More

Social Media

Light
Dark

প্রমাণের প্রতিজ্ঞায় বয়স বাঁধা নয়

বয়সটা স্রেফ একটা সংখ্যা। সেই সংখ্যার যত মারপ্যাঁচ উপেক্ষা করে কতজনই তো নিজের স্বপ্ন, নিজের সখের পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। আনন্দে ভাসাচ্ছেন তাদের আশেপাশে থাকা মানুষদের। এই যে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কথাই ধরা যেতে পারে।

ক্রিকেট ময়দানেও এমন একজনের দেখা মিলেছে ইংল্যান্ডে। নাম তাঁর ড্যারেন স্টিভেন্স। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ। কাউন্টি তো খেলে চলেছেন ২০০৫ সালে। বয়সটা তখন ছিল তাঁর ২৮ বছরের আশেপাশে।

বয়সটা এখন ছুঁয়ে ফেলেছে চল্লিশের ঘর। ঠিক ছুঁয়ে ফেলেছেও বলা যায় না। ঝুঁকে গেছে পঞ্চাশের দিকে। ৪৬ এর ঘরে তিনি পৌঁছে গেছেন। তবে তিনি থেমে যেতে চাননা এখানেই। তিনি যেন অদম্য এক ক্রিকেটার হয়েই থেকে যেতে চান ক্রিকেটের ইতিহাসের গোটা একটা অধ্যায় জুড়ে।

ads

উপমহাদেশ কিংবা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেকোন খেলোয়াড় এই বয়সের বহু আগেই ক্রিকেট খেলা থেকে নিজেকে গুটিয়ে ফেলতেন। নতুন কোন পরিচয়ে ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হতেন। নতুবা একেবারে ক্রিকেট থেকে আড়ালে চলে যেতেন। তবে কিছুতেই সে পথ ধরতে চাইছেন না ড্যারেন স্টিভেন্স।

নিজেকে নতুন করে যেন আরও একটিবার পরিচয় করিয়ে দিতে মুখিয়ে রয়েছেন স্টিভেন্স। কাউন্টি দল কেন্টের সাথে তাঁর সম্পর্কের ইতি ঘটতে চলেছে। এই ঘোষণা আসার পর থেকেই যেন আবার নতুন এক উদ্যমে জ্বলে উঠলেন স্টিভেন্স। তিনি যে ফুরিয়ে জাননি সেটারই আরেক দফা প্রমাণ করবার পূর্ণ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

চামড়ায় ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। হাড় ছুটছে নমনীয়তার পানে। তবে স্টিভেন্স যেন কোন মতেই বিশ্বাস করতে চাইছেন না, তাঁর বয়স হয়েছে। তাঁকে এবার থামতে হবে। ড্যারেন স্টিভেন্সের প্রথম শ্রেণি আর লিস্ট এ ক্যারিয়ারটা কিন্তু বেশ সমৃদ্ধ। মোটেও সাদামাটা গোছের নন তিনি। তেমনটা হলে বোধহয় এখন অবধি খেলে যাওয়ার স্পৃহাটা তিনি পেতেন না।

দলও তাঁকে বয়ে বেড়াত না। প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে তিনি প্রায় ১৬,৬৭৬ রান করেছেন। লিস্ট এ ক্যারিয়ারে রানের সংখ্যা ৭৯৪২। বল হাতেও বেশ সফলই বলা যায় তাঁকে। লাল বলে ৫৯১ উইকেটের বিপরীতে সাদা বলের দুই ফরম্যাট মিলিয়ে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেট নিয়েছেন মোট ২৮৭টি। তবে তিনি আলোচনায় রয়েছেন তাঁর চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে।

তিনি কোনভাবেই খেলা ছেড়ে যেতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘আমি খেলোয়াড়/ কোচ রোলের সুযোগ খুঁজছি।’ শুধু খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর প্রয়োজনীয়তা যদিও কমে যায় তবুও তিনি কোচ/ খেলোয়াড় হিসেবে থেকে যেতে চান ক্রিকেটের সাথে। এমনকি নিজেকে তিনি প্রস্তুতও করেছেন একজন কোচ হিসেবে।

বিগত পাঁচ বছরে খেলা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কোচ হবার। দেশের বাইরে কোচিং প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক দলের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছেন স্টিভেন্স। তাছাড়া তিনি কেন্টের খেলোয়াড়দের বেশ ভাল করেই বোঝেন। তাই তিনি খুব করে চাইছেন কেন্টের সাথ থেকে যেতে।

তিনি বলেন, ‘আমি কেন্টে বেড়ে ওঠা প্রতিটা খেলোয়াড় সম্পর্কে জানি। আমি তাঁদের সক্ষমতা আর দুর্বলতা বাকি সবার চাইতেই বেশি বুঝতে পারি। তাই আমি কোচ/ খেলোয়াড় রোলে দলের সাথে থাকতে চাইছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন চাইছে না, তা আমি বুঝতে পারছি না।’

প্রবল ইচ্ছা শক্তির বদৌলতে রয়্যাল লন্ডন কাপের সেমিফাইনালে তিনি হ্যাম্পশায়ারের ৮৪ রানে এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন। অপরাজিত থেকে দলের জয়ে নিশ্চিত করেই তবে তিনি ক্ষান্ত হয়েছেন। আবারও নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ তিনি রেখেছেন। তবে শেষ অবধি ড্যারেন স্টিভেন্সের কপালে কি জুটবে সেটা অবশ্য সময়ই বলে দেবে। তবে এই অদম্য ইচ্ছের একটা প্রতিদান তিন প্রত্যাশা করতেই পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link