More

Social Media

Light
Dark

অবসরের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রিয়াদ

বলা হচ্ছে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়াটা সঠিক ‘প্রোসেস’ মেনে হয়নি। নিন্দুকেরা দাবি করছেন, বিশ্রামের নাম করে তাঁকে জাতীয় দল থেকে চিরতরে বাদ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু, গত বছরখানেকের ঘটনাক্রম সেটা বলছে না। বলছে, মাহমুদউল্লাহকে দু’বার অবসরের সুযোগ দিতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু, তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। বিসিবিকে জানান, আরও দুই বছর খেলতে চান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।

২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই অধিনায়ককে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে দেখা যায় ২০২২ সালের এশিয়া কাপে। তখন টি-টোয়েন্টি দলে অবস্থান নড়বড়ে রিয়াদের। স্ট্রাইক রেট ও ফিটনেস ইস্যু নিয়ে সমস্যাটা স্পষ্ট ছিল।

ads

সেই বছর টেস্টের পর টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পান সাকিব। তখন রিয়াদকে প্রথমবারের মত সাদা বলের ক্রিকেট থেকে সরে যেতে বলেছিল বিসিবি। প্রস্তাব ছিল, বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেই অবসর নেবেন রিয়াদ।

রিয়াদ রাজি হননি। সেই এশিয়া কাপের পর তাঁর আর টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা হয়নি। রিয়াদ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ভাল পারফরম্যান্সের আশা করেছিলেন। কিন্তু, পারফরম্যান্স প্রত্যাশামাফিক হয়নি। ফলে, আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁকে ভাবাই হয়নি।

এরপর গত ফেব্রুয়ারিতে, আবারও তাঁকে অবসরের প্রস্তাব দেয় বোর্ড। বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজে ফোন করে অবসর ইস্যুতে কথা বলেন। রিয়াদ এই দফাতেও রাজি হননি।

এই বিষয়ে বোর্ড সভাপতি ক্রিকেট বিষয়ক একটা গণমাধ্যমে কথাও বলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে মাহমুদউল্লাহকে ফোন করে বলেছিলাম, তোমার যদি অবসর নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা থাকে দয়া করে আমাদের জানাও। কারণ আমরা এমন একটা সুযোগ সৃষ্টি করব, যাতে তুমি একটা সিরিজ খেলার মাধ্যমে অবসর নিতে পারো।’

রিয়াদের জন্য লাসিথ মালিঙ্গা কিংবা শচীন টেন্ডুলকারের মত আয়োজন করে ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগ ছিল। অন্তত, বোর্ড সভাপতি সেই প্রস্তাবই করেন। তবে, তাতে মত ছিল না রিয়াদের।

মোহাম্মদ রফিক কিংবা খালেদ মাহমুদ সুজনের মত গুটি কয়েক ক্রিকেটার মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পেরেছেন। চাইলে রিয়াদও পারতেন। কিন্তু, তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

কিন্তু, সব লড়াইয়ের শেষে কি আর জাতীয় দলে জায়গা হয়? রিয়াদের ক্ষেত্রেও হয়নি। বোর্ড সভাপতির সেই বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর মোটে একটা সিরিজেই কেবল দলে ছিলেন রিয়াদ। মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তাঁকে সর্বশেষ দেখা যায় জাতীয় দলে।

রিয়াদের বয়স এখন ৩৮-এর কাছাকাছি। এই বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অনেক নজীর থাকলেও সেখানে পারফরম্যান্স হতে হয় আকাশছোঁয়া। কিন্তু, রিয়াদের ক্ষেত্রে পারফরম্যান্স তাঁর হয়ে কথা বলে না।

তাঁর ব্যাটিং রিফ্লেক্স নষ্ট হয়ে গেছে, হ্যান্ড আই কম্বিনেশন নেই বললেই চলে। স্ট্রাইক রোটেট করতে পারেন না ঠিক মত। এমনকি এমন ম্যাচ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যেখানে রিয়াদ ফিল্ডিংয়ে বড় কোনো ভুল করছেন না। ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন আছে। যে দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, আর কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে – সেখানে এত কিছুর পরও দলে জায়গা হয় কি করে!

হ্যাঁ, এক সময় তিনি দলের অটোমেটিক চয়েজ ছিলেন। রিয়াদের স্বর্ণালী সময়টাই বাংলাদেশ দল ছয়-সাত নম্বরে খুঁজছে। কিন্তু, রিয়াদের নিজের মধ্যেও সেটা আর নেই। পারফরমিং আর্টের এটাই বাস্তবতা। রিয়াদ তাই এখন স্মৃতিতেই কেবল রোমন্থন করতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link