More

Social Media

Light
Dark

রক্ষনাত্মক আর্জেন্টিনার একজন পাপু

ম্যাচ শুরুর আগেই হঠাৎ করে গুজন ওঠে মিডিয়ায়-এই ম্যাচে নাকি রেস্ট দেওয়া হতে পারে লিওনেল মেসিকে।

আগের দুই ম্যাচ থেকে চার পয়েন্ট নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচে অধিনায়ককে বেঞ্চ থেকেই শুরু করাতে চান কোচ লিওনেল স্কালোনি। তার জায়গায় ঝালিয়ে দেখতে চান গত দুই মৌসুম ধরে ফর্মের তুঙ্গে থাকা পাপু গোমেজকে। কিন্তু মাঠে নামতে না নামতেই দেখা গেল, দুজনেই এক সাথে শুরুর একাদশে। দু জনই কিছু কীর্তিও করেছেন।

পাপুর গোলে আর্জেন্টিনা জিতেছে। আর অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরেই রেকর্ড গড়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনার জার্সিতে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। আজকের আগে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছিল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হাভিয়ের মাশ্চেরানোর। আজকে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে নেমে ১৪৭ ম্যাচ খেলার রেকর্ডে ভাগ বসালেন মেসি।

ads

আর সেই সাথে ১-০ গোলের জয়ে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা। ৩ ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে মোট ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষস্থানে তারা। তবে ম্যাচের চেয়েও অবাক করেছে আর্জেন্টিনার খেলার ধরণ।

দক্ষিণ আমেরিকার দল হিসেবে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের ফুটবল পুরোটাই নির্ভর করে আক্রমণের উপর। তাদের খেলা সাজানোই হয় গোলের হিসেব করে। গোল দিবে, সেই অনুযায়ী গোল হজমও করবে। ডিফেন্সিভ ফুটবল কখনোই দেখা যায়নি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবলে। কিন্তু স্কালোনি যেন উল্টো পথে হাটছেন আর্জেন্টিনার দুটবল নিয়ে। আক্রমণভাগ নিয়ে আর্জেন্টিনার হা-হুতাশের শেষ নেই। স্কালোনি তাই নজর দিয়েছেন ডিফেন্সে, কাজেও দিয়েছে তা।

নিজের হাতের সকল খেলোয়াড়কে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখার ব্যাপারে বেশ দক্ষ তিনি। যে কারণে উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে ৬টি পরিবর্তন এনেছিলেন এই ম্যাচে। ডিফেন্সে অভিজ্ঞতার বদলে আনেন তারুণ্য; আর আক্রমণে তারুণ্যের বদলে অভিজ্ঞতা। আগুয়েরো-মেসি-ডি মারিয়া ত্রয়ীর দেখা মিলল বহুদিন পরে।

ফলাফল মিলল ১০ মিনিটের মাথাতেই। অভিষেকেই ম্যাচেই গোল আদায় করে নেন পাপু গোমেজ। সেভিয়া তারকার গোলটা ছিল দেখার মত। মাঝমাঠ থেকে ডি মারিয়াকে আড়াআড়ি পাস বাড়ান মেসি। সেখান থেকে দুর্দান্ত এক পাস থেকে দূর্দান্ত এক ফিনিশিং উপহার দেন পাপু গোমেজ। অভিষেকটা গোল দিয়েই স্মরণীয় করে রাখেন ৩৩ বছর বয়সী উইঙ্গার।

যদিও প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে এসে প্যারাগুয়ের জালে আরও একবার বল পাঠায় আর্জেন্টিনা। সে গোলটিও করেন পাপু গোমেজ। কিন্তু অফসাইডের কারণে সে গোল বাতিল করে দেন রেফারি। যদিও তা কতটা অফসাইড ছিল সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সে সময়েই।

দ্বিতীয়ার্ধে আর প্রথমার্ধের মতন খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। মুহুর্মুহু আক্রমণ করলেও দিনশেষে ডিফেন্স ভাঙ্গতে পারেনি প্যারাগুয়ে। বরং কড়া মার্কিং করে রেখে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের। যে কারণে চাইলেও খেলা বার করতে পারেনি তারা। আর সে জায়গাতেই নিজের ট্যাক্টিস কাজে লাগায় আর্জেন্টিনা।

প্রথমেই বলেছি, স্কালোনি আগের মতন আক্রমণাত্বক মনোভাব নিয়ে বসে নেই। বরং তারা খেলা নিয়ে গিয়েছেন নিচে, ডিফেন্স শক্ত রেখে খেলা এগিয়ে রেখেছেন। যে কারণে দ্বিতীয়ার্ধে হাতে গুনে আক্রমণ করেছেন তারা। যে কারণে প্যারাগুয়ে আক্রমণের পর আক্রমণ করে গেলেও ডিফেন্স ব্রেক করতে পারেনি। এমনকি ইমিলিয়ানো মার্টিনেজ গোলবারের নিচেও বেশ সলিড। সব মিলিয়ে নিজেদের আক্রমণাত্বক ফুটবল থেকে ডিফেন্সিভ ফুটবলে ব্যাক করা নিজেদের জন্যই ভালো হয়েছে। দীর্ঘ ছয় বছর পর প্যারাগুয়ের বিপক্ষে জয়টাই তার প্রমাণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link