More

Social Media

Light
Dark

সাইফ-রাকিবদের বোলিংয়ে কোণঠাঁসা ভারত!

এসিসি ইমার্জিং এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বের প্রতিটি ম্যাচেই ব্যাটিং প্রতাপ দেখিয়েছিল ভারত ‘এ’ দল। সংযুক্ত আরব আমিরাত আর পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ উইকেট, নেপালের বিপক্ষে ১ উইকেট— গ্রুপ পর্বে ভারত হারিয়েছিল মোটে ৫ টি উইকেট। তবে সেমিফাইনালের মঞ্চে এসে টাইগারদের বোলিং তোপে রীতিমত কোণঠাঁসা হয়ে পড়েছে ভারত ‘এ’ দল। তানজিম হাসান সাকিব, রাকিবুল হাসান, শেখ মাহেদীদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে কোনোমতে দুইশো পেরোনো সংগ্রহ পেয়েছে তাঁরা।

গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই ভারতের জয় এসেছিল পরে ব্যাটিং করে। বাংলাদেশ এ দলের অধিনায়ক সাইফ হাসান তাই টসে জিতেই নিয়েছিলেন ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। সাইফের সে সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিয়ে ৮ম ওভারেই ভারতের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। সাঁই সুদর্শনকে উইকেটরক্ষক আকবর আলীর কাছে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান এ পেসার।

প্রথম উইকেট পতনের অবশ্য রয়েশয়ে ব্যাটিং করে দলকে ভালভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন অভিষেক শর্মা আর নিকিন জোসে। যদিও এর পিছনে ছিল আম্পায়ারের বিতর্কিত একটি সিদ্ধান্ত। ইনিংসের ১৪ তম ওভারে রাকিবুল হাসানের বলে নিকিন জোসে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছিলেন। তবে নিকিন জোসের পা পপিং ক্রিজে ছুঁয়েছিল কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত হতেই অনফিল্ড আম্পায়াররা দ্বারস্থ হন টিভি আম্পায়ার ফয়সাল আফ্রিদির কাছে।

ads

আর এখানেই তৈরি হয় নাটকীয় পরিস্থিতি। টিভি রিপ্লেতে বারবার দেখা যাচ্ছিল জোসের পা পপিং ক্রিজে স্পর্শ করেনি। তাই প্রথমে সিদ্ধান্তও আসে যথার্থ। আউটের সংকেত হিসেবে জ্বালানো হয় লালবাতি। অর্থাৎ আউট। এমন সিদ্ধান্তে আনন্দে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশ দলের ফিল্ডাররা।

কিন্তু বিস্ময়করভাবে কিছুক্ষণ বাদেই পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। তৃতীয় আম্পায়ার সবুজ বাতি জ্বালিয়ে জানিয়ে দেন, আউট হয়নি। এমতাবস্থায় মাঠে কিছুটা উত্তাপও ছড়ায়। বাংলাদেশ দলের শরীরী ভাষায় সেটাই বারবার প্রকাশ পাচ্ছিল। অধিনায়ক সাইফও অনফিল্ড আম্পায়ারের কাছে হতাশা জানিয়েছিলেন।

যদিও আম্পায়ারের এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্তও নিকিন জোসেকে বেশিক্ষণ টিকতে দেয়নি। ব্যক্তিগত ৯ রানে তৃতীয় আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে বেঁচে গেলেও ২৯ বলে ১৭ রান করে সাইফের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

নিকিন জোসের ঐ আউটের পরই মূলত ম্যাচের মোমেন্টার নিজেদের দিকে নিয়ে আসে টাইগাররা। নিকিন জোসেকে ফেরানো পর মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে তাঁরা তুলে নেয় অভিষেক শর্মার উইকেট। রাকিবুল হাসানের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে খেলতে গিয়েছিলেন এ বাঁহাতি ব্যাটার।

কিন্তু ব্যাটে বলে ভাল সংযোগ না ঘটায় তা আর বাউন্ডারি পেরোতে পারেনি। তানজিম হাসানের তালুবন্দী হয়ে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে ফিরে যান এ ওপেনার। অভিষেক শর্মার পর বলার মতো কিছু করতে পারেননি মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে আসা নিশান্ত সিধু আর রিয়ান পরাগও। ফলত, ১০০ রান পূরণেই আগেই সাজঘরে ফিরে যান ৫ ভারতীয় ব্যাটার।

সর্বশেষ আইপিএলে লোয়ার মিডল অর্ডারে দারুণ সক্ষমতার প্রতিদান দিয়েছিলেন ধ্রুভ জুরেল আর হার্শিত রানা। কিন্তু কলম্বোর স্পিন সহায়ক উইকেটে তারাও ভারতকে বেশিদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। দুজনই ধরা দেন মাহেদীর স্পিনে।

এমতাবস্থায় ভারত ২০০ এর গণ্ডি পেরোতে পারবে কিনা, তা নিয়েই তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। কিন্তু ইনিংসের সিংহভাগ সময়ে গোছানো বোলিং করলেও ভারতের অধিনায়ক ইয়াশ ধুলের কাছে এসেই যেন খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশের বোলাররা। ভারতের ইনিংসকে লড়াই করার মতো সংগ্রহে নেওয়ার পথে একাই প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি। সে যাত্রায় তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক।

আর তাঁর ব্যাটেই দুইশো পেরোনো সংগ্রহ পায় ভারত। তবে ভারতের ইনিংসকে এরপরে সংহত করতে পারেননি এ ব্যাটার। মূলত যোগ্য সঙ্গীর ওভারেই তা হয়নি। ২১১ রানে থেমে যায় ভারতের ইনিংস। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ব্যক্তিগত ৬৬ রানে আউট হন ইয়াশ ধুল।

বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব, রাকিবুল হাসান আর মাহেদী হাসান। আর একটি করে উইকেট পান রিপন মণ্ডল, সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার।

ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালের মঞ্চে পা বাড়াতে বাংলাদেশের সামনে এখন লক্ষ্য ২১২ রান। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশি ব্যাটাররা যেমন আধিপত্য দেখিয়েছে তাতে এই রান আহামরি কিছুই নয়। এখন দেখার পালা, ব্যাটিং ইনিংসে বাংলাদেশ এই লক্ষ্য কিভাবে তাড়া করতে পারে।

 

 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link