোনার পর ছিলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। সেখান থেকে নিউ ইয়র্ক সিটি, মেলবোর্ন সিটি হয়ে জাপানের দল ভিজেল কোবে-তে নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন। অনেকটা নীরবেই বিদায় নিয়েছেন পেশাদার ফুটবল থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link