More

Social Media

Light
Dark

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪, বাংলাদেশের প্রস্তুতির ঘাটতিতে আসবে দুর্গতি

‘আমাদের প্রস্তুতি আমরা বেশি নিতে পারিনি।’ এমন একটি বাক্য কিছুদিন আগেই উচ্চারণ করেছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ। টেস্ট সিরিজের আগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে না পারায় ভরাডুবি হয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ঠিক এমন এক বাক্য হয়ত শোনা যাবে আবারও মাস দু’য়েক বাদে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ের কোন এক সময়ে এমন বাক্যই হয়ত শোনা যাবে অন্যকোন এক খেলোয়াড়ের মুখ থেকে। কারণ হচ্ছে, সত্যিকার অর্থেই কি বাংলাদেশ যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারবে কি-না তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অবশ্য খেলবে বাংলাদেশ দল।

পাঁচটি খেলবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, তিনটি খেলবে বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে। আটটি ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচটি  ম্যাচ খেলবে ঘরের মাঠে, চেনা কন্ডিশনে। প্রতিপক্ষও বহুদিনের চেনা। এমন এক প্রতিপক্ষ ঠিক কতটুকু চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবে বাংলাদেশকে সে প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়।

ads

অন্যদিকে একেবারে অচেনা কন্ডিশন যুক্তরাষ্ট্রের। দলটা সম্পর্কেও ধারণা রয়েছে সামান্যই। তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখনও নিয়ম করে বড় দলগুলোকে মোকাবেলা করেনি যুক্তরাষ্ট্র। অতএব তাদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে নিশ্চিতভাবেই। সেদিক থাকে তারাও যে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জা জানাতে হবে ব্যর্থ- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

তাইতো একেবারে স্বল্প প্রস্তুতি নিয়ে আবারও মাঠে নামতে হবে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। যদিও এর থেকে আর ভাল কোন বিকল্প বাংলাদেশের কাছে এখন আর অবশিষ্ট নেই। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের জন্যে প্রায় প্রতিটা দলের খেলোয়াড়ই ব্যস্ত। আর আইপিএল উইন্ডো-তে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন থেকে বিরত অধিকাংশ ক্রিকেট বোর্ড। সেদিক থেকে শুধু ব্যতিক্রম পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের সাথে একটি সিরিজ আয়োজন প্রস্তুতির ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্যে হতে পারত যথেষ্ট। তবে পাকিস্তান যে বেজায় ব্যস্ত। প্রথমে তারা সিরিজ খেলবে নিউজিল্যান্ডের সাথে। এরপর আয়ারল্যান্ডের সাথে। তারপর বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও সিরিজ খেলবে তারা। অন্তত তাদের প্রস্তুতির ঘাটতি থাকবে না তা বলাই যায়।

এমনকি আফগানিস্তানের অধিকাংশ খেলোয়াড়ও আইপিএল খেলায় ব্যস্ত। আইপিএলও যে প্রস্তুতির অন্যতম সেরা একটা মঞ্চ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তামাম দুনিয়ার সেরা ক্রিকেটারদের মিলন মেলাতে পারফরমেন্সের চাপ থাকে। সে সাথে বিচিত্র সব পরিস্থিত সামাল দেওয়ার দীক্ষাটাও মেলে। সেদিক থেকে বাকি থাকা দলগুলোর প্রস্তুতি যথাযথই হবে বল ধারণা করা যায়।

সেসব বিবেচনায় বাংলাদেশ. প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও পিছিয়ে যাচ্ছে। এর সহজ সমাধানরুপে হাজির হতে পারত ঘরোয়া কোন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সেখানে হয়ত প্রতিযোগিতার মাত্রা আকাশচুম্বি হতো না। তবে বিরুপ পরিস্থিতিতে নিজেদেরকে সামলে নিয়ে জয়ের অন্বেষণ করবার একটা প্রস্তুতি হলেও হতে পারত। তবে সে পরিকল্পনা আগেভাগেই নিতে হতো। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দূরদর্শিতার অভাবটা স্পষ্ট হয় যেন আবারও।

কোন এক বৈশ্বিক আসরের ঠিক আগ মুহূর্তে সেই ফরম্যাটের একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করাই যেতে পারে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি। কেননা বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো-তে এক বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ছাড়া আর কোন টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট নেই। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগারদের উন্নতির পথে সেটাও একটা ধাক্কা।

তাছাড়া এই উইন্ডো-তে এফটিপি অনুযায়ী বাংলাদেশের তেমন কোন সিরিজ ছিল না। তবুও দু’টো সিরিজ আয়োজন করতে পেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু প্রতিপক্ষের মান নিশ্চিতরুপেই প্রশ্ন তোলার মত। এখন দেখার পালা, শেষ অবধি এই আট ম্যাচে বাংলাদেশ নিজেদের সেরা ১৫ জনকে খুঁজে নিতে পারে কি-না। পাশাপাশি এই আট ম্যাচ প্রস্তুতির জন্যে যথেষ্ট হবে কি-না তা হয়ত সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link