More

Social Media

Light
Dark

জুড বেলিংহ্যাম, রিয়ালের হতাশার দোলাচল

বিশ্বকাপের পরের দলবদলে সরব থাকবে রিয়াল মাদ্রিদ – এমনটা যেন অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছিল। অথচ কাতার বিশ্বকাপের পরেই জানুয়ারির দলবদলে নিষ্প্রভ ছিল লস ব্ল্যাংকোসরা। গুঞ্জন আছে বহুদিনের টার্গেট জুড বেলিংহ্যামের আশাও এবার ছাড়তে হচ্ছে তাঁদের। 

কাসেমিরো ক্লাব ছেড়েছেন। লুকা মদ্রিচ, টনি ক্রুসদের বয়স হয়েছে। আগের খেলার ধারও কমেছে। ফলে গত গ্রীষ্মেই নতুন করে মিডফিল্ড সাজানোর লক্ষ্যেই এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গা, অরেলিয়ের শুয়ামেনিকে দলে এনেছেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ।

এছাড়া দানি সেবায়েস তো আগে থেকেই ছিলেন রিয়ালের বেঞ্চে। তা সত্ত্বেও যেন রিয়ালের মিডফিল্ডে কোথাও যেন খামতি রয়েই গেছে, মাঠের খেলাতেও তাঁর ছাপ পড়েছে যথারীতি। এই দুর্দশা কাটাতে বেলিংহ্যামকে পাখির চোখ করেছিল মাদ্রিদ। এবারে শোনা যাচ্ছে তাঁকে হারাতে হচ্ছে দলবদলের বাজারে। 

ads

বিশ্বকাপের আগে থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের রাডারে ছিলেন বেলিংহাম। ২০২০ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে নাম লেখানোর পর থেকেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা তরুণ প্রতিভা হিসেবে। কাতার বিশ্বকাপেও ধরে রেখেছেন সাফল্যের ধারা, নজর কেড়েছেন প্রিমিয়ার লিগের বড় বড় ক্লাবগুলোর। লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তো আগে থেকেই ছিল, এবারে সেই দৌড়ে যোগ দিয়েছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটিও। 

ইউরোপের সেরা দলগুলো আগ্রহী থাকায় বেলিংহ্যামের জন্য নিশ্চিতভাবেই বড় অংকের দাম হাঁকাবে বরুশিয়া। শোনা যাচ্ছে, ম্যানচেস্টার সিটি তাঁর জন্য ১৭০ মিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত খরচ করতেও রাজি আছে। রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম পছন্দ হলেও তাঁরা কি বেলিংহ্যামের জন্য এতোটা খরচ করতে পারবে?

এবারে জানুয়ারির দলবদলের কথাই ধরুন না, এক চেলসিই খরচ করেছে ২৯০ মিলিয়ন ইউরো। মিখাইলো মুরডিককে ৮৮ মিলিয়ন ইউরোর পাশাপাশি এনজো ফার্নান্দেজকে দলে এনেছে ১০৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। ফলে ১৩০ মিলিয়নের নিচে বেলিংহামকে পাওয়া সম্ভব না এটা একপ্রকার নিশ্চিত।

অন্যদিকে, লা লিগার সবগুলো দল মিলে এবারের দলবদলে খরচ করেছে মোটে ২৫ মিলিয়ন। দুই দেশের লিগের দলগুলোর অর্থনৈতিক বৈসাদৃশ্য বুঝিয়ে দেয় কেন মাদ্রিদ সুপার লিগের পক্ষপাতী ছিল। তাঁরা বুঝতে পেরেছিল বড় অংকের দলবদল কেবল ব্যক্তি মালিকানাধীণ ক্লাবগুলোই করতে পারছে। 

মাদ্রিদ অবশ্য বেলিংহামকে পাবার জন্য হাল ছাড়বে না। তবে তাঁদের ট্রান্সফার ফি এবং ফুটবলারের বেতন-বোনাস নিশ্চিতভাবেই প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর চাইতে অনেক কম হবে। তবে যদি বেলিংহাম কেবল মাদ্রিদেই আসতে চান ক্যারিয়াকে ভিন্ন উচ্চতায় নিতে সেক্ষেত্রে উল্টে যেতে পারে পাশার দান।

যেমনটা ঘটেছিল মোনাকো থেকে অরেলিয়ের শুয়ামেনিকে ভেড়ানোর সময়। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো বেশি বেতন এবং বোনাসের প্রস্তাব দিলেও শুয়ামেনি কেবল মাদ্রিদেই আসতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর বদলে আরো বেশ কয়েকজন ফুটবলারের দিকে হাত বাড়াতে পারে মাদ্রিদ।

বেলিংহামেরই জাতীয় দলের সতীর্থ ডেকলান রাইস খানিকটা একই ঘরানার ফুটবলার এবং মানেগুণে কোনোভাবেই পিছিয়ে নন। তবে সামনের মৌসুমের দলবদলে আর্সেনালেই যোগ দেয়ার সম্ভাবনা বেশি রাইসের। এছাড়া কম দামেই অভিজ্ঞ এনগোলো কান্তেকে পেতে পারে মাদ্রিদ। যদিও ফরাসি এই মিডফিল্ডারকে নেবার জন্য অনেকদিন ধরেই লেগে আছে তাঁদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। 

তবে লিভারপুলের পয়েন্ট তালিকার বাজে অবস্থানের কারণে বেলিংহামকে দলে পাবার দৌড়ে এগিয়ে গেছে ম্যানচেস্টার সিটি। কারণ বেলিংহাম নিশ্চিতভাবেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে চাইবেন। লিভারপুল এই মূহুর্তে আছে পয়েন্ট তালিকার এগারো নম্বরে, বর্তমান ফর্ম অনুযায়ী সেরা চারে তাঁদের থাকার সম্ভাবনা বেশ কম।

এছাড়া বেলিংহামের পরিবার চায় ঘরের ছেলে ঘরেই ফিরে আসুক। ক্যারিয়ারটা এগিয়ে নিয়ে যাক ইংল্যান্ডেই। সেই কারণেই কিনা বেলিংহামের দলবদলে পিছিয়ে গেছে মাদ্রিদ, খুঁজতে হচ্ছে নতুন বিকল্প। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link