More

Social Media

Light
Dark

৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ আর্জেন্টিনার

৩৬ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা। ২০১৪ সালে ফিরতে হয়েছে হাতছোয়া দুরুত্ব থেকে।কিন্তু এবার বোধহয় বিধাতাও চাননি এই গ্রহের সবচেয়ে বড় ফুটবল প্রতিভাকে আরো একবার চোখের জলে দেখতে। শ্বাসরুদ্ধকর এক ফাইনাল মঞ্চায়িত হলো লুসাইল স্টেডিয়ামের মঞ্চে।

বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে নিজেদের ৩৬ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ করে গ্রহের সবচেয়ে বড় ফুটবল তারকার হাতে তার সেই আরাধ্য শিরোপা তুলে দিলো আর্জেন্টিনা। ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে এর আগে কোনো দলই বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতেনি। এবারও সেই ইতিহাসই টিকে রইল।

লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনালের শুরু থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ আলবিসেলেস্তেদের হাতে। ফ্রান্সের একের পর ভুল পাসের সুযোগ নিয়ে খেলা গুছিয়ে উঠতে থাকে। একের পর আক্রমণে ফরাসি রক্ষনকে ব্যাতিব্যস্ত রাখে মেসি, ডি মারিয়ারা।

ads

ম্যাচের ২৩ তম মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে অসাধারণ ক্ষিপ্রতায় ডিবক্সে ঢুকে পড়েন ডি মারিয়া। ডি মারিয়াকে ঠেকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন ওসমান ডেম্বেলে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে গোল করতে কোনো ভুল করেননি মেসি।

এবারের বিশ্বকাপে নিজের ষষ্ঠ গোল পেলেন ক্ষুদে জাদুকর। বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে গ্রুপপর্বের সবগুলো ম্যাচের পর, রাউন্ড অফ সিক্সটিন, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল আর ফাইনালেও গোল পেলেন মেসি।

লিড নিয়ে আরো ভয়ংকর মেসি, আলভারেজরা। ৩৬ তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে লিড দ্বিগুণ করে আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসির দুর্দান্ত পাস থেকে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। দারুণ বিল্ডআপ প্লে থেকে গোল করেন এঞ্জেল ডি মারিয়া। কোপা আমেরিকা ফাইনালের পর এবার বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করে আর্জেন্টিনার নায়ক ডি মারিয়া।

বিশ্বকাপ শিরোপার পথে এক পা এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা বিরতির পর খেলা কিছুটা গুছিয়ে ওঠে ফ্রান্স। কিন্তু তেমন বড় কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। কিন্তু খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিলো আর্জেন্টিনার হাতেই। ফ্রান্সের পোস্টার বয় কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিষ্প্রভই দেখা যাচ্ছিলো পুরো ফাইনাল জুড়ে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে প্রথমবার কিছুটা ঝলক দেখান এমবাপ্পে। কিন্তু ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান এমবাপ্পের।

এর ১ মিনিট পরেই সেই ম্যাজিক মোমেন্ট। পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভ এমবাপ্পের ম্যাজিক। অসাধারণ হাফ ভলি থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিং এ ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান কিলিয়ান এমবাপ্পে। ৯১ সেকেন্ডের ব্যাবধানে দুই গোল করে এমবাপ্পে দেখালেন তাকে কেন মেসি-রোনালদো পরবর্তী ফুটবল বিশ্বে কেন তাকেই রাজা ধরা হয়।

এবারের বিশ্বকাপে নিজের সপ্তম গোল করলেন এই পিএসজি তারকা। এরপর একের আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। কিন্তু একের পর এক আক্রমণ ব্যর্থ হয় প্রতিপক্ষ রক্ষণে। নির্ধারিত সময়ের যোগ করা সময়ে ডিবক্সের বাইরে থেক মেসি দুর্দান্ত শট অসাধারণ দক্ষতায় ফেরান হুগো লরিস। ২-২ সমতায় শেষ হয় ৯০ মিনিটের খেলা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

ম্যাচের ১১০ মিনিটে সেই জাদুকরের জাদুর ছোঁয়া।লিওনেল মেসি গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিলেন ৩-২ গোলে। বিশ্বকাপ জয়ের পথে আরো একধাপ এগিয়ে দিলেন আলবিসেলেস্তেদের।

কিন্তু রোমাঞ্চ আরো কিছুটা জমে ছিলো। ম্যাচের ১১৭ মিনিটে মন্টিয়েল এর হ্যান্ডবল থেকে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে নিজের হ্যাট্রিক পূরণ করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বিশ্বকাপ ফাইনালে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাট্রিক করে খেলায় আনেন ৩-৩ গোলের সমতা।

খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এমবাপ্পে আর মেসি নিজেদের দলের গোল করলেও ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় শট মিস করেন কোমেন। শেষ পর্যন্ত ৪-২ গোলে টাইব্রেকারে জিতে ৩য় বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে আলবিসেলেস্তেরা।

শেষ পর্যন্ত সোনালি ট্রফি টা পেলো ফুটবল জাদুকরের ছোঁয়া। ক্যারিয়ারের পূর্ণতা দিলেন গ্রহের সেরা ফুটবলার মেসি। ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জিতলো আর্জেন্টিনা। পূর্ণতা পেল বিশ্বকাপও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link