More

Social Media

Light
Dark

মঞ্জুরুলের পর নাহিদ, অভিষেক টেস্টে পেসারদের সাফল্য

একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি। আচ্ছা বলুন তো, বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট অভিষেকে কোন পেসার সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন? না চট করে এই প্রশ্নের উত্তর আপনি দিতে পারবেন না। অন্তত একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে যাদের জন্ম, তাদের না পারার সম্ভাবনা আরও বেশি। কেননা ২০০১ সালে পেসার হিসেবে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু অভিষেক টেস্টে নিয়েছিলেন সর্বাধিক উইকেট।

অভিষেকে তাক লাগিয়ে দেওয়া, দারুণ প্রতিভার সাক্ষর রাখা- এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশি বোলাররা খুব একটা পিছিয়ে নেই। তবে অধিকাংশ সময়ে বাংলাদেশের স্পিনাররা নিজেদের অভিষেক টেস্টকে আলোকিত করেছেন। এর পেছনেও নিশ্চয়ই রয়েছে বিশেষ কোন কারণ।

বাংলাদেশ যে অনেকটাই স্পিনারদের উপর ছিল নির্ভরশীল। এখন হয়ত দিন বদলেছে। সেই সাথে বদলেছে ভরসার জায়গাও। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পেসারদের উত্থান হয়েছে নজরকাড়া। পেসাররা নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখছেন প্রতিনিয়ত।

ads

সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন নাহিদ রানা। দুর্ধর্ষ গতি তাকে বাকিদের থেকে করেছে আলাদা। গড়ে প্রায় ১৪৫ কিলো প্রতি ঘন্টা বেগে বল ছুঁড়তে পারেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই তা বাংলাদেশের জন্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়। গতিতেই তিনি করছেন বাজিমাত।

খানিকটা অপ্রাসঙ্গিক ঠেকছে নিশ্চয়ই। কেন মঞ্জুরুল ইসলামের পর নাহিদের গল্প আসছে? এমন প্রশ্ন হওয়াও স্বাভাবিক। তবে সম্পৃক্ততা রয়েছে বলেই এসেছে নাহিদ রানার কথা। সেই ২০০১ সালে মঞ্জুরুল ইসলাম বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্টে পাঁচটির বেশি উইকেট শিকার করেছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়ে টেস্টের এক ইনিংসে ছয় উইকেট শিকার করেছিলেন, বাঁ-হাতি এই পেসার।

এরপর কেটে গেছে ২৩টি বছর। বাংলাদেশের কোন পেসার আর নিজের অভিষেক ম্যাচটায় রাখতে পারেননি সামর্থ্যের ছাপ। উইকেট বাগিয়েছেন অনেকেই। তবে এক টেস্টে পাঁচটি কিংবা তার বেশি উইকেট নিতে পারেননি কেউই। মাশরাফি বিন মর্তুজা, মুস্তাফিজুর রহমান ও জিয়াউর রহমানরা ৪টি করে উইকেট নিয়েছিলেন।

তবে ভিন্ন চিত্র অবশ্য স্পিনারদের ক্ষেত্রে। নিজেদের অভিষেক টেস্ট ম্যাচে সাতজন স্পিনার পাঁচটি বার তার বেশি উইকেট নিতে সক্ষম হয়েছেন এখন অবধি। সোহাগ গাজী নিজের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে বাগিয়েছিলেন ৯টি উইকেট। তবে পেসারদের এমন সাফল্যের আক্ষেপ ছিল বহুদিন ধরে।

সেই ২০০১ সালের পর এই আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন নাহিদ রানা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেট টেস্টে তার অভিষেক হয়। সেই টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে তার শিকার ৫ উইকেট। বহুকাল বাদে যেন অভিষেকে নিজেকে প্রমাণ করতে পারলেন কোন এক বাংলাদেশি পেসার।

নাহিদের সম্ভাবনাও রয়েছে প্রচুর। তবে সে সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে হলে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। যার অন্যতম লাইন-লেন্থ। বেশ জোরের উপর বল করতে গিয়ে নাহিদ রানা ঠিকঠাক লাইন-লেন্থে বল ফেলতে পারেন না। প্রায়শই লুজ বল করে ফেলেন। তাতে করে বাড়তি রান যোগ হয় তার নামের পাশে, দলের বিপক্ষে।

সুতরাং তার এই বিষয়ের দিকে নজর দেওয়া ভীষণ প্রয়োজন। আরও একটি জিনিসে বাড়তি নজর রাখতেই হবে নাহিদ রানাকে। তার বোলিং অ্যাকশন বেজায় জটিল। এমন জটিল অ্যাকশনের বোলারদের ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অত্যাধিক। অতএব ফিটনেসের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে তার। নতুবা সম্ভাবনার হতে পারে অকাল প্রস্থান। পেসারদের নবজাগরণের পথিকৃৎ হবেন নাহিদও তেমনটিই তো প্রত্যাশিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link