More

Social Media

Light
Dark

জাতীয় দলে ফিরছেন নাসির!

প্রতিভাবান হিসেবেই জাতীয় দলে আগমণ তাঁর। কিন্তু মাঠের খেলার চাইতে মাঠের বাইরে বিতর্কে জড়িয়েছেন বারবার। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্যাডবয় তকমাটা তাঁর গায়ে লেগে আছে বহুদিন ধরেই। ইনজুরির কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন বেশ অনেক দিন, ফিরবেন তেমন আভাসও ছিল না। তবে নাসির হোসেন ফিরলেন, এবারের বিপিএল দিয়ে যেন জানান দিচ্ছেন নিজের রাজ্যপাট বুঝে নেয়ার। 

নাসিরের ক্যারিয়ারের পুরোটাই যেন রোলার কোস্টার রাইড। প্রায় এক যুগ আগে নতুন তারকা হিসেবে জাতীয় দলে অভিষেক। আজন্ম ফিনিশার খুঁজে না পাবার আক্ষেপে পোড়া বাংলাদেশ আস্থা খুঁজেছিল নাসিরে। নাসির সেই আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন শুরুতে, কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথেই যেন ফিকে হয়ে এসেছে তাঁর দ্যুতি। জাতীয় দলে আসা যাওয়ার মাঝে থাকতে থাকতে কবে যে হারিয়েই গেলেন তা আর আলাদা করে চোখেই পড়লো না। 

মডেলের অভিযোগ, সিমকার্ড বিতর্ক, অন্যের স্ত্রীকে বিবাহের অভিযোগ – সবকিছু মিলিয়ে মাঠের পারফরম্যান্স না হাসলেও মাঠের বাইরে বরাবরই সরব তিনি। এবারের বিপিএলের কথাই ধরুন না, শুরুতে ঢাকার অধিনায়ক নাসির এমন খবর প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশের পর হাসাহাসি হয়েছে বিস্তর।

ads

ট্রফি উন্মোচনের দিনেই জড়িয়ে পড়েন আরেক বিতর্কে, উপস্থিত এক সাংবাদিকের সাথে তাচ্ছিল্যের সুরে কথা বলেন। শুরু হয় আরেকপ্রস্থ সমালোচনা, যদিও প্রথম ম্যাচের পর সেই সাংবাদিকের কাছে ক্ষমা চেয়ে ঘটনা সামাল দেন নাসির। 

ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটা যেন নাসিরের চরিত্রের সাথে একদমই বেমানান। তিনি তো বিতর্কের কেন্দ্রে থাকতেই পছন্দ করেন অন্তত গত কয়েক বছরের নিয়মিত দৃশ্য তাই বলে। তবে এবারের বিপিএল যেন নাসিরের নিজেকে শোধরানোর মিশন, মাঠের পাশাপাশি মাঠের বাইরেও অনেক পরিণত ঢাকার অধিনায়ক। খাতা-কলমে টুর্নামেন্টে এরচেয়ে দুর্বল দল ঢাকাতে টানছেন একা হাতে। 

পয়েন্ট তালিকায় ঢাকার সবার তলানিতে থাকলেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় নাসির আছেন দ্বিতীয়তে। ঢাকার ব্যাটিং লাইন আপ ধ্বসে পড়ছে আর অন্যপ্রান্তে নাসির একাকী লড়াই চালাচ্ছেন, বিপিএলে ঢাকার ম্যাচের নিয়মিত দৃশ্য এটা। শেষ ম্যাচের কথাই ধরুন না, বরিশালের বিপক্ষে ১৭৪ রান তাড়া করতে নেমে ৩৬ বলে ৫৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও থামতে হয়েছে জয় থেকে ১৩ রান দূরে। অপরপ্রান্তে ন্যূনতম সঙ্গটাও দিতে পারেননি কেউই। 

এবারের বিপিএলের প্রতিটি ম্যাচেই দেখা গেছে নাসির ঝলক। ব্যাট হাতে ছয় ম্যাচের মাঝে তিনটিতেই ছিলেন অপরাজিত। ১৩১.২১ স্ট্রাইকরেটে ২৬৯ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক তিনি। এক নম্বরে থাকা সাকিব আল হাসানের চাইতে পিছিয়ে আছেন মোটে ছয় রানে।

জাতীয় দলে থাকাকালীন সময়ে ওডিয়াইতে মাঝের ওভারে দারুণ কার্যকরী ছিল নাসিরের অফস্পিন। বল হাতে সেই ঝলকটা আছে এখনো, সাত উইকেট নিয়ে আছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকার চার নম্বরে। দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাসির বিপিএল দিয়েই ফিরে এসেছেন জাতীয় দলে জায়গা পাবার দৌড়ে। 

তবে নাসিরের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স সত্ত্বেও ঢাকার অবস্থান পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। ছয় ম্যাচে সবেধন নীলমণি এক জয়। নাসির চাইবেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়ার্ধে নিজের ফর্মের পাশাপাশি দলের ফর্মটাও কামব্যাক করাতে। দলগত খেলায় তো দিনশেষে দলের জয়টাই মনে থাকে, অন্যথায় ইম্প্যাক্টফুল ইনিংসও যে হারিয়ে যায় বিস্মৃতির আড়ালে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link