More

Social Media

[ivory-search id="135666" title="Post Search"]
Light
Dark

শেষ বাঁশি, রোনালদো

মরক্কোর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই হয়তো নিজের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। চেষ্টার কমতি রাখেননি, কিন্তু তবুও পাঁচটি বিশ্বকাপের কোনোটিতেই ফাইনাল খেলা হয়নি এই তারকার। আসুন দেখে নেয়া যাক বিশ্বকাপে রোনালদোর খেরোখাতা। 

  • ২০০৬ বিশ্বকাপ: সেমিতে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায়

নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই শিরোপার সবচেয়ে কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন তরুণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বছর দুয়েক আগের ইউরোর ফাইনালেও উঠেছিল দলটি। লুইস ফিগো, ডেকো, সিমাও, পাওলেটাদের নিয়ে গড়া দলটা ছিল জার্মানি হওয়া বিশ্বকাপের অন্যতম বড় দাবিদার। 

গ্রুপপর্বে শীর্ষস্থানে থেকে শেষ করার পর দ্বিতীয় রাউন্ডে ডাচদের হারিয়ে শেষ আটে ওঠে পর্তুগিজরা। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে চাপের মুখে শেষ শট জালে জড়িয়ে দলকে সেমিতে তোলেন রোনালদোই।

ads

কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জিনেদিন জিদানের সাথে আর পেরে ওঠেননি রোনালদোরা। তাঁর একমাত্র গোলে পর্তুগালের স্বপ্ন ধূলিস্মাৎ করে ফাইনালে ওঠে ফ্রান্স।

  • ২০১০ বিশ্বকাপ: দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনে স্বপ্নভঙ্গ

২০১০ বিশ্বকাপে ভারসাম্যপূর্ণ এক দল নিয়েই বিশ্বকাপে গিয়েছিল পর্তুগাল। বিশেষ করে রক্ষণভাগ ছিল দুর্দান্ত, গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই নিজেদের জাল ছিল অক্ষত। দুই ড্র আর উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ৭-০ গোলের বিশাল জয়ে ব্রাজিলের পর গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে পরের রাউন্ডে ওঠেন রোনালদোরা। 

কিন্তু শেষ ষোলোতে স্পেনের সাথে আর জেতা হয়নি। পুয়োল-পিকেদের দারুণ ডিফেন্সে ডেভিড ভিয়ার একমাত্র গোলটা আর শোধ দেয়া হয়নি রোনালদোদের। সেবার পরবর্তীতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। 

  • ২০১৪ বিশ্বকাপ: পেরোনো হল না গ্রুপপর্ব 

২০১৪ বিশ্বকাপে প্রকৃত অর্থেই গ্রুপ অফ ডেথে পড়েছিলো পর্তুগাল। জার্মানির পাশাপাশি তাঁদের গ্রুপে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ঘানা। সেবার কোনো ম্যাচেই নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেননি সিআর সেভেন। 

প্রথম ম্যাচেই জার্মানির কাছে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হার দিয়ে শুরু। এরপর শেষ মূহুর্তে ভারেলার গোলে ২-২ গোলে সমতায় শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ। শেষ ম্যাচে অবশ্য রোনালদো গোল করেছিলেন।

তাঁর গোলেই ঘানাকে পর্তুগাল হারায় ২-১ গোলে। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি, যুক্তরাষ্ট্রের সমান চার পয়েন্ট থাকলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় বিদায় ঘন্টা বাজে রোনালদোদের। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেন রোনালদো। 

  • ২০১৮ বিশ্বকাপ: লড়াকু উরুগুয়েতে আত্নসমর্পন

২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই রোনালদো দেখিয়েছিলেন কেন তিনি বিশ্বসেরা। স্পেনের বিপক্ষে তিনবার পিছিয়ে পড়লেও অনবদ্য এক হ্যাটট্রিকে দলকে এনে দিয়েছিলেন মূল্যবান এক পয়েন্ট। মরক্কোর বিপক্ষে পরের ম্যাচেও রোনালদো ম্যাজিক, তাঁর একমাত্র গোলে জয়ী দলের নাম পর্তুগাল। শেষ ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে ড্র করে পরের রাউন্ডে ওঠে পর্তুগাল। 

কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে রোনালদোদের প্রতিপক্ষ ছিল লুইস সুয়ারেজ – এডিনসন কাভানিদের উরুগুয়ে। শুরুতে কাভানি উরুগুয়েকে এগিয়ে দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে পেপের গোলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। কিন্তু ৬২ মিনিটে কাভানির দ্বিতীয় গোলে বিদায়ঘন্টা বাজে পর্তুগালের। অনবদ্য ফর্মের রোনালদোকে আরও একবার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় খালি হাতেই। 

  • ২০২২ বিশ্বকাপ: মরক্কোর রূপকথার যাত্রা

ফর্ম পড়তির মুখে, বয়সটাও ৩৭ পেরিয়েছে। তবুও দলের মূল তারকা হিসেবেই কাতারে এসেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। নিজের শেষ বিশ্বকাপটা স্মরণীয় করে রাখতে চেষ্টার কমতি ছিল না। গ্রুপপর্বে গোলও পেয়েছিলেন একটা।

কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে হুট করে একাদশে জায়গা হারালেন রোনালদো। সুইসদের বিপক্ষে অবশ্য তাতে জিততে সমস্যা হয়নি। কিন্তু কোয়ার্টারে দুর্দান্ত মরক্কোকে আর হারানো গেল না। এন নেসরির গোলে পিছিয়ে পড়তেই অবশ্য মাঠে নামানো হয়েছিল রোনালদোকে।

কিন্তু, জমাট মরক্কো ডিফেন্স ভাঙার সাধ্য যেন এদিন ছিল না কারোরই। চেষ্টার পর চেষ্টা করে গিয়েছেন, কিন্তু প্রতিবারই হতাশাই সঙ্গী হয়েছে। নিজের শেষ বিশ্বকাপেও তাই প্রথম বিশ্বকাপের সাফল্য ছাপিয়ে যাওয়া হল না রোনালদোর।    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link