More

Social Media

Light
Dark

লিটন ভাবায়, বিস্ময় জাগায়!

খুব সাদামাটা একটা ইনিংসই তো। সংখ্যাগুলো দেখলে এই ইনিংস নিয়ে কেউই হয়তো মাথা ঘামাবেন না। তাও আবার ব্যাটসম্যানটার নাম লিটন দাস। যার ঝুলিতে আছে অসংখ্য চোখ জুড়ানো ইনিংস। সেই লিটনের এমন একটা ধীর স্থীর অর্ধশতক নিয়ে মাতামাতির কী আছে? আসলে লিটন খেলেছেন বলেই এই ইনিংস হয়ে উঠেছে অনন্য, বিস্ময়কর।

লিটন শট খেলতে ভালোবাসেন। উইকেটের চারপাশে তাঁর বাহারি শট পুরো ক্রিকেট দুনিয়া মুগ্ধতা ছড়ায়। দর্শকরা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে লিটনের দিকে। এত শট, এত সৌন্দর্য তিনি কোথায় পেলেন। লিটন কী ম্যাজিক জানেন?

আজ অবশ্য সিলেটে দেখা গেল তাঁর ঠিক উল্টো চিত্র। লিটন শট খেললেন পরিমিত। নিজেকে গুটিয়ে নিলেন। উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টাটাই প্রাধান্য পেল। সিলেটের উইকেট দিনের বেলা কেমন আচরণ করে তা বোঝার জন্য ছোট্ট একটা উদাহরণ দিল। ছুটতে থাকা সিলেট স্ট্রাইকার্স এই উইকেটে গতকাল ১৮ রান করতেই হারিয়ে ফেলেছিল ৭ উইকেট।

ads

অর্থাৎ দিনের শুরুতে এই উইকেট কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সেই উইকেটেই আজ ওপেন করতে নেমেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও লিটন দাস। দুজনে মিলে পাওয়ার প্লেতে করতে পারলেন ৩৩ রান। লিটন নিজের প্রথম ৩০ বল খেললেন একশোরও কম স্ট্রাইকরেটে।

এত ধীরগতিতে খেলা এই ইনিংসটাও নজর কাড়লো। রান করাটা কতটা কঠিন ছিল তা সবচেয়ে বেশি বুঝতে পেরেছেন রিজওয়ানই। তিনি বারবার সিঙ্গেল নিয়ে লিটনকে স্ট্রাইক দিয়ে দিচ্ছিলেন। কেননা এই উইকেটেও লিটন সাবলীল ক্রিকেট খেলতে পারছিলেন ।

যে লিটন অ্যাডিলেডে ভারতের বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে ঝড় তুলেন সেই লিটনই আবার কী করে এমন ইনিংস খেলতে পারেন? বিস্ময় জাগায়, ভাবায়। বল ব্যাটে আসছে, ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডেয়াদের সপাটে মারছেন। বোলারদের দিশেহারা করে তুলছেন। সেই লিটনকে তো আমরা সবাই চিনি।

সেই লিটনই আবার এতটা রূপ বদলে ফেলেন কী করে। একেবারে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে গেলেন ৪২ টা বল। পাওয়ার প্লের লোভ সামলে দলের জন্য খেললেন। তিনি জানেন এখানে ১৪০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা সম্ভব না। যতটুকু সম্ভব লিটন সেটাই করলেন। এই পরিমিত বোধটাই বুঝি তাঁকে অনন্য করে তোলে।

সিলেটের উইকেট, নাহিদুল ইসলামের ঘূর্নি, নাহিদ রানা ১৫০ কিলোমিটার গতিতে ছুটে আসা বল কোন কিছুই তাঁকে থামাতে পারেনা। তিনি নিজের ব্যাটিংটা করে যান। এই যে নিজেকে চিনতে পারা, সেটাই তো লিটনের সবচেয়ে বড় অর্জন।

দলকে একটা ভিত্তি গড়ে দিতে ৪২ বল থেকে খেললেন ৫০ রানের ইনিংস। স্ট্রাইকরেট মোটে ১২০ ছুঁই ছুঁই। এই সাদামাটা ইনিংসেও লিটন নিজের ছাপ রেখে যান। একজন শিল্পী যেমন করে তাঁর চিত্রকর্মে স্বাক্ষর দেন।

লিটন যখন এই অর্ধশতক পূরণ করে প্যাভিলিয়নে ফিরছেন তখন রিজওয়ান ১৭ বল থেকে করেছেন মাত্র ১৫ রান। লিটন যতক্ষণ ছিলেন ততক্ষণ তিনি লিটনের উপরই ভরসা করেছেন। লিটন আউট হবার পর হাল ধরেছেন নিজেই।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link