More

Social Media

Light
Dark

কে হবেন বাংলাদেশের নতুন কোচ!

তিক্ততার পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তাঁর সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্পর্ক ক্রমশ বেগতিক হয়েছে সময়ের সাথে সাথে। তাছাড়া অন্দরমহলেও নানান কথার প্রচলন ছিল। গুঞ্জনের হাওয়াতে সেটুকুই বোঝা যায়। তবে সব চাপা তিক্ততার সময় এবার শেষ। তিনি বিদায় নিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে। তেমনটা হওয়ার আভাসও পাওয়া যাচ্ছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই।

বাংলাদেশের হাতে অবশ্য খুব বেশি সময় বাকি নেই। আগামী বছরই ভারতের মাটিতে বসতে চলেছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর। সেখানে বাংলাদেশ অন্যতম ফেভারিট দল, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উপমহাদেশের উইকেটে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে নিজেদের দিনে যেকোন দলকে হারিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা রাখে, সেটা নতুন নয়। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জাতীয় দল কোচ শূন্য হয়ে যাওয়া ভীষণ চিন্তার উদ্রেগ ঘটাবে তেমনটাই স্বাভাবিক।

তাইতো অতিদ্রুতই বিসিবিকে খুঁজতে হবে ডমিঙ্গোর উত্তরসূরিকে। সে কাজটা ইতোমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বিসিবি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরবর্তী কোচ হওয়ার শর্টলিস্টে তিন জনের নাম রয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে এবং সেটা বেশ প্রবল। সেই তালিকায় বাংলাদেশের সাবেক কোচ চাণ্ডিকা হাতুরসিংহের নামও রয়েছে। প্রায় বছর তিনেক তিনি ছিলেন টাইগার ক্রিকেটের বস। সেই সময়টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালই কেটেছে।

ads

তিনি বাংলাদেশকে জয়ের ধারায় ফিরিয়েছিলেন। ৯৫টি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ তাঁর অধীনে, এর মধ্যে ৪৩ শতাংশ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ঠিক এখান থেকেই শুরু বাংলাদেশের মাথা তুলে দাঁড়ানোর দিন। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ সমীহ আদায় করা শুরু করে তাঁর আমল থেকেই। তবে শেষ অবধি তাঁকেও বিদায় নিতে হয়েছিল। নানামুখী বিতর্ক আর দলের সিনিয়র খেলোয়াড়দের সাথে মনমালিন্য। সবকিছু মিলিয়ে ২০১৭ সালের দিকে তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান।

এরপর তিনি শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্বও পালন করেন। তবে সেখানোও বিতর্কের মুখে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবুও তিনি বিসিবির পছন্দ তালিকায় উপরের দিকেই আছেন। হাতুরসিংহে ছাড়াও সেই তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকান ল্যান্স ক্লুজনার। তিনি তাঁর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ২০০৯ সালে, ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগের সাথে। এরপর থেকে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে শুরু করে ‘এ’ দলের সাথেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল খুলনা টাইটান্সের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এর আগে অবশ্য ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ, ভারতের রঞ্জি ট্রফির মত জায়গায় কাজ করেছেন তিনি। তবে তাঁর ক্যারিয়রের সাফল্য গাঁথা অধ্যায় হয়ে রইবে আফগানিস্তান ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ততা। ২০১৯ সালে আফগান ক্রিকেটের প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।

তাঁর আমলেই আফগানিস্তান নিজেদের প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায়। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে তিনি দলটিকে এক প্রকার অপ্রতিরোধ্য হিসেবে গড়ে তোলেন। কেবল অভিজ্ঞতার বিচারে বহু ম্যাচ হেরে যায় তাঁর দল। পাশাপাশি ওয়ানডে ক্রিকেটেও আফগানদের সফলতার গ্রাফটা উর্ধ্বমুখিই ছিল। তবুও ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর তিনি তাঁর দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এছাড়া ২০১০ সালের দিকে বাংলাদেশের বোলিং কোচ হওয়ার একটা গুঞ্জনে নিজেকে আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন ক্লুজনার।

সে সময়ে ব্যাটে-বলে হয়নি। তবে এবার ক্লুজনার প্রধান কোচ হওয়ার দাবিদার। তাঁর পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাইকেল হাসিও রয়েছেন বিসিবির শর্টলিস্টে। অভিজ্ঞতার বিচারে তিনি বাকিদের থেকে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছেন। তবে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। তাছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

বর্তমানে মাইকেল হাসি ইংল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। শেষ অবধি কাকে বেছে নেবে বিসিবি সেটা বলা বেশ মুশকিল। তবে নতুন কোচের বেশ একটা ধকল পোহাতে হবে। আগামী বছর টানা খেলার মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। খুব অল্প সময়ই পাওয়া যাবে দলকে নিয়ে আলাদা ভাবে চিন্তা করার। সেই সময়টুকু কাজে লাগাতে হবে তাঁকে। নতুবা ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে তাঁকে হয়ত ছেড়ে দিতে হতে পারে টাইগারদের কোচের দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link