More

Social Media

Light
Dark

ভিনদেশেও তাওহীদ জিতেছেন হৃদয়

ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট মানেই বিদেশি তারকাদের সাথে মেশার সুযোগ, বর্নিল অভিজ্ঞতা আর বিশাল অংকের অর্থের হাতছানি। তবে এই মুদ্রার অন্যদিকও আছে; একই পজিশনে একাধিক সেরা খেলোয়াড় থাকায় প্রতিযোগিতা হয় ব্যাপক। ফলে নিজেকে প্রমাণের আর ভরসার প্রতিদান দেয়ার পাহাড়সম চাপ থাকে মাথার উপরে। আর সেটা যদি হয় অভিষেক ম্যাচে, তবে তো কথা-ই নেই।

তবে তাওহীদ হৃদয়ের কাছে এসব নেহাত তুচ্ছ; চাপকে উড়িয়ে দিয়ে ভীনদেশী লিগে নিজের অভিষেক ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে জাফনা কিংসের হয়ে খেললেন ৩৯ বলে ৫৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তাঁর এই ইনিংসের উপর ভর করেই ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েছে দল। বলতে গেলে, টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে নিজের শুরুটা স্বপ্নীলভাবেই করেছেন হৃদয়।

হুট করেই এলপিএলে ডাক পেয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়; বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও শ্রীলঙ্কায় যেতে বাধা দেয়নি। যদিও খেলার সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়ে ছিল সংশয়। কিন্তু ম্যাচের আগে একাদশে রাখা হয় বাংলাদেশী এই উদীয়মান তারকাকে, আর এরপর তাওহীদ হৃদয় যা করলেন সেটা স্রেফ চোখের শান্তি।

ads

ঘরোয়া অঙ্গনে নিয়মিত মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করা তাওহীদ হৃদয়কে চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল জাফনা কিংস। ৪২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল দলটি; সেসময় ক্রিজে এসে হাল ধরেন হৃদয়। ডট বল খেলে নয়, বরং সিঙ্গেল ডাবলস রানের চাকা সচল রেখেই ক্রিজে সেট হয়ে যান তিনি। তারপর টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান তুলে জাফনাকে পৌঁছে দেন বড় সংগ্রহের দিকে।

ষষ্ঠ ওভারে মাঠে নাম তাওহীদ হৃদয় আউট হয়েছিলেন উনিশতম ওভারে। এর মাঝে চারটা চারের পাশাপাশি একটা বিশাল ছয় এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ১৩৮ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে খেলা এই ইনিংসে ডট বল মাত্র চারটি; টি-টোয়েন্টির সাথে মানানসই ইনিংস কিভাবে খেলতে হয় সেটাই যেন আরেকবার দেখিয়ে দিলেন এই ব্যাটার।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতা তাওহীদ হৃদয়ের শিরা উপশিরাতেই মিশে আছে সেরাটা নিংড়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা। চ্যাম্পিয়ন মেন্টালিটি ধারণকারী এই তরুণের শরীরী ভাষাতেই রয়েছে রাজসিক ভাব। তাঁর গেম এওয়ারনেস কিংবা আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় তিনি গড়পড়তা কেউ নন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণ করার পর এবার অচেনা পরিস্থিতিতেও নিজের জাত চিনিয়েছেন হৃদয়।

মাত্র চার মাসের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ইতোমধ্যে চার-পাঁচটি ‘ইম্প্যাক্টফুল নক’ উপহার দিয়েছেন এই ডানহাতি। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচে আরো একটি সময়োপযোগী ইনিংস উপহার দিলেন তিনি। বর্তমানে রঙিন পোশাকে যেকোনো দল ঠিক যে ধাঁচের মিডল অর্ডার ব্যাটার খুঁজে বেড়ায়, হৃদয় ঠিক তেমনি একজন।

আত্মবিশ্বাসী আর শান্ত মস্তিষ্কের তাওহিদ হৃদয় যে অন্যান্য ব্যাটারদের মতো নয় সেটা বুঝতে বাকি নেই আর। রান হয়তো সবদিন করবেন না তিনি; তবে ইতিবাচক আর ক্যালকুলেটিভ এপ্রোচ তাঁকে নিয়ে আলাদা করে ভাবতে বাধ্য করবে। আর টি-টোয়েন্টি লিগে নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারলে তাঁকে নিয়ে যে নিলামের ময়দানে কাড়াকাড়ি হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link