More

Social Media

Light
Dark

রনির রণ-ভেরী শোনা যায়

ব্যবধানটা বেশ লম্বা। প্রায় আট বছরের অপেক্ষার প্রহর শেষে রনি তালুকদার নিজেকে নতুন রুপে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। ২০১৫ সালের পর এই বছরই তাঁর হাতে আবার তুলে দেওয়া হয় জাতীয় দলের জার্সি। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে নিজের পাওয়া এই সুযোগ লুফে নিয়েছেন দু’হাত ভরে। পেয়ে গেছেন নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি।

২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় রনি তালুকদারের। সেবার তিনি খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ঘরের মাঠে আলো ছড়াতে হয়েছিলেন ব্যর্থ। একটি মাত্র ম্যাচ খেলেই তিনি হারিয়ে গেলেন। ফিনিশার রনি তালুকদার নিজের ক্যারিয়ারের ফিনিশ লাইনেই পৌঁছে গিয়েছিলেন। সবাই তেমনটাই ধরে নিয়েছিল।

তবে গ্রীক পুরাণের ফিনিক্স পাখির গল্পে সবাই উজ্জীবিত। তাইতো ফিরে আসার অদম্য ইচ্ছে ভর করে সবার মাঝেই। তবে সবাই ফিরে আসতে পারে না। প্রত্যাবর্তনের সেই কঠিন পথটা সবাই পারি দেয় না। রনি করে দেখিয়েছেন। তিনি একটা উদাহরণ সৃষ্টি করে দিয়ে গেছেন। ৩২ বছর বয়সে জাতীয় দলে ফিরে এসেছে। কেবল ফিরে এসেই ক্ষান্ত হবেন তিনি? সেটা ভাবা নির্ঘাত বোকামি। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তো তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন এই দিনটির জন্য।

ads

অবশেষে বহুল আকাঙ্ক্ষিত সেই সুযোগ এল। আর তিনি নিজের ভেতর থাকা সকল আগ্রাসনের জানান দিলেন। মাঠের ক্রিকেটে বুঝিয়ে দিলেন নিজের সামর্থ্য। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি পেয়ে গেলেন নিজের ছোট্ট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। ৬৭ রানে থেমেছেন তিনি। তবে এর আগে আইরিশ বোলারদের একহাত দেখে নিয়েছেন। লিটন দাসের সাথে জুটি বেঁধে বাংলাদেশের পক্ষে রেকর্ড গড়েছেন। দলের সংগ্রহ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তিনি।

১৭৬ স্ট্রাইকরেটে তিনি ব্যাটিং করেছেন। তিনখানা বিশাল ছক্কা হাঁকানোর পাশাপাশি সাতটি বাউন্ডারি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে নিজেকে থিতু করে ফেলেছেন, সে কথা বলাই যায়। এই সুযোগটা তিনি নিজে আদায় করে নিয়েছেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

নিজের ফিনিশার রোল ঝেড়ে ফেলে নতুন এক রোলে তিনি জাতীয় দলে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের তিনটি ম্যাচেই তাঁর উপর টিম ম্যানেজমেন্ট রেখেছিল ভরসা। তিনি বড় কোন ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে ইনিংসের শুরুতে একটা বাড়তি গতি তিনি যুক্ত করেছেন প্রতি ম্যাচে। তাইতো আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও তিনি ছিলেন প্রথম পছন্দ।

চট্টগ্রামের উইকেট স্বাভাবিকভাবেই বেশ রানপ্রসবা। সেই উইকেটের দাঁড়িয়ে তিনি স্রেফ তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন। তাঁর ব্যাটে ভর করেই বাংলাদেশ পাওয়ার প্লে-তে নিজেদের রেকর্ড পরিমাণ রান সংগ্রহ করেছে। অবশ্য তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে আরেক প্রান্তে লিটন দাসও ব্যাট চালিয়েছেন আপন গতিতে। লিটন ফিরে গেলেও নিজের ইনিংসটি এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন।

তাঁর সেই ইনিংসের বদৌলতে মাত্র ৮.৫ ওভারে ১০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেটাও দলীয় এক রেকর্ড। এর আগে এত অল্প সময়ে ১০০ রানের মাইল ফলক ছুঁয়ে দেখতে পারেনি টাইগাররা। রনির ফেলে যাওয়ার কাজটুকু এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দলের বাকি ব্যাটাররা। শেষমেশ রান পাহাড়ের চূড়ায় চড়ে বসে বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link