More

Social Media

Light
Dark

ব্যাচ অব ২০১৬

২০১৬ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপেই নজর কেড়েছিলেন নানা দেশের নানা উদীয়মান তরুণ তুর্কি। সেই উদীয়মান তারকাদের মধ্যে কেউ কেউ এখনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেমন ছড়ি ঘোরাচ্ছেন, তেমনই বার্তা দিচ্ছেন আগামীর কোন বিরাট কর্মযজ্ঞের।

ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৬ এর অনূর্ধ্ব বিশ্বকাপের এই গুটিকয়েক উদীয়মান তারকাই ছড়ি ঘোরাবেন আগামীর ক্রিকেট বিশ্বে। সেই ২০১৬ বিশ্বকাপ থেকে উঠে আসা তরুণেরা কারা?

  • ঋষাভ পান্ত (ভারত)

ads

ঋষাভ পান্ত সেই বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে ছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে। মূলত ঈশান কিষাণের সাথে ওপেনিংয়ে নেমে ভারতকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেওয়ার কাজটাই করতেন ঋষভ। তবে শুধু একজন ওপেনার হিসেবেই না, উইকেটরক্ষক হিসেবেও উইকেটের পেছনে ঋষাভ ছিলেন দারুণ সপ্রতিভ।

নিজের এই দ্বৈত গুণকে অবশ্য তিনি এখনও ধরে রেখেছেন। বিশ্বকাপ শেষে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছড়ি ঘুরিয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন ভারতীয় জাতীয় দলে আর সেখানেও নিজের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স বজায় রেখেছেন তিনি। ক্যারিয়ারে তাঁর এখন শুরুর দিকই বলা যায় – তবে, মোটামুটি সব ফরম্যাটেই নিজেকে অপরিহার্য বলে প্রমাণ করে ফেলেছেন তিনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (আইপিএল) করছেন অধিনায়কত্ব। তবে সবে তো শুরু, ঋষাভ পান্ত দিনে দিনে যে বার্তা দিচ্ছেন তাতে ভারত উইকেটের পেছনে ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি পেতেই পারেন!

  • ঈশান কিষাণ (ভারত)

ঋষাভ পান্ত সেই বিশ্বকাপে যে দলে ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে ছড়ি ঘোরাতেন, সেই দলেরই অধিনায়ক ছিলেন ঈশান কিষাণ। তবে ঋষাভের মত ঈশানের জাতীয় দলে ডাকটা এত তাড়াতাড়ি আসেনি। তিনি বিশ্বকাপ খেলেছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন, বছরের পর বছর আইপিএলে পারফর্ম করেছেন তবে ঈশানের অপেক্ষা সহসা ফুরায়নি। তিনি জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন সেই বিশ্বকাপ খেলার প্রায় ৫ বছর পর, ভারতের সদ্য শেষ হওয়া সিরিজে।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অভিষেকের সুযোগ পাওয়া ঈশান কিষাণ নিজেকে প্রমাণ করে ফেলেছেন ইতোমধ্যেই। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তাঁর পারফরম্যান্স দারুণ। তবে, এটা ঠিক যে ভারতে প্রতিভার কোনো কমতি নেই – তাই এই সময়ে এসে জাতীয় দলের জায়গাটা পাঁকা করার জন্য নিয়মিত বড় ইনিংস খেলতে হবে এই প্রতিভাবান ব্যাটসম্যানকে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে তো সবে শুরু, তবে যেকোন ধরণের টি-টোয়েন্টিতে ঈশান দীর্ঘদিনের পারফর্মার। তবে, নিজেকে আরো ওপরে তোলার সব ধরণের যোগ্যতাই আছে ঈশান কিষাণের।

  • মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)

অ্যানাদার ক্যাপ্টেন ইন দা টাউন‘- ঈশান কিষাণ ছিলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক, আর বাংলাদেশের হয়ে আর্মব্যান্ডটা পরতেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে বিশ্বকাপ শেষে মিরাজকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ নিতে একদমই অপেক্ষা করতে হয়নি। যে বছর তিনি বিশ্বকাপ খেলেছেন, সে বছরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর টেস্ট অভিষেকটা হয়ে যায়।

আর অভিষেকেই বাজিমাত করে তিনি একা হাতেই হারিয়ে দেন ইংল্যান্ডের নাক উচু টেস্ট দলটাকে। এখন অব্দি বাংলাদেশ জাতীয় দলে তিনি টেস্ট ফরম্যাটে অটো চয়েজ, আস্তে আস্তে নিজের বিচরণ বাড়াতে শুরু করেছেন বাকি সব ফরম্যাটেও।

আর মেহেদী হাসান মিরাজ এখন ক্যারিয়ারের সেই সময়ে আছেন – যখন তাঁকে কেবল বাংলাদেশের ক্রিকেটেই নয় – বিশ্ব ক্রিকেটেই ভবিষ্যতের বড় তারকা বলে মনে করা হচ্ছে। সব ফরম্যাটেই তিনি ক্রমেই নিজের মধ্যে আনছেন ইতিবাচক পরিবর্তন।

  • শিমরন হেটমায়ার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

২০১৬ এর সেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলেরই দুর্দান্ত এক ব্যাটসম্যান ছিলেন শিমরন হেটমায়ার। সেই টুর্নামেন্ট দিয়েই প্রথমবারের মত তাঁর নাম শুনেছিল ক্রিকেট বিশ্ব।

শুধু পারফরম্যান্সের জন্য নয়, শিমরন হেটমেয়ার নজর কেড়েছিলেন নিজের ব্যাটিং স্টাইলের জন্য। সেই স্টাইল এতটাই চোখে লাগার মত ছিল যে তাকে তুলনা দেওয়া হত স্যার ভিভ রিচার্ডসের সাথে। অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জেতানো এই শিমরন হেটমায়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেও নিজের প্রভাব এতটুকু কমাননি।

এখনই আইপিএল সহ নানা ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগে তিনি ডাক পাচ্ছেন, পারফর্ম করছেন। তবে শিমরনের এখনও যাওয়ার পালা বহুদূর। তবে, সমস্যা একটাই – নিজের ফিটনেস নিয়ে একেবারেই সতর্ক নন তিনি।

  • রশিদ খান (আফগানিস্তান)

লাস্ট বাট নট দা লিস্ট‘- ২০১৬ এর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে পাওয়া সবচাইতে দুর্দান্ত ক্রিকেটার মনে হয় রশিদ খান। বয়স নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে ক্রিকেট নিয়ে? সেখানে রশিদ একাই একশো। ছয় বলে ছয় রকম স্পিন করতে পারা রশিদ একেবারে শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন।

সারা বিশ্বের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটগুলোতে তিনি এখন হটকেক। নিজের দেশের হয়ে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছেন, একদিন বিশ্বকাপ জিতবেন এমন স্বপ্নও দেখছেন। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে কিংবা টেস্ট – সব ফরম্যাটেই বেশ মোক্ষমভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন তিনি। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) সিদ্ধান্তহীনতা কমে গেলে নি:সন্দেহে বিরাট এক কিংবদন্তি হিসেবেই ক্যারিয়ার শেষ করবেন রশিদ খান।

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link