More

Social Media

Light
Dark

দানি অলমো ‘দ্য আনসাং হিরো’

স্পেন শিরোপা জিতেছে কখন জানেন? নব্বই তম মিনিটে দানি অলমো গোললাইন থেকে ফিরিয়েছেন বল। সেটা প্রায় নিশ্চিত গোলই ছিল। অন্য যেকোন দিন চৌকস কোন ডিফেন্ডারও হয়ত সে বলের নাগাল পেতেন না। কিন্তু মার্ক গুহেহির হেডটা ঠেকিয়ে দিলেন অলমো। ব্যাস! ইউরোপ সেরার ঐ রুপালি ট্রফিতে তখনই খোদাই হয়ে যায় স্পেনের নাম।

চতুর্থবারের মত স্পেন নিজেদের করে নিয়েছেন ইউরো চ্যাম্পিয়নের খেতাব। এই যাত্রায় তরুণ একটা দলের উপর ছিল স্পেনের ভরসা। এই দলের কোচ লুই দে লা ফুয়েন্তে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করেছেন স্পেনের বয়সভিত্তিক দলের সাথে। তিনি জানতেন ঝিমিয়ে পড়া স্পেনের ফুটবল সজীবতা নিয়ে আসবে তারুণ্য। সেটাই হয়েছে।

পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে লামিন ইয়ামাল নজর কেড়েছেন। নিকো উইলিয়ামস, মার্ক কুকুরেলারা প্রশংসা কুড়িয়েছেন। কিন্তু হুট করেই গোটা দলের মধ্যমণি বনে যাওয়া অলমো সম্ভবত আড়ালেই থেকে গেছেন। যতটা আলো তিনি প্রাপ্য ততটা আলো পৌঁছায়নি তার কাছে।

ads

ইতালির বিপক্ষে বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বদলি লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলেছিলেন ৩১ মিনিট। ততক্ষণ অবধি লা ফুয়েন্তের পরিকল্পনার ছক জুড়ে স্রেফ ইয়ামাল, আলভারো মোরাতাদের ছড়াছড়ি। কিন্তু তুরুপের তাস রূপে অলমো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু করেন আলবেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের বিপক্ষে। সে ম্যাচে জয়সূচক গোলের কারিগর তিনিই ছিলেন।

সেদিন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে অলমো খেলেছিলেন ৮৪ মিনিট। লা ফুয়েন্তে সম্ভবত আন্দাজ করে ফেললেন অলমোর সক্ষমতা। তবুও তাকে জমিয়ে রাখলেন ফুয়েন্তে। জর্জিয়ার বিপক্ষে আবারও বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামলেন অলমো। এবার গোল নিজেই করলেন তরুণ এই খেলোয়াড়।

এরপরই মূলত অলমোর জন্য আসল পরীক্ষারূপে হাজির হয় জার্মানি। সেই ম্যাচেও বেঞ্চে ছিলেন তিনি। জায়গা হয়নি তার শুরুর একাদশে। তবে ৮ মিনিটের মাথায় তাকে মাঠে নামত হল। এরপর জম্পেশ লড়াইয়ের সেই ম্যাচটা স্পেন জিতে নেয় ২-১ গোল ব্যবধানে। দু’টো গোলেই ছিল অলমোর অবদান। কোয়ার্টার ফাইনাল হারলেই যে বিদায় নিতে হত টুর্নামেন্ট থেকে।

তেমন একটি ম্যাচে স্বাগতিক হাজার হাজার দর্শকদের চাপ সামলে, অলমো একটি গোল নিজে করলেন, আরেকটি করালেন সতীর্থকে দিয়ে। এরপর আবার সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষেও করেছেন গোল। ফাইনালে সেই গোললাইন সেভটা না করলে হয়ত, ফলাফল ভিন্ন হলেও হতে পারত।

এমন হুট করেই দলের আস্থাভাজন হয়ে ওঠায়, ব্যক্তিগত কোন পুরষ্কার হয়ত অলমোর কপালে জোটেনি। অলমো হয়ত ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য নিজেকে উজাড় করে দেননি। তিনি হয়ত দলের জন্যই জিততে চেয়েছিলেন শিরোপা। দেশের জন্য বয়ে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন গৌরব। দানি অলমো সেটা করে দেখাতে পেরেছেন। ৬ ম্যাচে ৫ গোলে অবদান রেখে তিনি সম্মুখভাগে লড়াই করেছেন, জিতেছেন দর্শকদের অকৃত্রিম ভালবাসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link