More

Social Media

Light
Dark

ছোট্ট জাদুকরের মোহ!

ফেবারিট হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে এসে প্রথম ম্যাচ হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়েছিল আর্জেন্টিনা। টানা ৩৬ ম্যাচ ধরে অপরাজিত মেসিরা যেন এক নিমিষে হারিয়ে ফেলেন সমস্ত আত্নবিশ্বাস। মেক্সিকো ম্যাচের আগে ভীষণ চাপে ছিল আলবিসেলেস্তেরা। তবে আরও একবার মেসিতে ভর করে পার পেয়েছে আর্জেন্টিনা, মেক্সিকোকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁরা।

পরাজয় ব্যাপারটা এক প্রকার ভুলতেই বসেছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরব ম্যাচের আগে সাড়ে তিন বছর তাঁদের হারাতে পারেনি কোনো দলই। বিশ্বকাপের স্বপ্নে বিভোর দলটাকে মাটিতে নামিয়ে আনে এশিয়ার ঈগলরা। বিশ্বকাপের আগে যে দলটা ছিল ভীষণ শক্তিশালী, এক ম্যাচেই বের হয়ে গিয়েছিল নানা দুর্বলতা। মেক্সিকো ম্যাচের আগে তাই আর্জেন্টিনার পক্ষে বাজি ধরার লোক ছিল কমই। কিন্তু নিজের পঞ্চম এবং শেষ বিশ্বকাপ খেলতে আসা মেসির সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি মেক্সিকানরা। বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে দলকে এগিয়ে নেবার পর জয় নিশ্চিত করা গোলের অ্যাসিস্টও করেছেন ক্ষুদে জাদুকর।

সৌদি ম্যাচের পরাজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে কোচ লিওনেল স্কালোনি এদিন একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন আনেন। পরিবর্তনটা দরকার ছিল, কিন্তু তাই বলে এতগুলো পরিবর্তন আনবেন কোচ এমনটা কেউই ভাবতে পারেননি। মেক্সিকো ম্যাচে জয় ব্যতীত অন্য ফলাফল এলে স্কালোনি নিশ্চিতভাবেই সমালোচিত হতেন।

ads

ম্যাচের প্রথমার্ধে সেটা ফুটেও উঠেছে। মেক্সিকোর রক্ষণভাগের ন্যূনতম পরীক্ষাও নিতে পারেনি আর্জেন্টাইনরা। ছন্দহীন, হতোদ্যম, ছন্নছাড়া এক দলকেই দেখা গিয়েছিল। বরং ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতে পারে আর্জেন্টিনা কারণ মেক্সিকো আরও বেশি বাজে খেলছিল। আর্জেন্টিনা বারবার বলের দখল হারিয়েছে, ভুল পাস দিয়েছে কিন্তু মেক্সিকো দুহাত ভরে সেই সুযোগটা নিতে পারেনি। বক্সের সামনে গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে না ফেললে হয়তো প্রথমার্ধেই ছিটকে যেত আর্জেন্টিনা। 

নতুন নামা দুই ফুলব্যাক গঞ্জালো মন্টিয়েল এবং নাহুয়ের মলিনা ছিলেন ছন্দহীন। রদ্রিগো ডি পল যেন ছিলেন ডাঙায় তোলা মাছের মত, খাবি খাচ্ছিলেন বারবার। রক্ষণচেরা পাস তো দূর, সতীর্থদের পায়ে বলই দিতে পারছিলেন না। অন্যদিকে লাউটারো মার্টিনেজ তো বলেই প্রথম পা ছুঁইয়েছেন ম্যাচের ৫০ মিনিটে এসে। 

অন্যদিকে, মেসিকে কড়া মার্কিংয়ে রেখেছিলেন মেক্সিকান ডিফেন্ডাররা। তবে ক্ষুদে জাদুকরকে কি আর আটকে রাখা যায়! দ্বিতীয়ার্ধে মার্কিংয়ে খানিকটা ঢিল পড়লে বল নিয়ে একাই ছুটছিলেন। কিন্তু সেবার বাজে এক ফাউলে গোলমুখ খোলা সম্ভব হয়নি। ৬৩ মিনিটে আর আটকে রাখা যায়নি, বক্সের বাইরে থেকে মেসির জোরালো শট ঝাঁপিয়ে পড়েও রুখতে পারেননি মেক্সিকোর গোলরক্ষক গিলের্মো ওচোয়া। 

পরবর্তীতে ম্যাচ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে এনজো ফার্নান্দেজের দর্শনীয় এক গোলে জয় নিশ্চিত হয় আর্জেন্টাইনদের। বেনফিকার এই মিডফিল্ডারের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলটা এল বিশ্বকাপেই। এই মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই তরুণ মিডফিল্ডার, পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তাঁকে একাদশে না দেখলে আশ্চর্যই হবেন সবাই। 

পোল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে সামান্য পা হড়কালেই গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হতে পারে আর্জেন্টিনাকে। সেদিনও মেসির দিকেই তাকিয়ে থাকবে সবাই। তবে একা পুরো দলের ভারে ন্যুব্জ মেসির ভারটা খানিকটা কমানোর দায়িত্বটা থাকবে পুরো দলের উপরেই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link