More

Social Media

Light
Dark

ইশান্ত শর্মা, এভাবেও ফিরে আসা যায়

ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা পার করে এসেছেন বেশ আগে। গোধূলী বেলায় তাই কেউ আর তাঁর কথা ভাবেননি। আইপিএলের গতবারের নিলামে তাঁকে ডাকার আগ্রহ দেখায়নি কেউই। এবারের নিলামে দিল্লী শেষমূহুর্তে দলে নিলেও ম্যাচে সুযোগ পাবার সম্ভাবনা ছিল দূরাশা। কিন্তু ইশান্ত শর্মা একটিমাত্র সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। প্রথম সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে দিল্লীকে মৌসুমের প্রথম জয়টা এনে দিয়েছেন তথাকথিত ফুরিয়ে যাওয়া এই পেসার। 

ভারতীয় ক্রিকেট পাড়ায় আলোড়ন তুলেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব হয়েছি ইশান্ত শর্মার। লাল বলের ক্রিকেটে একজন যোগ্য পেসারের অভাবে ভারত যখন মাথা কুটে মরছে, ঠিক তখনি আলোর মশাল হাতে আগমণ তাঁর। ছ’ফুটের উপর লম্বা, দারুণ গতি আর বাউন্সারের পাশাপাশি পেসারদের চিরায়ত আগ্রাসন, সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল হবার সবকিছুই ছিল ইশান্ত শর্মার মাঝে। 

অভিষেক সিরিজেই নিজের সামর্থ্যের জানান দেন তরুণ ইশান্ত। তাঁর ক্রমাগত সেদিন বড্ড অসহায় লাগছিলো রিকি পন্টিংকে, রীতিমতো নাজেহাল করে তুলেছিলেন অজি এই গ্রেটকে। কিন্তু টানা ইনজুরি কখনোই তাঁর প্রতিভার পূর্ণ পরিস্ফুটন ঘটতে দেয়নি। 

ads

তবুও বিরাট কোহলি যখন টেস্টে পেসারদের জাগরণের ডাক দিলেন, তখন সবার প্রথমে ছিল ইশান্তের নামই। বিলেতের মাটিতে ভারতীয় বোলারদের চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের পথটা দেখালেন তিনি। সময়ের পরিক্রমায় অধিনায়কত্বের ব্যাটনটা কোহলির বদলে আসলো রোহিতের হাতে। সিরাজ, বুমরাহ, শামিদের নিয়ে তরুণ পেস অ্যাটাকে নির্ভর ভারত আজ আর ইশান্তকে একাদশে রাখে না। 

লাল বলের ক্রিকেটে নিয়মিত খেলাতেই কিনা সবাই ভুলেই গেছে সাদা বলের ক্রিকেটটাও ইশান্ত খেলতে জানেন! নইলে আইপিএলে ৭৫ উইকেটের পাশাপাশি আট ইকোনমি নিয়েও নিলামে অবিক্রিত থাকেন কি করে। গত এক বছরে তাই পরিশ্রম করে গেছেন, দিল্লীর হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন দুর্দান্ত। ছিলেন কেবলমাত্র একটি সুযোগের অপেক্ষায়। 

এবারের আইপিএলেও খেলার কথা ছিল না তাঁর। কিন্তু শেষমূহুর্তে তাঁকে দলে ভেড়ায় দিল্লী ক্যাপিটালস। যদিও একাদশের খেলোয়াড় হিসেবে নয়, বরং তাঁকে সবাই ভেবেছিলো খলিল আহমেদ, আনরিখ নর্কে, মুকেশ কুমারদের বদলি হিসেবে বেঞ্চে থাকবেন। যথারীতি প্রথম পাঁচ ম্যাচে সুযোগ পাননি, নখদন্তহীন দিল্লী জিততে পারেনি একটি ম্যাচেও। 

জয়ের জন্য মরিয়া দিল্লী অধিনায়ক তাই শেষ বাজিটা ধরলেন অভিজ্ঞ ইশান্তের উপরই। খলিল আহমেদের ইনজুরির সুবাদে দলে ফিরলেন অভিজ্ঞ পেসার। দুই বছর বাদে ফিরেই বুঝিয়ে দিলেন তাঁকে বাইরে বসানোর ফলে আদতে ক্ষতি হয়েছে ক্রিকেটেরই!

মাঠের বাইরে থাকলেও পারফরম্যান্সে যে মরচে পড়েনি সেটা বুঝা গিয়েছে প্রথম ওভারেই। কলকাতার বিপক্ষে চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে শিকার করেছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং সুনীল নারাইনের গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট। তাঁর দুরন্ত বোলিং নৈপুণ্যেই মৌসুমের প্রথম জয় পেয়েছে দিল্লী ক্যাপিটালস। 

অথচ এমন পারফরম্যান্সের পরেও ইশান্ত রয়ে গেছেন আড়ালেই। খলিল ফিরলে হয়তো আবারো বেঞ্চেই বসতে হবে। তবু ইশান্ত হাল ছাড়বেন না, কারণ তিনি যে হারার আগে হেরে যান না। লড়ে যাবার মন্ত্রটা তিনি আজো মেনে চলেছেন সেই প্রথম দিনের মতো। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link