More

Social Media

Light
Dark

পরিকল্পনার গলদে ‘পলায়নপর’ পাকিস্তান

আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে থাকা দল। তাছাড়া, চলতি বছরের মে মাস থেকে ছিল না কোনো ওয়ানডে ম্যাচ হারার ঘটনা। সব মিলিয়ে প্রায় ‘অপরাজেয়’ একটা দল হয়েই এবারের এশিয়া কাপের মঞ্চে পা রেখেছিল।

তবে, জয়ের ভেলায় ভাসতে থাকা দলটা যেন হঠাতই ডুবে গেল মহাদেশীয় এ আসরে এসে। শিরোপা প্রত্যাশী পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন হওয়া তো দূরে থাক, সুপার ফোরের পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থেকে শেষ করেছে এবারের এশিয়া কাপ।

উড়তে থাকা পাকিস্তানের এমন ভরাডুবির কারণ কী? পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার, ধারাভাষ্যকার আমির সোহেল মনে করেন, টুর্নামেন্ট খেলার জন্য যথাযথ পরিকল্পনার অভাবের কারণেই পাকিস্তানের এমন ভরাডুবি। সম্প্রতি পাকিস্তানের গণমাধ্যম ‘ডন’কে দেওয়া তাঁর সাক্ষাৎকারেই উঠে এসেছে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ব্যর্থ হওয়ার নেপথ্য কারণগুলো।

ads

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্লোজ ম্যাচ গুলো জিততে পারি নি। আর আমাদের এটা মেনে নিতে হবে, ভারত পুরো এশিয়া কাপেই দাপটের সাথে খেলেছে। এই শিরোপা ওরাই ডিজার্ভ করে। তবে আমরা শ্রীলঙ্কার সাথে জিতলে ব্যপারটা অন্যরকমও হতে পারতো। আমি মনে করি, ম্যাচটা বের করে আনা উচিৎ ছিল। এই দায়টা আমি টিম ম্যানেজমেন্টেরই দিব। তাদের এবারের এশিয়া কাপ নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনাই ছিল না।’

তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আসলে এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে আমি সেই তেজটাই খুঁজে পাইনি। একটা টুর্নামেন্টে এইটা দারুণ রসদ হিসেবে কাজে দেয়। কিন্তু ক্রিকেটারদের মধ্যে আমি সেই তাড়নাটা পাই নি। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারত ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ওদের আরো চেপে ধরা উচিৎ ছিল। কিন্তু আমাদের বোলাররা সেটা পারেনি। এই দায়টা মূলত স্পিনারদেরই নিতে হবে। কারণ মিডল ওভারগুলোতে ওদেরই বল করার দায়িত্ব।’

পাকিস্তান যে এবার ওপেনিং জুটি আর স্পিনারদের ব্যর্থতায় এগোতে পারেনি, সেটি একবাক্যে মেনে নিয়ে আমির সোহেল বলেন, ‘আমাদের ওপেনার আর স্পিনাররা ভাল করতে পারেনি। মিডল ওভার গুলোতে যখন ব্রেক থ্রু প্রয়োজন ছিল, তখন তাঁরা সেটা দিতে পারেনি। আর আমার মনে হয় না, টিম ম্যানেজমেন্ট পরে এগুলো নিয়ে কোনো বিশেষ কিছু করেছে।’

তবে সামনেই ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে ভারতের মাটিতে। আর সেটি মনে করিয়ে স্পিনারদের সতর্ক করে আমির সোহেল বলেন, ‘বিশ্বকাপে স্পিনারদেরই বড় একটা ভূমিকা রাখতে হবে। এমন নির্বিষ স্পিন ইউনিট নিয়ে চলতে থাকলে কিন্তু প্রতিপক্ষের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে।’

তবে এবারের এশিয়া কাপে বল হাতে শাদাব খান বিবর্ণ থাকলেও তাঁর পাশেই থাকছেন আমির সোহেল। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে কোনো পরিবর্তন করা উচিৎ নয়। শাদাব পরীক্ষিত পারফর্মার। ও সম্ভবত বল গ্রিপ বেশি করতে গিয়ে টার্ন পাচ্ছে না। আশা করছি, বিশ্বকাপে সে তাঁর সেরাটা দিতে পারবে।’

স্পিন ইউনিটে কোনো পরিবর্তন না চাইলেও এ ধারাভাষ্যকার পাকিস্তান দলে চান নতুন মুখ। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান দলে এখনই আব্দুল্লাহ শফিক আর সৌদ শাকিলকে নিয়মিত একাদশে সুযোগ দেওয়া উচিৎ। ওদের মতো সলিড ব্যাটিং টেকনিক আপাতত আর নেই।’

সর্বশেষ এশিয়া কাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতার মূলে ছিল ক্রিকেটারদের ইনজুরিও। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যান নাসিম শাহ। আর হারিস রউফ অস্বস্তিতে পড়ে খেলেন নি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে। আসন্ন বিশ্বকাপেও লম্বা একটা সময় জুড়ে খেলতে হবে পেসারদের। আর তাই আগেই সতর্কতামূলক হিসেবে পাকিস্তান দলের কোচিং স্টাফে ডা. ফয়সালকে দেখতে চান আমীর সোহেল।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে দলে ডা. ফয়সালকে কোচিং স্টাফের সাথে থাকা প্রয়োজন। খেলোয়াড়দের সাথে পূর্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর বোঝাপড়াও ভাল।’

সবশেষ বাবর আজমের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে এই ধারাভাষ্যকর বলেন, ‘বাবরকে আরো উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে, বড় আসরে যে কোনো প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার সক্ষমতা রাখতে হবে। ওর এখনো অনেক কিছু শেখার আছে।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link