More

Social Media

Light
Dark

আক্রমণেই জয়ের আশা বাংলাদেশের

মালদ্বীপে বসবাস করা লক্ষাধিক বাংলাদেশিদের জন্য আনন্দের বড় একটা উপলক্ষ্য নিয়ে এসেছে এবারের সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ। জাতীয় দলের খেলা দেখার জন্য যেন নাওয়া খাওয়া ভুলে চেষ্টা করছেন। প্রথম দু’ম্যাচে সবকিছু ঠিকঠাক চললেও মালদ্বীপ ম্যাচ থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে।

হাজারেরও কম সমর্থক সেই ম্যাচের টিকিট পাওয়ার পর আজকে নেপাল ম্যাচে সেই সংখ্যাটা কিছুটা বেড়েছে। দুই হাজারেরও বেশি দর্শক মাঠে বসে লাল সবুজ দলের লড়াই দেখার অপেক্ষা অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাকিদের কি হবে, তারা যে ভোর রাত থেকে লাইনে দাড়িয়ে পায়নি কাঙ্খিত টিকিটের দেখা। এই অবস্থার মধ্যে আজকে নেপালের বিপক্ষে বাচাঁ-মরার ম্যাচে মুখোমুখি হবার অপেক্ষায় বাংলাদেশ দল।

স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতার কারণে এই ম্যাচে কে গোল করবে এটা যেমন আলোচনার বিষয় হয়ে দাড়িয়ে পাশাপাশি আক্রমনাত্বক ফুটবলটা থাকছে। কোচ অস্কার ব্রুজোন পরিস্কারভাবে শীষ্যদের বুঝিয়ে দিয়েছেন আজকের ম্যাচে কার কি দায়িত্ব। সাফে এখন পর্যন্ত কোন গোল করতে না পারা স্ট্রাইকারদের নিয়ে তার পরিকল্পনার শেষ নেই। পারলে যেন চারজন ষ্ট্রাইকার খেলাতে পারেন, সেই চেষ্টা ছিল। তবে সেটি যে সম্ভব নয়, সেটাও অবস্থাদৃষ্টিতে বোঝা গেছে।

ads

তবে আক্রমনাত্বক ফুটবলই যে জয়ের মন্ত্র সেটা আজকের ম্যাচ থেকে আর বোঝার বাকি নেই। যদি বলা হয় বাংলাদেশ ’অল এটাক ফরমেশনে’ খেলতে তাহলে বাড়িয়ে বলা হবেনা। মালদ্বীপের বিপক্ষে পরাজয়ে যে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল দল সেখান থেকে মুক্তি পেতে অনেকভাবেই শীষ্যদের নিয়ে কাজ করেছে কোচ। খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেবার পাশাপাশি নেপাল ম্যাচের জন্য না পরিকল্পনাও করেছেন।

মিডিয়ায় নিজেরা নয়, নেপালই চাপে আছেন বলে কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করেছেন। গতকাল সর্বশেষ অনুশীলনে আক্রমণাত্মক কৌশলে দলকে খেলিয়েছেন ব্রুজোন। শুরুতে ৪-৪-২ ছক থেকে আবার ৩-৪-৩ ছকে জামাল ভূঁইয়া-মোহাম্মদ সাদ উদ্দিন-মোহাম্মদ ইব্রাহিমদের অনুশীলন করান কোচ। অর্থাৎ আক্রমণে প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে একই সঙ্গে তিন ফুটবলারকে রাখতে চাইছেন ব্রুজোন।

জেমি ডে’র জমানায় রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলার কারণে আক্রমনাত্বক ধারাটা উপেক্ষিত ছিল। অন্তবরর্তীকালীন কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এই স্প্যানিশ সেই কৌশল বদলে আক্রমণাত্মক ভিন্ন ছকে দল সাজান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয়ের পর ভারতের সঙ্গে ড্র ম্যাচেও ১০ জন নিয়ে অলআউট ফুটবল খেলেছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে মালদ্বীপের বিপক্ষে দুই গোলে হারা ম্যাচে খুঁজে না পাওয়া যাওয়ান বাংলাদেশ দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন।

বিশ্বনাথ ঘোষ ও রাকিব হোসেন না থাকাটা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে লড়াই করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। আজ নেপালের বিপক্ষে এ দুই ফুটবলার দলে ফেরায় নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের শক্তিও বেড়েছে। কোচ ব্রুজোন জামালদের দিকে আঙুল তুলে পরিস্কারভাবে বলেছেন, তিনি কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাননা।

শীষ্যদের অনেকটা পরিস্কারভাবে বলেছেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কোনো কথা শুনতে চাইনা। কার কী ক্লান্তি আছে তা নিয়ে ভাববার সময় নেই। শীষ্যদের বোঝাতে চেয়েছি, মালদ্বীপ ম্যাচটা ছিল একটা দুর্ঘটনা। এই দুর্ঘটনার পুরাবৃত্তি করতে চাই না।’

নেপাল ম্যাচ নিয়ে বেশ সিরিয়র ব্রুজোন বলেন, ‘নেপাল বেশ শক্তিশালী দল। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে হারিয়ে তারা সেটি বুঝিয়েছে। এখন আমরা ফেভারিট, তাই ফাইনাল ম্যাচ পর্যন্ত বেঁচে থাকতে জিততে চাই।’

এদিকে অধিনায়ক জামাল ভুইয়া, একশ ভাগের বেশি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন বলে ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। নেপালকে মোকাবেলা করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি নেপাল বেশ শক্তিশালী দল। তবে আমাদের দলে রয়েছে লিগের সব সেরা ফুটবলার। আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়ে নেবার চেষ্টা করছি। আমি আমাদের খেলোয়াড়দের জানি যে, তারা একশ ভাগের বেশি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি গোল নিয়ে অনেক কথাই হয়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে মাঠে ১১ জন খেলোয়াড় খেলছে।’

গোল নিয়ে মিডিয়ার উপর দায় চাপিয়ে জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, ‘ম্যাচে যে কেউ গোল করতে পারেন। সেটি সুযোগ পেলে তাকে অনুমতি নিতে হবে না, দেবার প্রয়োজনও নেই। মিডিয়া অনেক সময় অনেক কিছু বাড়িয়ে বলে থাকে। যাতে খেলোয়াড়রা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।’

এদিকে ২০১৮ সাফে বাংলাদেশের যেখানে ড্র করলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত ছিল সেখানে ২-০ গোলে পরাজিত হয়ে স্বাগতিক দর্শকদের চরমভাবে হতাশ করে তারা। আজকের ম্যাচ জিতে সেই হারের বদলা নিতে চান তপু বর্মন, জামাল ভুইয়ারা। আজকের ম্যাচে পরিবর্তন আসতে পারে রক্ষণ ও আক্রমণভাগে।

ফরমেশন নিয়ে আরেকটা ভাবনাও রয়েছে। নিয়ম করে ৪-১-৪-১ ফরমেশনের বদলে ৪-৪-২ ফরমেশনে খেলতে গেলে দুই স্ট্রাইকার মাঠে নামাতে হবে। সব মিলিয়েই নতুন এক একাদশ দেখা যাবে বাংলাদেশের শেষ এই লিগ ম্যাচে। সবকিছু মিলিয়ে গোল কে করল সেটা নিয়ে না ভেবে জয়ে চোঁখ রাখছে বাংলাদেশ দল। কঠিন সেই পথে কতটা সফলতা পায় সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link