More

Social Media

Light
Dark

গাড়ি দুর্ঘটনা, গুরুতর আহত ঋষাভ পান্ত

জীবনে বলা হয় অনিশ্চিত ভবিষ্যত; একটু পরেই কি ঘটবে সেটি জানা থাকে না কারোই। কখনো সৃষ্টি হয় অপ্রত্যাশিত আনন্দের, কখনো আবার ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। অনিশ্চিত ভবিষ্যত এবার অভিশাপ হয়ে এসেছে ভারতীয় ক্রিকেটার ঋষাভ পান্তের জীবনে। মারাত্মক এক গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এই উইকেট কিপার ব্যাটার। পরবর্তীতে দ্রুতই তাঁকে নেয়া হয়েছে দেরাদুনের একটি হাসপাতালে।

অবশ্য ঋষাভ পান্তের শারিরীক ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে এখনো পুরোপুরি জানা যায় নি। এই ক্রিকেটারের ইমার্জেন্সি অপারেশন পরিচালনা করেছেন ডা: সুশীল নগর। তিনি জানান যে, পান্তের কপালে অনেক ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বাম চোখের উপরেও হয়েছে একটি ক্ষত। আবার হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে গিয়েছে তাঁর। এবং পিঠের চামড়া অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও প্রথম এক্স-রে প্রতিবেদনে এখনো কোন ফ্র্যাকচারের কথা জানা যায়নি। আশা করা হচ্ছে যে, আপাতত বিপদমুক্ত আছেন ২৫ বছর বয়সী এই তারকা।

প্রাথমিক চিকিৎসার পর সকাল ছয়টায় দেরাদূনের ম্যাক্স হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ঋষাভ পান্তকে। এই হাসপাতালে পান্তকে পুনরায় এমআরআই সহ বিভিন্ন স্ক্যান করা হবে। এরপরই জানা যাবে ঠিক কতটা চোট পেয়েছেন এই তরুণ। তাঁর শারিরীক অবস্থা পুরোপুরি বোঝার পরেই উন্নত চিকিৎসা শুরু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ডাক্তাররা।

ads

 

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। মাঝরাতের পরের কোন একটা সময় জীবনের অন্ধকার এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন রিশভ পান্ত। এদিন উত্তরাখণ্ডের রূরকিতে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি; ন্যাশনাল হাইওয়ে-৫৮ এর উপরেই মুখোমুখি হন এই দুর্ঘটনার। এরপর সাময়িকভাবে এখানকার স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল এই উইকেটরক্ষককে।

উত্তরাখণ্ড পুলিশের মহাপরিচালক অশোক কুমারকে এই ব্যাপারে জানান যে, ‘ভারতীয় ক্রিকেটার রিশভ পান্তের গাড়িটি ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছিল রূরকির কাছে মোহম্মদপুর জাটে। পান্ত যা বলেছিলেন তা অনুসারে, গাড়ি চালানোর সময় তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং ফলস্বরূপ গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারের সাথে ধাক্কা খেয়ে আগুন ধরে যায়। তাঁকে প্রথমে রূরকি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল যেখান থেকে দেরাদুনের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।’

২০২২ সালে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন রিশভ পান্ত। এই বছর টেস্ট ফরম্যাটে ভারতের সেরা ব্যাটার তিনি – ৭ ম্যাচে মোট ৬৮০ রান করেছেন এই ব্যাটার। ৬১ এর বেশি গড়ে ব্যাটিং করা পান্ত এক বছরেই দুইটি সেঞ্চুরি এবং চারটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজেও উজ্জ্বল ছিলেন পান্ত। প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানের পাশাপাশি দ্বিতীয় টেস্টে করেছেন যথাক্রমে ৯৩ এবং ৯ রান। মিরপুরের বোলিং স্বর্গে এসব ইনিংসই মূলত দুই দলের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।

 

এছাড়া বিদায় লগ্নে পৌছে যাওয়া ২০২২ সালে ১২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন ঋষাভ পান্ত। এসময় ৩৭.৩৩ গড় এবং ৯৬.৫৫ স্ট্রাইক রেটে মোট ৩৩৬ রান করেছেন তিনি। পেয়েছেন ১টি শতক এবং দুইটি অর্ধশতকের দেখা। অবশ্য ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে কিছুটা ম্লান ছিলেন রিশভ পান্ত। ২০২২ সালে মাত্র ২১.৪১ গড়ে ৩৬৪ রান করেছেন তিনি; আর বছরজুড়ে ২১ ইনিংস ব্যাট করলেও অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন মোটে একটি।

আপাতত যদিও ছুটিতে আছেন ঋষাভ পান্ত। ঘরের মাঠে ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া শ্রীলঙ্কা সিরিজের ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের দলে রাখা হয়নি এই তরুণকে। ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষদিকে নিউজিল্যান্ডকে আতিথেয়তা দিবে ভারত। এরপর খেলতে আসবে তাসমান সাগর পাড়ের আরেক দেশ অস্ট্রেলিয়া।

এই দুই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামার প্রস্তুতিই হয়তো নিতে চাইছিলেন ঋষাভ পান্ত। তবে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে বলাই যায় অনির্দিষ্টকালের জন্য খেলার বাইরে ছিটকে গিয়েছেন তিনি। কবে বাইশ গজে ফিরবেন এই আন-অর্থোডক্স ব্যাটার সেটি চোটের বিস্তারিত জানার পরেই বলা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link