শচীন-বিরাট নাকি ভিভ?


আর মাত্র ৪ টি সেঞ্চুরি! তাহলেই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি সংখ্যায় শচীন টেন্ডুলকারকে টপকে যাবেন বিরাট কোহলি। একই সাথে ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি মাইলফলক স্পর্শ করার হাতছানি তো থাকছেই।

দীর্ঘ ৩ বছরের সেঞ্চুরি খরার পর আবারো নিজের পুরনো অভ্যাসে ফিরে গেছেন বিরাট কোহলি। শেষ ৪ ওয়ানডেতে হাঁকিয়েছেন ৩ টি সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে এ বছরেই ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডটা নিজের করে নিতে পারেন কোহলি। এমনিতে প্রায় ৫৮ গড়ে ১২৭৭৩ রান করা কোহলি শ্রেষ্ঠত্বের দৌড়ে আগে থেকেই ছিল। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মিলিয়ে ৭৪ টি সেঞ্চুরি করেছেন। শচীনের শত সেঞ্চুরির রেকর্ড থেকে রয়েছেন ২৬ টি সেঞ্চুরি দূরে।

৩৪ বছর বয়সী কোহলির জন্য এই রেকর্ডটা ভাঙা বেশ কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। তবে জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশ্লেষক সঞ্জয় মাঞ্জারেকার কোহলিকে শুধু ওয়ানডে স্পেশালিস্ট হিসেবেই তকমা দিচ্ছেন। তাঁর কাছে শচীন টেন্ডুলকারই সর্বকালের সেরা ব্যাটার। বিরাট, শচীনের তুলনা টানতে গিয়ে সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে এমন এক মন্তব্যই করেছেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার।

ads

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনি বর্তমান সময়ের সাথে ২০ বছর আগের ক্রিকেটের তুলনা করতে পারেন না। বিরাট আমার কাছে পুরোপুরিই ওয়ানডে ক্রিকেটার। আর সব মিলিয়ে শচীন সন্দেহাতীত ভাবেই সর্বকালের সেরা। বিরাটের সাথে ওয়ানডেতে আমি আরেকজনের নাম যুক্ত করতে পারি। তিনি মহেন্দ্র সিং ধোনি।’

তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বকালের সেরার কথা বলতে গিয়ে একটা চমকই দিয়েছেন সঞ্জয় মাঞ্জারেকার। তাঁর মতে, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যাটার ভিভ রিচার্ডস।

এ নিয়ে মাঞ্জরেকার বলেন, ‘ভিভের কাছাকাছি কেউ পৌছাতে পারবে না। ভিভ ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত খেলেছিলেন। সেই পুরনো সময়ে ভিভ কতটা দুর্দান্ত ছিলেন তা তাঁর পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। ঐ সময়টার টপ ক্লাস ব্যাটার ছিলেন গর্ডন গ্রিনিজ। তো ওয়ানডেতে তাঁর গড় ছিল ৪৫ এর মতো আর ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ছিল ৬০ এর কিছু বেশি। সেই সময়ে এটাকেই বেশ ভাল একটা পরিসংখ্যান বলে বিবেচনা করা হতো। তো সেখানে ভিভ ব্যাটিং করেছেন ৯০ স্ট্রাইক রেটে আর গড় ছিল ৪৭। এখনকার সময়ে হয়তো এটি আহামরি কিছু নয়। কিন্তু আশির দশকের ক্রিকেট এতো সহজ ছিল না।’

তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘ভিভের বিশ্বকাপের ফাইনালে একটি সেঞ্চুরি রয়েছে। আরো অনেক বড় ম্যাচে তিনি রান করেছেন। আর এখনকার মতো সে সময়ে এত ম্যাচ হতো না। তাই ভিভের পরিসংখ্যানও ততটা সমৃদ্ধ হয়নি। কিন্তু আশির দশকে ম্যাচ খেলার মাঝে দীর্ঘ বিরতির কারণে ছন্দ ধরে রাখা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু তারপরও ভিভ রিচার্ড নিজেকে ধারাবাহিকভাবেই সে সময়ে মেলে ধরেছিলেন। এই সময়ের বিবেচনায় বিরাট কোহলি অবশ্যই সেরা। কিন্তু আমার কাছে ওয়ানডের সর্বকালের সেরা ব্যাটার ভিভ রিচার্ডস। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই আমার মাঝে।’

আশি দশকের খুনে মেজাজের ব্যাটিং দিয়েই পরিচিত ছিলেন ভিভ রিচার্ডস। ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে ১৫২৬১ রান করেছেন। তবে টেস্ট ও ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই সময়ের বিবেচনায় ভিভের পরিসংখ্যান বেশ ঈর্ষণীয়। টেস্টে ২৪ সেঞ্চুরিতে তাঁর ব্যাটিং গড় ৫০.২৩ আর ওয়ানডেতে ১১ সেঞ্চুরিতে ব্যাটিং করেছেন ৪৭ গড়ে। ভিভ ছিলেন নিজের সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে থাকা একজন ব্যাটার।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link