More

Social Media

Light
Dark

খেয়ালি সাকিব, ক্রিকেট নেই তাঁর প্রায়োরিটি লিস্টে!

স্বপ্ন ধূলিসাৎ। মানসিকভাবে গোটা দল বিধ্বস্ত। চার ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ করতে পারেনি ২০০ রানও। এমন যখন পরিস্থিতি তখন দলের পাশে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ছিল অধিনায়ককে। কিন্তু বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, দলকে শ্রীলঙ্কায় রেখে চলে এসেছেন বাংলাদেশে।

আগে থেকেই মুশফিকুর রহিম দেশে ফিরবেন তা সবারই জানা ছিল। পারিবারিক কারণেই তিনি ফিরেছেন। তবে হুট করেই তার সফর সঙ্গী হয়েছেন সাকিব। ঠিক কি কারণে তিনি দেশে ফিরেছেন তা স্পষ্ট নয়। ধারণা করা যায় ব্যবসায়িক কারণেই দেশে এসেছেন সাকিব।

আর্থিক বিভিন্ন কারণেই বেশকিছু সময় দলের বাইরে ছিলেন সাকিব। তবে তখন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু অধিনায়ক ছিলেন না। সে সময়ে হয়ত তাকে সেই ছাড়টুকু দেওয়া গিয়েছে অথবা তিনি আদায় করে নিয়েছেন। কিন্তু এবারের দৃশ্যপট ভিন্ন।

ads

বাংলাদেশ দল দারুণ বিপাকেই রয়েছে। দলটা ছন্নছাড়া। বিভিন্ন পজিশনে সমাধান মিলছে না। শিরোপা জয়ের আশা নিয়ে টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ফাইনাল খেলাটা রীতিমত দিবাস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সামনেই আবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দল গোছানোর বিষয়েও সাকিবের হস্তক্ষেপ, মতামত, সিদ্ধান্তের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। বাংলাদেশের খেলা নেই।

এই সময়টা সাকিব চাইলেই দলের সবার সাথে বসে আলাপ করতে পারতেন। বিশেষ করে টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচকদের সাথে আলোচনায় বসতে পারতেন। হাতে যে খুব বেশি সময় বাকি নেই। এশিয়া কাপ মিশন শেষ হতে না হতেই টাইগারদের নামতে হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। এর ঠিক দশ দিনের মাথায় বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে।

তাইতো এই সময়ের প্রতিটা মুহূর্তই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পুরো দলকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তোলাটাও ছিল ভীষণ প্রয়োজন। তবে সাকিব এসবের কিছুই করলেন না। তিনি দলকে ফেলে চলে আসলেন। আদোতে সাকিবের পূর্ণ মনোযোগ দলের প্রতি রয়েছে কিনা সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

অবশ্য এদফা অধিনায়কের দায়িত্ব নিতে সাকিবের বেশ অনীহাই ছিল। বেশ কিছু সূত্র সাকিবের সেই অনীহার কথা প্রকাশ করেছিল। তবে নানা জল ঘোলার পর সাকিবই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়ে নেন। সেই অনীহার থেকেই কি এভাবে দলকে ফেলে আসা?

সে উত্তর কেবল সাকিবের জানা। তবে একজন দায়িত্বশীল অধিনায়ক হিসেবে এমন আচরণ সাকিবকে সমালোচনার কাঠগড়ায় তোলার জন্য যথেষ্ট। এশিয়া কাপের সূচি একটু দেড়িতে হলেও পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করেছিল এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। সাকিবের অন্তত সেভাবেই নিজের কাজের আলাদা সূচি তৈরি করে ফেলার কথা।

তেমনটি না করলেও দলের এমন পরিস্থিতিতে তার টিম হোটেল ছেড়ে আসাটাও দলের জন্যে নেতিবাচক বার্তা। তিনি ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বেশ ফুরফুরে থাকতে চেয়েছেন। বেশ সাবলীলভাবেই নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন। তবে দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের নিশ্চিতভাবেই তার মত অভিজ্ঞতায় ভরপুর নয়। মানসিকভাবে বিপাকে পড়তেই পারেন বাকিরা।

সেই সময় অভিজ্ঞতার বিশাল ঝুলি খুলে বসতেই পারতেন সাকিব। দলকে একটু সাহস দেওয়ার প্রচেষ্টা অন্তত করা উচিতই ছিল। তাছাড়া শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে ঠিক কি করতে পারে, সে পরিকল্পনাও করা উচিত ছিল অধিনায়ক হিসেবে। তবে সাকিব এসবের কিছুই করেননি।

সাকিব বরাবরই কাজের মধ্যে থাকতে চেয়েছেন। তবে ক্যারিয়ারের শেষভাগে সাকিবের কাছে ক্রিকেটের থেকেও বেশি প্রাধান্য পেয়েছে পারিপার্শ্বিক বিষয়বস্তু। নিজের শেষ বিশ্বকাপে সাকিব নিশ্চয়ই একটি ভাল ফলাফল নিয়ে শেষ করতে চান। তবে তার এমন উদাসীনতা, এমন খামখেয়ালিপনা নিশ্চিতভাবেই কোন ইতিবাচকতা বয়ে নিয়ে আসবে না।

আসলে সাকিব কি চান, সেটা তাকেই নির্ধারিত করতে হবে। সাকিবের প্রাধান্য়ের তালিকায় ক্রিকেট তথা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ঠিক কোথায় অবস্থান করেন, সেটা তাকেই স্পষ্ট করতে হবে। বিপদের মুখে অধিনায়ক ছেড়ে যাবেন দলকে, সেটা নিশ্চয়ই কাম্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link