More

Social Media

Light
Dark

সেদিন অর্জুনাকে কিছুই বলেননি হিলি!

১৯৯৫-১৯৯৬ মৌসুমের শ্রীলঙ্কা দলের সেই অস্ট্রেলিয়া সফরের পুরোটাই যেন ছিল নাটকীয়তায় ভরা। বক্সিং ডে ম্যাচটাতে মুত্তিয়া মুরালিধরণের নো বলের ঘটনা তো সবাই জানে। পুরো বিশ্বই যেন কেঁপে উঠেছিল ওই এক কাণ্ডে।

তবে সেই নাটকীয় সফরের সবিশেষ ঘটনা সফরের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটাতে।

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তিতুল্য উইকেটরক্ষক ইয়ান হিলির বিরুদ্ধে ন্যাক্কারজনক স্লেজিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু আদতে যে স্লেজিং ঘটেইনি, অন্তত হিলি তো এখনও তাই বলছেন!

ads

ঘটনাটা বলে নেওয়া যাক। ম্যাচ চলাকালীন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার হঠাৎ পায়ে ক্রাম্প করা শুরু করে। তিনি একজন রানার এর জন্যে আবেদন করেন। ঘটনার শুরু এরপরই!

মিথ অনুসারে, সে সময় নাকি ইয়ান হিলি অর্জুনার কাছে এগিয়ে আসেন আর বলেন, ‘মোটা হওয়ার জন্যে তো তুমি রানার পাবে না।’

ব্যাস, সাথে সাথেই ক্ষেপে যান শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। এমনিতেই তিনি ছিলেন আক্রমণাত্মক অধিনায়ক, মাঠে থাকা অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মার্ক টেইলরকে ডেকে নিয়ে বলেন ইয়ান হিলিকে মাঠ থেকে বের করে দেবার জন্যে।

ঘটনা এরপর শান্ত হয়েছে বটে, কিন্তু এই ঘটনার রেশ ইয়ান হিলিকে টানতে হচ্ছে এখনও। এই একটা ঘটনাই উঠে এসেছে অনেক অনেক ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট বইয়ের পাতায়, ইয়ান হিলিকে তো ন্যাক্কারজনক স্লেজারও আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু ইয়ান হিলি বারবারই বলেছেন তিনি এমন কিছুই বলেননি!

ওয়াইড ওয়ার্ল্ড অফ টিভি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়ান হিলি আবার বলেছেন, ‘এমন কিছুই ঘটেনি!আমি যেটা বলেছিলাম, ম্যাচে আনফিট থাকার জন্যে কোন রানার দেওয়া হয়না। সে তখন আমাকে বলে, তাঁর পায়ে ক্রাম্প করছে। তখন আমি তাকে বলি, নিজের দিকে তাকাও। তোমার ক্রাম্প করছে কারণ তুমি মোটা। পুরো ঘটনা এটুকুই।’

‘এরপর অর্জুনা মিড উইকেটে ভয়ংকরভাবে আমার দিকে তেড়ে আসে। উগ্রভাবে বলে আমাকে মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে। আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম, আমি ওরকম কিছুই বলিনি।’ যোগ করেন তিনি।

তবে এরপরও কিন্তু ইয়ান হিলি শান্ত হয়ে যাননি। তিনি মাঠে থাকা আম্পায়ার পিটার পার্কারকে ডেকে পাঠান আর বলেন, অর্জুনা যেটা করছে সেটা ঠিক নয়। সে নিজের মত ধীরগতির রানার এর বদলে চাইছে দ্রুত দৌড়াতে পারা সনাথ জয়াসুরিয়াকে।

ইয়ান হিলি বলেছেন, ‘ঘটনাটা মোটেই নোংরা ছিল না। যেভাবে সব বই, ম্যাগাজিন গুলোতে লেখা হচ্ছে, আমি ওকে সেটা বলিই নি।’

এরপর হিলি অর্জুনার প্রশংসা কররেও পিছপা হননি, ‘আমার পারিবারিকভাবে অর্জুনার সাথে সখ্যতা আছে। আমি ওর সাথে অনেকবার ডিনারও করেছি। সত্যি বলতে, অর্জুনা অসাধারণ অধিনায়ক। সে যা করেছে ঐ সময়গুলোতে, সবকিছুই শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের জন্যে দরকারী ছিল।’

তুলনা দেওয়ার জন্যে তিনি খুঁজে এনেছেন বিরাট কোহলিকে। হিলি মনে করেন, ঠিক কোহলির মতই ওই সময় শ্রীলঙ্কা দলের মানসিকতা পাল্টে দিয়েছিলেন অর্জুনা।, ‘এখন কোহলি ভারতের জন্যে যা করছে, অর্জুনা সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার জন্যে তাই করত। দলের মাইন্ডসেটটা সে পরিবর্তন করে দিয়েছিল। দলে একটা প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব এনে দিয়েছিল।’

ইয়ান হিলির এই কথাও যদি সেই ঘটনার মিথ ঢাকতে পারে!

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link