More

Social Media

Light
Dark

ব্যাটিং ঝড়ের পর বৃষ্টি, এরপর বাংলাদেশের জয়

সাগরিকার মেঘাচ্ছন্ন আকাশ বিপত্তিই বাড়িয়েছিল বটে। বাংলাদেশের সম্ভাব্য জয়ের পথে তীব্র এক আশঙ্কা সৃষ্টি করেছিল। তবে বেরসিক বৃষ্টি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জয়ের পথে আর বাঁধা হতে পারেনি। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে এ দিন টসে জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং। বাংলাদেশের ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন দুই ওপেনার লিটন দাস আর রনি তালুকদার। দুজনের ব্যাটিং তাণ্ডবে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’তে ৬ ওভারে ৮১ রানের উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। যেটি আবার এখন ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ডও।

লিটন-রনির জুটি ভাঙে দলীয় ৯১ রানে। ব্যক্তিগত অর্ধশতক থেকে ৩ রান দূরে থাকতে ক্রেইগ ইয়ংয়ের বল মিড অনে ক্যাচ তুলে দেন লিটন। এর ফলে ৪ চার আর ৩ ছক্কায় সাজানো ২৩ বলে ৪৭ রানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে তাঁর।

ads

লিটন ফিফটি না পেলেও এ দিন অর্ধশতক তুলে নিতে ভুল করেননি আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। ২৪ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেলেন এ ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ৩৮ বলে ৭ চার আর ৩ ছক্কায় ৬৭ রানে থামেন তিনি।

অবশ্য লিটন-রনি ফিরে গেলেও বাংলাদেশের ইনিংসের রানগতি আর থামেনি। ফিনিশার রোলে ব্যাট করা শামীম পাটোয়ারি এ দিন সুযোগ পান চারে। আর সুযোগ পেয়েই আইরিশ বোলারদের উপর চড়াও হন তিনি। ২০ বলে খেলেন ৩০ রানের কার্যকরী এক ইনিংস।

ইনিংসের শেষ দিকে এসে সাকিবও বাউন্ডারির উপরেই নজর দিয়েছিলেন। আর তাতেই ১৯ ওভারের আগে ২০০ রান অতিক্রম করে বাংলাদেশ। অবশ্য ২০ ওভারের কোটা শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির কারণে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তাই ১৯.২ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২০৯ রান রেখেই বাংলাদেশ ইনিংস বিরতিতে যায়।

আর এর পরেই ভারী বর্ষণ শুরু হয়। প্রায় ঘন্টা দেড়েক বৃষ্টির পর আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে আসে। তবে ততক্ষণে আইরিশদের জন্য ওভার কর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রান।

১০৪ রানে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের উপর চড়াও হতে শুরু করেন দুই আইরিশ ওপেনার পল স্টার্লিং আর রস অ্যাডায়ার। নাসুম আহমেদকে প্রথম বলেই ডাউন দা গ্রাউন্ডে গিয়ে চার মেরে ইনিংস শুরু করেন পল স্টার্লিং। এরপর ১ বল বাদে ঐ ওভারেই সুইপ করে টানা দুটি চার মারেন তিনি। ওভারের শেষ বলে চার মারেন রস অ্যাডায়ারও। প্রথম ওভারেই ১৮ রানের দারুণ একটা সূচনা পায় আয়ারল্যান্ড।

আয়ারল্যান্ডের তাণ্ডব অব্যাহত থাকে পরের ওভারেও। এবার স্টার্লিং-অ্যাডায়ার তাণ্ডবের শিকার হন মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের এ ওভার থেকে আইরিশরা তোলে ১৫ রান। ২ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৩৩ রান যোগ করে তখন লক্ষ্যের পথে ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল আয়াল্যান্ড। তবে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন হাসান মাহমুদ। ১০ বলে ১৩ রান করে হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান রস অ্যাডার।

এরপরই ছন্দপতন। দৃশ্যপটে এবার আবির্ভূত হন তাসকিন আহমেদ। আইরিশদের ইনিংসে একাই ধ্বস নামিয়ে দেন এ পেসার। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথম বোলিং প্রান্তে এসেই তুলে নেন ৩ উইকেট। শুরুটা করেন লরকান টাকারকে বোল্ড করে। এরপর দুই বল বাদে টানা দুই বলে নেন দুই উইকেট। টানা দুই বলে পল স্টার্লিং আর জর্জ ডকরেলকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন অবশ্য। তবে তা শেষমেশ হয়নি।

তাসকিন হ্যাটট্রিক না পেলেও ঐ এক ওভারেই আইরিশদের ইনিংসের মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায়। হ্যারি টেক্টর আর ডিলানি মিলে লক্ষ্যের পথে হেঁটেছিলেন অবশ্য। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের সেই প্রচেষ্টা আর সফল হয়নি। আইরিশদের ইনিংস থামে লক্ষ্য থেকে ২২ রান দূরে। ২২ রানের এ জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link