More

Social Media

Light
Dark

লিজেন্ডারি লারা: ৩৭৫ রান ও ৭৬৬ মিনিট!

ক্রিস লুইসের বলটা স্কোয়ার লেগের উপর দিয়ে সোজা বাউন্ডারির বাইরে। অনন্য এক রেকর্ডের মালিক বনে গেলেন ব্রায়ান চার্লস লারা। ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে বব উইলস বজ্র কণ্ঠে বলে উঠলেন, ‘দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হোল্ডার ইজ ব্রায়ান চার্লস লারা অফ ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো।’

স্যার গ্যারি সোবার্সের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহের রেকর্ড গুড়িয়ে সেখানে নিজের নামটা লিখে ফেলেছেন লারা। মাঠের বাইরে থেকে দৌঁড়ে এসে ততক্ষণে কয়েকশো দর্শক ক্রিজে ঘিরে ফেলেছেন লারাকে। নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোরকমে লারাকে চারপাশ থেকে আঁকড়ে ধরে আছেন। ইংলিশ ফিল্ডাররা দাঁড়িয়ে থেকে দেখছিলেন সেই ঐতিহাসিক রেকর্ডের পরবর্তী চিত্র।

হঠাৎ দর্শকদের ভীড় ঠেলে মাঠে ঢুকলেন কয়েকজন অফিসিয়ালস। শ’খানেক দর্শককে কোনোমতে সরিয়ে লারার কাছে এগিয়ে গেলেন। হ্যাঁ, সবার সামনে স্যার গ্যারি সোবার্স! এইতো মিনিট দুই আগেই তাঁর রেকর্ড গুড়িয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন লারা। আর সেটা মাঠে দাঁড়িয়ে থেকেই দেখেছেন সোবার্স। ভীড় ঠেলে এগিয়ে এসেই আলিঙ্গন করলেন লারাকে। স্বদেশী এই তারকার কাছে মুকুট হারানোর আক্ষেপটা ছিল না সোবার্সের। অ্যান্টিগায় সেদিন ক্রিকেট দুনিয়া সাক্ষী হয়েছিল লারা প্রতাপের নতুন এক অধ্যায়ের।

ads

সেন্ট জোন্স মানেই যেন এক রেকর্ড বই। ক্যারিবিয়ান দ্বীপ অ্যান্টিগার ছোট্ট এক স্টেডিয়াম। দর্শক ধারণ ক্ষমতা মাত্র হাজার দশেকের মত। কিন্তু ছোট এই মাঠ সাক্ষী হয়েছে সাদা পোশাকে অনন্য কিছু রেকর্ডের। ২০০৪ সালে এই মাঠেই ৪০০ রানের সেই মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছিলেন লারা। এর দশ বছর আগে ১৯৯৪ সালে এই মাঠেই ৩৭৫ রানের আরেক ঐতিহাসিক ইনিংস খেলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের এই বরপুত্র।

লারার সেই দুই ঐতিহাসিক রেকর্ডের ম্যাচে প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। আর দুই ম্যাচেই ইংল্যান্ডের একাদশে ছিলেন গ্রাহাম থর্পি। এই ইংলিশ ব্যাটার বলেছিলেন, ‘ দুই ইনিংসের মধ্যে সবদিক বিবেচনায় ৩৭৫ রানের ইনিংসটি সেরা। ৩৭৫ রানের ইনিংসের শুরু থেকে একবারও মনে হয়নি লারা আউট হবে। ৪০০ রানের ইনিংসে অনেকটাই নড়বড়ে ছিল সে! ‘

১৬ এপ্রিল, ১৯৯৪। অ্যান্টিগার সেন্ট জোন্সে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম তিন টেস্টেই বড় ব্যবধানে জয় পায় ক্যারিবীয়রা। তবে বার্বাডোজে অ্যাঙ্গাস ফ্রেজারের বোলিং দাপট ও অ্যালেক স্টুয়ার্টের দুই সেঞ্চুরিতে বড় ব্যবধানেই জয় পায় ইংল্যান্ড। ওই জয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে ছিল ইংলিশরা। ইংলিশ অধিনায়ক মাইক আথারটন তো বলেছিলেন, ‘ ওই জয়ের কারণে অনেকের ক্যারিয়ার বেঁচে গেছে। ‘

শেষ টেস্টের আগেই লারা বড় কিছু একটা করার পণ করেছিলেন। পুরো সিরিজেই অবশ্য ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছিলেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা। অ্যান্টিগার উইকেট থেকে সচরাচর বোলাররা খুব একটা সুবিধা পাননা। ব্যাটারদের জন্য বলতে গেলে আদর্শ এক উইকেট। টসের আগেই অনুমেয় ছিল প্রথমে ব্যাটিং করা দল বড় সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। পাটা উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্যটা ছিল তাই ব্যাটিং করা। টস জিতে সেই আশার ষোলকলা পূর্ণ হলো।

তবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে যেন দিশেহারা হয়ে পড়ে ক্যারিবীয়রা। ভাবনা আর বাস্তবের এমন উল্টো চিত্রে শুরুতেই বেশামাল হয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবির। শুরুর ধাক্কার পুরোটাই এসে পড়ে ব্রায়ান লারা ও জিমি অ্যাডামসের ওপর। লারা অবশ্য এসব চাপের ধার ধারেন না। সেটার প্রমাণও দিয়েছিলেন ইতিহাসরচিত এক ইনিংস খেলে। প্রতিপক্ষকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন অবিস্মরণীয় এক ইনিংসে!

তৃতীয় উইকেট জুটিতে দু’জনে মিলে গড়লেন ১৭৯ রানের দুর্দান্ত এক জুটি। লারা তখন পঞ্চাশের গণ্ডি পেরিয়ে ধীরে ধীরে সেঞ্চুরির দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। এর মাঝে দলীয় ১৯১ রানে অ্যাডামস ৫৯ রানে ফিরলে কিথ আর্থারটনকে নিয়ে আবার প্রতিরোধ গড়েন লারা। চতুর্থ উইকেট জুটির পথে লারা তুলে নেন অসাধারণ এক সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির পর দেড়শোর মাইলফলক স্পর্শ করতে খেলেছেন মাত্র ৬০ বল!

৯ চারে ৬০ বলে করেন পরের ফিফটি। প্রথম দিনশেষে লারার অপরাজিত ১৬৪ রানে ৩ উইকেটে ২৭৪ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

দ্বিতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতগতিতেই রান তুলতে থাকেন লারা। প্রতিপক্ষের বোলাররা কোনো পাত্তাই পাচ্ছিলেন না এই ক্যারিবিয়ান তারকার সামনে। অবশ্য উইকেটেও বোলারদের জন্য কিছু নেই। নিষ্প্রাণ উইকেটে ইংলিশ বোলারদের উপর দাপট দেখাচ্ছিলেন লারা। দেড়শো থেকে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে খেললেন মাত্র ৭১ বল। প্রথম সেশনেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেন এই তারকা।

চতুর্থ উইকেটে দু’জনে মিলে যোগ করেন ১৮৩ রান। দলীয় ৩৭৪ রানে আর্থারটন ফিরলে তরুণ শিবনারায়ণ চন্দরপলকে নিয়েই বাকি পথটা পাড়ি দেন লারা। আড়াইশো পেরিয়ে দিনের একদম শেষভাগে তিনশো রানের অনন্য মাইলফলকে দাঁড়িয়ে তিনি। সেটিও পেরিয়ে গেলেন অনায়াসেই। প্রথমবার টেস্ট ক্যারিয়ারে তিনশোর দেখা! এরপর ৩২০ রানে অপরাজিত থেকে নিরাপদেই দ্বিতীয় দিনশেষে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন লারা।

এবার যেন খানিকটা দুশ্চিন্তা মনে দাগ কাটলো। টেস্ট ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে প্রয়োজন আর মাত্র ৪৬ রানের! ৩৬ বছর পর স্যার গ্যারি সোবার্সের রেকর্ডটা তখন হুমকির মুখে। তাও স্বদেশী আরেক ত্রিনিদাদের তারকাই সেই রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে।

রাতটা ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারলেন না। রেকর্ডটা ভাঙতে পারবেন তো? আর তো মাত্র অল্প পথ। সকাল হবার আগেই বিছানা ছেড়ে উঠে গেলেন লারা। বসে বসে ভাবছিলেন এই রেকর্ড গড়তে পারলে কি হবে! লারার পুরো ক্যারিয়ারটা হঠাৎ যেন চোখের সামনে ভেসে উঠলো। এর আগের বছরই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই রেকর্ডের কাছে গিয়েও ছুঁতে পারেননি তিনি। ২৭৭ রানেই ফিরতে হয়েছিল এই তারকাকে।

অবশ্য এবার তীরে গিয়ে তরী ডোবেনি। এবার আর বিষন্ন মনে তিনি ফেরেননি। অনন্য রেকর্ডে নিজের নাম লিখিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছেন।

সেদিন পুরো স্টেডিয়ান জুড়ে দর্শক ভর্তি। ছোট্ট গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা নেই। সবুজ ঘাসেও দর্শকদের বিশাল উপস্থিতি। সবার নজর স্রেফ লারার দিকে। দিনের শুরুটাও করেছিলেন বেশ দেখেশুনে। আগের দিনগুলোর মত তাড়াহুড়ো একদমই ছিল না। অ্যাঙ্গাস ফ্রেজারের টানা দুই ওভার মেইডেন দিয়েছিলেন। ইতিহাস গড়ার হাতছানিটা বার বার ক্রিজে তাঁকে আরও মনযোগী হয়ে সাহায্য করছিল। প্রথম সেশনে স্পর্শ করলেন ৩৫০ রানের মাইলফলক। এবার ইতিহাস গড়তে প্রয়োজন মাত্র ১৬ রানের!

মাঠেই উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং গ্যারি সোবার্স! তিনি নিজেও হয়তো আন্দাজ করেছিলেন লারা সেদিন ইতিহাস সৃষ্টি করবে।

ধীরে ধীরে লারার রান যতই এগোচ্ছে টিভির পর্দায় ভেসে উঠছিল সোবার্সের ছবি। ব্যক্তিগত ৩৬১ রান থেকে কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ছুঁয়ে ফেললেন সোবার্সের রেকর্ড। টেস্ট ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়তে প্রয়োজন মাত্র এক রানের! পুরো সেন্ট জোন্সে দর্শকদের উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়। রেকর্ড গড়ার খানিক আগেই এক দর্শকের হাতে দেখা মিললো, ‘রেকর্ড ব্রেকিং টাইম’ – লেখা এক প্ল্যাকার্ড। লারার প্রতি দর্শকদের আস্থা-ভরসা সবটাই ছিল তিনি পারবেন।

পরের ওভারে ক্রিস লুইসের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদল করলেন চন্দরপল। লারা স্ট্রাইকে যেতেই দর্শকদের চিৎকার-উল্লাস। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ! ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে লারা। ইনার সার্কেলের ভিতরেই বেশিরভাগ ফিল্ডারকে নিয়ে আসলেন লুইস। বাউন্ডারির বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সোবার্স। হয়তো সেকেন্ড মিনিট খানেকের ব্যবধানে তাঁর রেকর্ডটা চূর্ণ হতে যাচ্ছে লারার ব্যাট নামক তরবারিতে।

পরের বলটা শর্ট বাউন্স দিলেন লুইস। সেটি লেগ সাইডে সজোরে পুল করতেই কাউ কর্নার দিয়ে বল সীমানার বাইরে! বল বাউন্ডারি পার হবার আগেই বাউন্ডারির বেড়া টপকে মাঠে ছুঁটে এসেছেন সমর্থকরা। দর্শক-সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস। খানিক বাদেই দৃপ্ত পায়ে হেঁটে ভীড় ঠেলে লারাকে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানালেন গ্যারি সোবার্স।

৩৬ বছর আগে ঠিক যেভাবে ১৯৫৮ সালে ৩৬৫ রান করার পথে প্রায় একই জায়গা দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে লেন হাটনের ৩৬৪ রানের রেকর্ড গুড়িয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন সোবার্স। ঠিক একই ভাবে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সোবার্সের রেকর্ড দুমড়ে মুচড়ে ফেলেন ব্রায়ান লারা।

এরপর উইকেটে হাঁটু গেড়ে চুমু খেলেন লারা। এক ঐতিহাসিক ইনিংসের পথে ৩৬ বছরের রেকর্ড ভেঙে টেস্ট ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি। দর্শকদের মাঠে প্রবেশের পর বেশ কিছু সময় বন্ধ ছিল খেলা। অবশ্য লারার ইনিংসে সেদিন দর্শক বনে গিয়েছিলেন ইংলিশ ফিল্ডাররাও। লারা রেকর্ড স্পর্শ করলে যেন তারাও বেঁচে যান। প্রায় আড়াই দিন বোলিং করার পর ইংলিশ বোলারদের অবস্থাও বেগতিক।

লারা তখন ৩৭৫ রানে অপরাজিত। লাঞ্চ বিরতির আগে এক ওভার বাকি। লারার সামনে হাতছানি ছিল প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে চারশো রানের মাইলফলক স্পর্শের। ইনিংস ঘোষণার জন্য আপাতত সেটির অপেক্ষা। তবে সেটা হয়নি। অ্যান্ডি ক্যাডিকের অফ স্টাম্পের বাইরের দ্বিতীয় বলটা কভারের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়লেন জ্যাক রাসেলের হাতে।

৭৬৬ মিনিট। ৪৫ চার। ৫৩৮ বল। ৩৭৫ রান।

ইতিহাস গড়া ইনিংস শেষে বীরের বেশে মাঠ ছাড়ছেন লারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজও নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে ৫৯৩ রানে! মাঠ ছাড়ার সময় সতীর্থরা ব্যাট উঁচিয়ে অভিবাদন জানিয়ে সেই ঐতিহাসিক ইনিংসটি স্মরণীয় করে রাখেন।

ম্যাচ পরবর্তী এক সাক্ষাৎকারে লারা বলেন, ‘অ্যান্টিগায় ৩৭৫ রানের ইনিংসে উইকেট ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ। আমি জানতাম, যদি আমরা টস জিতি তাহলে আমরা বড় স্কোর গড়তে পারবো। আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরির ভাবনাটা আমরা মাথায় তখনই আসে। প্রথম দিন শেষে যখন ১৬৪ রানে অপরাজিত ছিলাম, তখন মনে হলো এটা আরও বড় হতে পারে। এমনকি বিশ্ব রেকর্ডও হতে পারে।’

ক্রিকেট পাড়ার সবচেয়ে বড় তারকার একজন। নামের পাশে কিংবদন্তি শব্দটা লারার সাথেই মানায়। সাদা পোশাকে তাঁর ব্যাটিংটা ছিল চোখের শান্তি। ড্রাইভ, কভার ড্রাইভ, সুইপ শট ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন লিফটেড শটে টেস্ট ক্রিকেটে যোগ করেছিলেন ভিন্ন মাত্রা। ২২ গজকে নিজের সাম্রাজ্য বানিয়ে শাসন করেছেন বছরের পর বছর। গড়েছেন রানের পাহাড়।

লারার ব্যক্তিগত সংগ্রহ লিখার জন্য ‘স্কোরশিট’ বড্ড ছোটই মনে হত। স্কোরশিটে লারার রান লিখতে রীতিমতো ঝামেলায়ও পড়তে হত স্কোরারকে। ওয়ারউইকশায়ারের স্কোরার অ্যালেক্স ডেভিস বলেন, ‘৩৭৫ রানের ম্যাচে সৌভাগ্যক্রমে লারার আগের দুই ব্যাটসম্যান ফিল সিমন্স ও স্টুয়ার্ট উইলিয়ামস আউট হয়ে গেছে ৮ ও ৩ রানে। স্কোরশিটে ওদের জায়গাগুলোও লারার জন্য কাজে লাগিয়েছি! কিন্তু ৫০১ রানের ম্যাচে অন্যরাও রান করছিল, তাই জায়গা খুঁজে বের করতে হয়েছে!’

৩৭৫ রানের ইনিংসটার বেশ কিছুসময় পরে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক মাইক আথারটন বলেছিলেন, ‘লারার ৬০ রানের সময়ই ফিল টাফনেল আথারটনকে গিয়ে বলেছিলেন, লারা যেভাবে খেলছে তাতে সোবার্সের ৩৬৫ রানের রেকর্ড না ভেঙে দেয়!’

ওই ঐতিহাসিক ইনিংসের প্রায় মাস দেড়েক বাদেই জুনের প্রথম সপ্তাহে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০১ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন লারা। ইতিহাসে প্রথম পাঁচশো রানের ইনিংস খেলে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়!

রেকর্ড আর লারা দুটো শব্দই যেন একসূত্রে গাঁথা। সাদা পোশাকে নিজেকে সফলতার এমন উচ্চতায় রেখে গেছেন সেখানে কেউ পৌঁছাতে পারবে কিনা সে নিয়েও আছে সংশয়। হ্যাঁ, রেকর্ড গড়ে আবার ভাঙা হয়। তবে অনন্য সব রেকর্ডে ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় আজীবন শিরোনাম হয়ে থাকবেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি তারকা ব্রায়ান চার্লস লারা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link