More

Social Media

Light
Dark

কেন বিকল জার্মান ইঞ্জিন!

জাপানের বিপক্ষে জার্মানরা ৪ – ২ – ৩ – ১ ছকে দল নামালেও কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের নির্দেশ মতো আক্রমণের সময় জার্মানরা রুডিগারকে সুইপার হিসাবে ব্যবহার করে ১ – ৩ – ৪ – ২ ছকে চলে যাচ্ছিলেন। গুন্ডোগান রাইট ব্যাক সুলে ও লেফট সেন্ট্রাল ব্যাক শ্লটারবেকের মাঝখানে সিধিয়ে গিয়ে ডিফেন্সিভ থার্ড থেকে বলটা মাঝমাঠে যোগান দিচ্ছিলেন।

সেই সুযোগে লেফট ব্যাক রাম অনেকটা উঠে লেফট উইংগারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছিলেন। আর, তার ফলে লেফট উইঙ্গার উদীয়মান প্রতিভা জামাল মুসিয়েলা ভিতরে সরে এসে বামদিকের হাফ স্পেসটা কাজে লাগাচ্ছিলেন এবং ফলশ্রুতিতে বর্ষীয়ান টমাস মুলার সেকেন্ড স্ট্রাইকারে পরিণত হয়ে হাভার্টজকে সাহায্য করছিলেন। এই কৌশলটা প্রথম অর্ধে কার্যকর হলেও দ্বিতীয় অর্ধে যেন জার্মান ফুটবলারদের ক্লান্তি গ্রাস করল।

প্রপার নাম্বার নাইনের অভাবে কাই হাভার্টজকে দিয়ে স্ট্রাইকারের কাজ চালাতে গিয়ে চেলসির যে দশা হয়েছে জার্মানদেরও একই দশা হল। বর্ষীয়ান টমাস মুলার অতীতের ছায়ায় পরিণত হয়েছেন। তাকে অনেক আগেই তুলে নেওয়া উচিত ছিল।

ads

দলের কোচ ফ্লিক সের্গে গ্যানাব্রিকে বায়ার্ন মিউনিখে থাকাকালীন দারুনভাবে ব্যবহার করলেও আজ ওর উইং বরাবর দৌড় কাজে লাগাতে পারলেন না। সানের অনুপস্থিতিতে গ্যানাব্রিকে বড়ই একা লাগল। বামদিকে ওভার লোডিংয়ের জন্যও রাইট ব্যাক সুলের ওভারল্যাপ ফ্লিক বেঁধে দিয়েছিলেন সেটাও গ্যানাব্রির খেলায় প্রভাব ফেললো।

রুডিগার ভাল খেললেও শ্লটারবেক জাপানের দ্বিতীয় গোলটির জন্য অনেকাংশে দায়ী। তবে, জাপানের দ্বিতীয় গোলটির ক্ষেত্রে ম্যানুয়েল নয়ারের মাপের সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলরক্ষকের ফার্স্ট পোস্ট থেকে বল গলানো অত্যন্ত দৃষ্টিকটু।

জাপানের বিপক্ষে ম্যাচের সাতষট্টি মিনিটের মাথায় জার্মান ব্যান্ডমাস্টার গুন্ডোগানকে তুলে নেওয়াটা চরম ভুল। গুন্ডোগান উঠে যেতেই জার্মানরা মাঝমাঠের দখল হারিয়ে ফেললো। গুন্ডোগান নিচ থেকে বলটা ধরে খেলছিলেন বলে জোশুয়া কিমিচ বক্স – টু – বক্স ফ্রিলি মুভ করতে পারছিলেন। এক গোলের ব্যবধান টিকিয়ে রাখতে ফ্লিক গুন্ডোগানকে তুলে নিয়ে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গোরেৎজকাকে নামালেন। এক গোলের ব্যবধানে সন্তুষ্ট ফ্লিকের ডিফেন্সিভ কোচিংয়ের খেসারত দিতে হল জার্মানিকে।

৪ – ২ – ৩ – ১ ছকে দল নামানো জাপানি প্রশিক্ষক হাজিমে মরিয়াসু দ্বিতীয় অর্ধে ছক বদলে দুই স্ট্রাইকারে খেলে আক্রমণাত্মক কৌশলের সৌজন্যে ম্যাচ জিতে প্রশংসার দাবি রাখেন। বিশেষ করে গোল শোধ করার পর চার ডিফেন্ডার থেকে তিন ডিফেন্ডারের ছকে খেলে আক্রমণে লোক বাড়ানোর সাহসী কৌশল জয়ের মাধ্যমে পুরস্কৃত হল।

বদলি হিসেবে নেমে গোল দুটি করা দুই ফরোয়ার্ড জার্মানির ফ্রেইবুর্গের বছর চব্বিশের রিৎসু দোয়ান ও আর্সেনালের প্রাক্তনী স্ট্রাইকার বছর আঠাশের টাকুমা আসানো এবং লিভারপুলের প্রাক্তনী ফরোয়ার্ড টাকুমি মিনামিনো ভূয়সী প্রশংসার দাবি রাখেন। বিশেষ করে তিনজনের জার্মান ডিফেন্স উদ্দেশ্যে ডিরেক্ট রান জার্মান ডিফেন্ডারদের নাস্তানাবুদ করে ছাড়লো।

বছর তেত্রিশের জাপানি গোলরক্ষক শিউচি গোণ্ডার আটটা নিশ্চিত গোল বাঁচানো সেভ জাপানকে ম্যাচে রেখে দিয়েছিল। গত বারের মত এবারের বিশ্বকাপেও জার্মানদের পচা শামুকে পা কাটলো কিনা সেটা সময় বলবে। এবার দ্বিতীয় পর্বে যেতে হলে তাঁদের কঠিন সমীকরণের বাঁধা অতিক্রম করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link