More

Social Media

Light
Dark

আমাদের ‘অল ফরম্যাট’ নেতা

ক্রিকেটকে বলা হয়, ক্যাপ্টেনস গেম। ফলে এখানে কে অধিনায়ক, সেটা একটা আলাদা বিবেচ্য ব্যাপার। তাও যদি হয় একাধিক ফরম্যাটে দলের নেতৃত্ব দেওয়া, তাহলে তো আরও বড় ব্যাপার। আজ আমরা বাংলাদেশকে তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্ব দেওয়া অধিনায়কদের নিয়ে কথা বলবো।

শুধু বাংলাদেশ নয়, যেকোনো দেশের জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেয়াই সন্মান এবং সৌভাগ্যের বিষয়। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই সন্মান কিংবা গৌরবের অধিকারী হতে পেরেছেন সামান্য কয়েকজন ক্রিকেটার। আর এই ছোট্ট তালিকাকেও আমরা বিশেষ এক শর্তে করেছে আরো ক্ষুদ্র। তিন সংস্করণে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন মাত্র চার জন ক্রিকেটার।

যদিও এই চার জনের আগে বেশিরভাগ অধিনায়কেরই সুযোগ হয়নি তিন সংস্করণ খেলার। কারণ তখনতো ছিলো না, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। তাই এই তালিকাটা ছোটো হবে এটাই স্বাভাবিক।

ads
  • মাশরাফি বিন মুর্তজা

বাংলাদেশের ইতিহাসের এখন পর্যন্ত সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ৮৯ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জিতিয়েছেন ৫০ ম্যাচ। যা কিনা অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ ম্যাচ জেতার রেকর্ড। এছাড়াও,তিনি এনে দিয়েছেন বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য।

মাশরাফির হাত ধরেই বাংলাদেশে আসে প্রথম কোনো ক্রিকেট শিরোপা। এছাড়াও ২০০৯ সালে একটি মাত্র টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন। ইনজুরির কারণে ২০০৯ সালের পর আর টেস্ট খেলেননি। খেললে হয়তো আরো বেশি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। টি-টোয়েন্টিতে ২৮ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন রেকর্ড ১০ ম্যাচ। সাফল্যের হার ৩৭.০৩ শতাংশ।

  • সাকিব আল হাসান

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ছিলেন মূলত মাশরাফির সহকারী। মাশরাফির ইনজুরির কারনে দায়িত্ব পান অধিনায়কেত্বর। পরবর্তীতে হন দলের পূর্ণ অধিনায়ক। দলকে অর্ধশত ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়েছেন ২৩ ম্যাচ। সাফল্যের হার ৪৬.৯৬ শতাংশ।

সাকিবের সময়ে বাংলাদেশ দল নিয়মিত জয় পেতে শুরু করে। তার অধিনায়কত্বে এশিয়া কাপ ফাইনাল খেলেছিলো বাংলাদেশ। টেস্টে ১৪ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করে দলকে এনে দিয়েছেন ৩ জয়। টেস্টে জয় পেতে বেগ পেতে হয় বাংলাদেশকে। না হলে সাকিবের রেকর্ড টা হয়তো আরো ভালো হতে পারতো। টি-টোয়েন্টিতে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জিতেছে ৭ ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ২১ ম্যাচ। সাকিবের অধিনায়কত্বে দুইটি বাজে রেকর্ডের শিকার বাংলাদেশ। ২০১১ বিশ্বকাপে ২ ম্যাচে ১০০ রানের নিচে অল-আউট হয়েছে তার নেতৃত্বেই।

  • মুশফিকুর রহিম

সাকিবের পর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক হিসেবে ঐতিহাসিক তিনটি জয়ে নেতৃত্ব দেন মুশফিক। শ্রীলংকার বিপক্ষে শততম টেস্ট জয়,ঘরেরে মাঠে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্ট সিরিজ ড্র এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়।

টেস্টে ৩৪ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ৭ ম্যাচ জিতিয়েছেন। তার মধ্যে আছে তিনটি ঐতিহাসিক জয়। তবে মাঠে সঠিকভাবে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারতেন না বলে অভিযোগ ছিলো অনেকের। ওয়ানডেতে ৩৭ ম্যাচে জিতেছেন ১১ ম্যাচ। সাফল্যের হার ৩১.৪২ শতাংশ। টি-টোয়েন্টিতে ২৩ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলকে জিতিয়েছেন ৮ ম্যাচ। সাফল্য ৩৬.৩৬ শতাংশ।

  • মোহাম্মদ আশরাফুল

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ক্রিকেট তারকা আশরাফুল। একটা সময় বাংলাদেশের জয় নির্ভর করতো আশরাফুলের ব্যাটিংয়ের উপর। আশরাফুলের ব্যাট হাসলে,জিতে যেত বাংলাদেশ।

২০০৭ বিশ্বকাপের পর হাবিবুল বাশারের উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব নেন জাতীয় দলের। ১৩ টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে জেতাতে পারেননি কোনো টেস্ট। তার নেতৃত্বে ড্র করেছিলো ১ টেস্ট। ওয়ানডে ৩৮ ম্যাচে দলকে সাফল্য দেখিয়েছিলেন মাত্র ৮ ম্যাচে। সাফল্যের হার ২০.০৫ শতাংশ। টি-টোয়েন্টিতে ১১ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিলো ২ টি-টোয়েন্টিতে। যার মধ্যে একটি ছিলো ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত সাফল্য পেতে শুরু করে ২০১৪ সাল থেকে। তার আগে যেসব অধিনায়ক দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের সাফ্যলের হার কম। কিন্তু তখন বাংলাদেশ জায়ান্ট কিলার হিসেবে পরিচিত ছিলো তাদের কল্যানেই। তাদেরকে সাফল্যের বিচারে ছোটো করে দেখলে সেটা অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অবমাননার শামিল। তাদের সেই সাফল্যটুকুই আমাদের ক্রিকেটকে এতোটা পথ এগিয়ে আসার অনুপ্রেরণা।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link