More

Social Media

Light
Dark

এশিয়া কাপের সেরা একাদশ

শুরুতেই আফগানিস্তানের কাছে হার। দেশের দৈন্যদশায় মাঠের ক্রিকেটেও যেন শ্রীলঙ্কার একই চিত্র ফুঁটে উঠল। এরপর সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শ্রীলঙ্কা যা করে দেখাল তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। পরের চার ম্যাচে চারটিতেই জয়। এরপর খেতাবি লড়াইয়ে বাবর আজমদের পরাস্ত করে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসলো শ্রীলঙ্কা। আর পাকিস্তানের জন্য এশিয়া কাপের শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধারের অপেক্ষাটা আরো দীর্ঘ হলো।  

এশিয়া কাপ শেষ। পারফরম্যান্সের বিচারে এই আসর থেকে যদি একটা একাদশ করা যায় তাহলে কেমন হয়? খেলা-৭১ নির্বাচিত এশিয়া কাপের সেরা একাদশে চ্যাম্পিয়ন দল শ্রীলঙ্কা থেকে আছেন সর্বোচ্চ পাঁচজন ক্রিকেটার। ভারত থেকে তিনজন, পাকিস্তান থেকে দ্বাদশ ব্যক্তি-সহ মোট তিনজন আছেন। আর একজন আছেন আফগানিস্তান থেকে।

  • রহমানুল্লাহ গুরবাজ (আফগানিস্তান): উইকেটরক্ষক

ইনিসের শুরু করবেন আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ। পাঁচ ম্যাচে ১৫২ রান তিনি করেছেন ১৬০-এর ওপর স্ট্রাইক রেট নিয়ে। সর্বোচ্চ ইনিংস ৮৪ রানের। এখানে অবশ্য মোহাম্মদ রিজওয়ানও আসতে পারতেন।

ads

কারন পুরো আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। ৫৬.২০ গড়ে করেছেন ২৮১ রান। এর মধ্যে ছিল ৩ টা পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। তবে ফাইনাল ম্যাচে তাঁর ব্যাটিং এপ্রোচ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেক প্রশ্ন। অবশ্য টুর্নামেন্ট জুড়েই ‘অ্যাংকর’ রোল প্লে করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। দলকে এটা অনেক ক্ষেত্রে বিপদেও ফেলেছে। ১১৭ স্ট্রাইক রেটই সেটা প্রমাণ করে। 

  • কুশাল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা): উইকেটরক্ষক

ফাইনাল ম্যাচে কুশাল মেন্ডিস রান পাননি। কিন্তু সুপার ফোরে ওঠার ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৬০ রানের কার্যকরি ইনিংস । এরপর সুপার ফোরে ৩৬ ও ৫৬ রানের আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। যা শ্রীলঙ্কাকে ফাইনালে উঠতে ভূমিকা রেখেছিল। এজন্য এশিয়ার সেরা একাদশে ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের পরে উইজডেনের প্রথম পছন্দ কুশাল মেন্ডিস। 

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

এবারের এশিয়া কাপে তিনে খেলা ব্যাটারদের মধ্যে অবধারিতভাবেই বিরাট কোহলির নাম উঠে আসবে। পুরো টুর্নামেন্টেই দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন তিনি। ৯২ গড় আর প্রায় ১৪৮ স্ট্রাইক রেট রেখে রান করেছেন ২৭৬।

এর মাঝে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তুলে নিয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি। আর এ সেঞ্চুরি দিয়েই ১০২০ দিন পর আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির মুখ দেখেন তিনি। যদিও দলীয় ব্যর্থতা ঢাকতে পারেনি তাঁর এ ব্যক্তিগত অর্জন। 

  • সুরিয়াকুমার যাদব (ভারত)

পুরো টুর্নামেন্টে রান করেছেন ১৩৯। তবে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ভারতের দলে ৪ নম্বরে ভালই ব্যাটিং করেছেন সুরিয়াকুমার যাদব। হংকংয়ের বিপক্ষে টপ অর্ডাররা যেখানে স্ট্রাগল করছিল সেখানে সুরিয়াকুমার যাদব ছিলেন ব্যতিক্রম। ২৬ বলে খেলেছিলেন ৬৮ রানের ইনিংস। আর ঐ ইনিংসের কারণেই ভারত বড় সংগ্রহের মুখ দেখে।

  •  ভানুকা রাজাপাকশে (শ্রীলঙ্কা)

ফাইনাল ম্যাচ জয়ের নায়ক। শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ডকে  ৫৮-৫ থেকে ১৭০-৬ এ নিয়ে যাওয়ার কারিগর তিনিই। ৪৫ বলে তাঁর করা ৭১ রানের ইনিংসেই লড়াই করার মতো পুঁজি পায় লঙ্কানরা। এ ছাড়া পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই খেলে গিয়েছেন ফিয়ারলেস ক্রিকেট। সব মিলিয়ে রান করেছেন ১৯১। শীর্ষ ৫ রান সংগ্রাহক ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট তারই, ১৪৯.২১। 

  • ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)

এবার এশিয়া কাপের টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার। হবেন নাই বা কেন? পুরো টুর্নামেন্টে ৯ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রান করেছেন ৬৬। ফাইনাল ম্যাচে তাঁর করা ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংসটির গুরুত্ব ছিল অনেক। একই সাথে ম্যাচের এক ওভারেই রিজওয়ান, আসিফ আলীদের ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচ জয়ের সুবাস এনে দেওয়ার ত্রাণকর্তাও ছিলেন তিনি। তাই এশিয়া কাপের সেরা একাদশে তাঁর জায়গাটা এক প্রকার বরাদ্দই ছিল। 

  • দাসুন শানাকা (শ্রীলঙ্কা): অধিনায়ক

এশিয়া কাপের সেরা অধিনায়ক তিনি। ফলে, এই একাদশে তাঁর জায়গা অবধারিত। ছয় ম্যাচে তিনি ১১১ রান করেছেন, একটা হাফ সেঞ্চুরি-সহ। স্ট্রাইক রেট প্রায় ১৪০। এছাড়া নিয়েছেন দু’টি উইকেট। দক্ষ নাবিক হয়ে শ্রীলঙ্কা দলকে এক-সুতোয় গেঁথে শিরোপা জয়ের বন্দরে নিয়ে গিয়েছেন লংকান তরী।

  • শাদাব খান (পাকিস্তান)

পুরো টুর্নামেন্টে ৮ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রান করেছেন ৫৪। হংকংকে ৩৮ রানে অলআউট করার পেছনে সবচেয়ে বড় কৃতিত্বটা শাদাব খানেরই প্রাপ্য। ৮ রানেই নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। এ ছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার পর ২৬ বলে ৩৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। হয়েছিলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।  

  • ভূবনেশ্বর কুমার

১১ টি উইকেট নিয়ে এবারের এশিয়া কাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলার তিনি। শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪ রান খরচ করে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। যেটি আবার তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। নতুন বলে সুইং দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের জন্য পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ছিলেন ত্রাস। 

  • নাসিম শাহ (পাকিস্তান)

এই এশিয়া কাপ দিয়েই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দারুণ এক পেসার পেয়েছে পাকিস্তান। পুরো আসরে বল হাতে নিয়েছেন ৭ উইকেট। তবে চমকটা দেখিয়েছেন ব্যাটেও। সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ৬ বলে ১১ রানের সমীকরণে তিনি প্রথম ২ বলেই মারেন ২ ছক্কা। আর এতেই লাহোর থেকে করাচি, পুরো দেশকে ফাইনালে ওঠার আনন্দে ভাসান তিনি। 

  • দিলশান মাদুশানকা (শ্রীলঙ্কা)

ফাইনাল ম্যাচের প্রেশারেই কিনা, বল শুরুর আগেই তিনি দিয়ে ফেলেন ৯ রান। তবে নিজেকে ঠিকই সামলে পরে ফিরে আসেন। পরের ২ ওভারে দেন ১২ রান। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন। তবে সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২ উইকেট এবং ভারতের বিপক্ষে ৩ উইকেট শ্রীলঙ্কার ফাইনালে যাওয়ার পথে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

  • দ্বাদশ ব্যক্তি: মোহাম্মদ নওয়াজ (পাকিস্তান)

পুরো এশিয়া কাপে ৮ উইকেট সাথে ব্যাট হাতে ৭৯ রান। তবে সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ে তার ৪২ রানের ইনিংসটির অবদান ছিল অনেক।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link