More

Social Media

Light
Dark

অধিনায়ক কোহলি কী ব্যর্থ?

ব্যাটসম্যান হিসেবে এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা তিনি, এ নিয়ে তর্ক নেই খুব একটা। কিন্তু যখনই প্রসঙ্গ আসে অধিনায়কত্বের তখন বেশির ভাগ মানুষই বিরাট কোহলিকে পাশ মার্ক দিতে চান না। এর সবচেয়ে বড় কারণ বোধহয় কোহলির পূর্বসূরী মহেন্দ্র সিং ধোনি।

অধিনায়ক হিসেবে সম্ভাব্য সব জেতা ধোনি সাফল্যের মাত্রাটাকে এমন এক জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন যে অনেক ভালো রেকর্ড থাকার পরেও শুধুমাত্র আইসিসি ট্রফি না জেতার কারণে কোহলিকে ব্যর্থ অধিনায়ক বলে রায় দেন অনেকেই।

কিন্তু, আইসিসি ট্রফির হিসেব বাদ দিলে কোহলি সফল অধিনায়ক বলা ছাড়া উপায় নেই কোনো। পরিসংখ্যানও সাক্ষ্য দেবে এই যুক্তির পক্ষে। লাল বলের ক্রিকেটে ভারতকে ৬৮ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিরাট। জিতেছেন ৪০ ম্যাচে। শুধু তাই নয়, টেস্ট ক্রিকেটে ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জেতার রেকর্ডও তাঁর।

ads

ভারতের সফলতম দুই অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলিও পিছিয়ে এই ক্ষেত্রে। ভারতকে ৬০ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে ধোনি জয় এনে দিয়েছেন ২৭ টি তে। আর ৪৯ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে সৌরভ জয় পেয়েছিলেন ২১ টেস্টে। রঙিন পোষাকেও সফলই বলা যায় কোহলিকে। ৯৫ টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ৬৫ টিতেই জিতেছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও ৫০ ম্যাচে জয় ৩০ টিতে।

তবে শুধুমাত্র পরিসংখ্যানই নয়। ভারতের পেস আক্রমণ বিশ্বের অন্যতম সেরা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কোহলির আমলেই। এছাড়াও ফিটনেস ইস্যুতে দলে কড়াকড়ি চালু করেছিলেন কোহলি যার ফল পেয়েছেন মাঠের ক্রিকেটেও।

ঘরের মাটিতে প্রায় অপারেজয় হলেও বিদেশের মাটিতে খুব এক টেস্ট সিরিজ জিতত না ভারত। কোহলির অধিনায়কত্বেই বিদেশের মাটিতে নিয়মিত টেস্ট জিততে শুরু করে ভারত। দীর্ঘ ৪২ মাস টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানে থাকার পাশাপাশি প্রথম বারের মত অনুষ্ঠিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও খেলে ভারত।

এত সব সাফল্যের পরেও শুধুমাত্র আইসিসি ট্রফি না জেতার কারণে ব্যর্থ অধিনায়ক বলা হলে কোহলির প্রতি কিছুটা অন্যায়ই করা হবে। কোহলি নিজেও অবশ্য নিজেকে ব্যর্থ অধিনায়ক ভাবেন না।

তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল খেলেছি আমরা। ২০১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলেছি। এরপরেও সবাই আমাকে ব্যর্থ অধিনায়ক বলে। কিন্তু আমি নিজেকে কখনোই ট্রফি দিয়ে বিচার করি না।’

আইপিএলে নিজের দল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানে কোহলি আরো বলেন, ‘দল হিসেবে যা অর্জন করেছি, দলীয় সংস্কৃতির যে পরিবর্তন এসেছে এই সময়ে, এই বিষয়টিই গর্বের। যে কোনো টুর্নামেন্ট হয় নির্দিষ্ট কোনো একটা সময়ে, কিন্তু সংস্কৃতি গড়তে দীর্ঘ সময় লাগে। এর জন্য আপনার ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। টুর্নামেন্টে জিততে আপনার যত দৃঢ়তা দরকার, এর জন্য আপনার তার চেয়েও বেশি দৃঢ়তা প্রয়োজন পড়ে।’

অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জিততে না পারলেও খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছেন কোহলি । নিজের খেলা প্রথম বিশ্বকাপেই ট্রফির ছোঁয়ার স্বাদ পেয়েছিলেন। সেই অর্জনের জন্য গর্ববোধও করেন কোহলি, ‘খেলোয়াড় হিসেবে আমি ২০১১ বিশ্বকাপ ও ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছি। অনেক ক্রিকেটারই আছে, যারা কখনো বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। আমি যা জিতেছি, তা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। সত্যি বলতে ২০১১ বিশ্বকাপের অংশ হতে পেরে আমি ভাগ্যবান। শচীন তখন তাঁর ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলে একটি বিশ্বকাপ জিতেছিল। আর আমি প্রথম বার বিশ্বকাপ খেলতে নেমেই জয়ী দলের অংশ হয়েছে।’

‘যদি ক্যারিয়ারে ভুল গুলোর দিকে চোখ দিতে চাই, তখন আমি ক্যারিয়ারে কী সঠিক হয়েছে সেদিকে নজর দিই এবং তা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমার ট্রফি ক্যাবিনেট পরিপূর্ণ হল কিনা সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।’, যোগ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link