More

Social Media

Light
Dark

রহস্যে আগমন, রহস্যেই বিদায়

বোলিং অ্যাকশন কিংবা কবজির নড়াচড়া – কোনোটা দেখে কোনোভাবেই আন্দাজ করা সম্ভব হচ্ছিলো না! কি রকম বল আসতে যাচ্ছে বোঝার কোনো উপায় নেই। আর সেই না বোঝার খেসারত দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরছে বিশ্বের বাঘা বাঘা সব ব্যাটসম্যানরা।

ক্রিকেট বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দেয়া সেই রহস্যময় স্পিনার অজান্তা মেন্ডিস। স্পিন গ্রেট মুরালিধরনের ক্যারিয়ারের সায়াহ্ন সময়ে উল্কার মত আবির্ভাব ঘটে অজান্তা মেন্ডিসের। কিন্তু ক্যারিয়ারকে দীর্ঘ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে বিদায় জানিয়েছেন ক্রিকেটকে।

তার শুরুর মতো শেষটাও হয়ে রইলো এক রহস্য। কী করে হারিয়ে গেলেন এই রহস্য স্পিনার?

ads

২০০৮ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে দাপট দেখিয়ে নির্বাচকদের নজর কাড়েন এই রহস্যময় বোলার। রহস্যময় বোলার হওয়ায় জাতীয় দলে অভিষেক হতে অপেক্ষা করতে হয়নি। ক্যারিয়ারের শুরুতে কতটা ভয়ঙ্কর ছিলেন, তার প্রমান দেয় পরিসংখ্যান।

ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুত ৫০ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েন মাত্র ১৯ ম্যাচে। অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেট সহ অভিষেক সিরিজে ২৬ উইকেট নিয়ে জানান দেন তিনি এসেছেন ক্রিকেট বিশ্বে রাজত্ব করতে। অভিষেক টেস্টে স্পিনপটু সৌরভ, দ্রাবিড়, শচীন, লক্ষনদের নিয়ে গড়া ভারতীয় মিডল অর্ডার একাই গুড়িয়ে দেন অজান্তা মেন্ডিস।

ক্যারিয়ারের শুরুতে স্পিন গ্রেট মুরালিধরনের পরামর্শ সাথে অফস্পিন, টপস্পিন, গুগলি আর ক্যারম বল দিয়ে প্রচুর সাফল্য পেতে শুরু করেন। কিন্তু মুরালিধরনের অবসরের পর খেই হারিয়ে ফেলতে শুরু করেন। অস্ত্র ভান্ডারে নতুন কোনো অস্ত্র যোগ করতে না পারা এবং পুরাতন অস্ত্রকে শাণিত করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে মূদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে সময় নেননি।

উড়ন্ত অভিষেক আর রহস্যময়ী বোলিং এর কারণে ক্যারিয়ারের শুরুতে ভাবা হয়েছিলো অজান্তা মেন্ডিসই হতে যাচ্ছেন মুরালিধরনের যোগ্য উত্তরসূরি। কিন্তু মাথার উপর থেকে মুরালির ছায়া সরে যাওয়ার সাথে সাথেই নিজের অবস্থানও নড়বড়ে করে ফেলেন অজান্তা। টেস্ট দলে জায়গা হারান আরেক স্পিন গ্রেট রঙ্গনা হেরাথের কাছে। যিনি কি না ক্যারিয়ারের অর্ধেকের বেশি সময় কাটিয়ে ফেলেছেন মুরালির ছায়ায়।  ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন নিজের কার্যকারীতা ধরে রাখতে পেরেছিলেন।

ব্যাটসম্যান উইকেটে থিতু হবার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ দেখাতে বেশ পটু হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু সেই পুরোনো কারনে শর্টার ভার্সন ক্রিকেটেও জায়গা নড়বড়ে হয়ে উঠে। পরবর্তীতে রঙ্গনা হেরাথ আবারো দখল করে নেন অজান্তা মেন্ডিসের জায়গা।

এরপর বিভিন্ন সময় জাতীয় দলে ফিরলেও কখনো নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে পারেননি অজান্তা। এভাবেই আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে থাকেন জাতীয় দলের রাডার থেকে। জাতীয় দলের রাডার থেকে বাদ হয়ে বিদায় জানান সকল ধরনের ক্রিকেটকে।

অথচ তিনি হতে পারতেন এক গ্রেট স্পিনার। লংকান ক্রিকেটের এক আইডল। কিন্তু হয়ে থাকলেন উল্কার মত ক্ষণস্থায়ী এক রহস্য স্পিনার।

২০১৪ সালে শেষবারের মতো টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ২০১৫ সালে শেষ ওয়ানডে খেলেছেন। ১৯ টেস্টে ৭০ উইকেট, ৮৭ ওয়ানডেতে ১৫২ উইকেট এবং ৩৯ টি-টোয়েন্টিতে ৬৬ উইকেটের ক্যারিয়ার ফিরে দেখলে কেবলই বিষ্ময় তৈরী হয়। কেনো এই স্পিনারটি টিকতে পারলেন না!

২০১৯ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে কিছু ম্যাচ খেলেছেন। এরপর থেকে আর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নেই মেন্ডিসের নাম।

লেখক পরিচিতি

খেলাকে ভালোবেসে কি-বোর্ডেই ঝড় তুলি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link