More

Social Media

Light
Dark

ফখর জামান, এক খ্যাপাটে নাবিকের প্রত্যাবর্তন

ইনজুরি, ফর্মহীনতা, ফিটনেস – ফখর জামানের দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা লোকের অভাব নেই পাকিস্তানে। বিগত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও সুযোগ মেলেনি শুরুতে। কিন্তু দলের প্রয়োজনের মূহুর্তে ঠিকই হেসেছে ফখরের ব্যাট। 

২০১৭ সালে রূপকথার জন্ম দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ফখর জামানের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেবার পাকিস্তানকে শিরোপা জেতানোর পেছনের অন্যতম রূপকার ছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের উদ্বোধন করতে নেমে মারকুটে ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়ায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। সবাই ভেবেই নিয়েছিল পরবর্তী দশকে পাকিস্তানের হয়ে ব্যাটিংয়ের সমস্ত রেকর্ডই নিজের দখলে নেবেন এই ব্যাটসম্যান। 

ads

ফখরের সবচেয়ে বড় গুণ হলো তিনি একদম প্রথম বল থেকেই মারকুটে ব্যাটিং করতে জানেন। বাবর আজম কিংবা মোহাম্মদ রিজওয়ানরা যেখানে ইনিংসের শুরুতে খানিকটা সময় নিতে পছন্দ করেন, সেখানে ফখরের অভিধানে যেন বাউন্ডারি ছাড়া কোনো শব্দই নেই।

পেস কিংবা স্পিন দুই ধরনের বোলিংয়ের বিপক্ষেই সাবলীল ফখর রান করার সামর্থ্য রাখেন বিশ্বের যেকোনো প্রান্তেই। কেবলমাত্র মারকুটে ব্যাটিং নয়, বরং বড় ইনিংস খেলতেও ফখরের জুড়ি মেলা ভার।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই তো ১৯৩ রানের মাথায় বিতর্কিত রান আউট না হলে হয়তো ওয়ানডেতে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যেতেন। তিনিই একমাত্র পাকিস্তানি ব্যাটার যিনি কিনা দুই হাজার রান করার পাশাপাশি ৪৫ গড় এবং ৯০ এর বেশি স্ট্রাইক রেট ধরে রাখতে পেরেছেন। 

কিন্তু গত বছরটা মোটেই ভালো কাটেনি এই ব্যাটসম্যানের। ইনজুরি কিংবা ফিটনেসজনিত সমস্যায় বড় একটা সময় থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। এছাড়া রানও পাননি তেমন, সবেধন নীলমণি বলতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটি এবং নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি।

তরুণ তারকাদের উত্থানে ক্রমেই জাতীয় দলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছিল ফখরের জন্য। এমনকি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল দলে জায়গা পাননি, শুরুতে ছিলেন রিজার্ভ স্কোয়াডে। পরবর্তীতে অবশ্য ইনজুরির কারণে সেখান থেকেও নাম প্রত্যাহার করে নেন। 

তবে ফরম্যাটটা যখন ওয়ানডেতে আর প্রতিপক্ষ যখন নিউজিল্যান্ড, ফখরকে আর পায় কে! সময়ের ব্যবধানটা মাসতিনেকের হলেও কিউইদের বিপক্ষে টানা দুই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফখর বুঝিয়ে দিলেন ওয়ানডেতে তিনি এখনো অপ্রতিরোধ্য। আধুনিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে শান মাসুদ কিংবা ইমামের ধীরস্থির ব্যাটিং নয়, বরং ফখরের আগ্রাসী ব্যাটিংটাই ভীষণ প্রয়োজন পাকিস্তানের।

রাওয়ালপিন্ডিতে এদিন শুরুতে ব্যাট করে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল সফরকারীরা। কিন্তু জবাব দিতে নেমে ফখরের সামনে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি কোনো কিউই বোলার।

তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে বড্ড অসহায় লেগেছে ম্যাট হেনরি, ইশ সোধিদের। ১৩ চার এবং এক ছক্কায় ১১৪ বলে ১১৮ রানের ইনিংস খেলে যখন সাজঘরে ফিরছেন, ততক্ষণে জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে পাকিস্তানের।

এটা কোনোভাবেই ফখরের সেরা ইনিংস নয়, কিংবা নয় তাঁর সেরা ব্যাটিং প্রদর্শনীর একটি। কিন্তু পাকিস্তানের যখনই প্রয়োজন হয়েছে, ফখর এগিয়ে এসেছেন ব্যাট হাতে। বছর শেষের বিশ্বকাপে ভালো করতে এই রুদ্র মূর্তির ফখরকেই খুব বেশি করে দরকার বাবর আজমের দলের। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link