More

Social Media

Light
Dark

শ্রীরাম-সাকিব জোট, ব্যাকফুটে সুজন

সাকিব আল হাসান ও শ্রীধরন শ্রীরামের জুটি জমে ‍উঠেছে। বিশ্বকাপ শেষেই শ্রীরামের সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চুক্তি শেষ হয়ে গেলেও ভেতরের খবর হল দীর্ঘ মেয়াদে তাঁকে চাইছেন সাকিব। তবে, সাকিব নাকি যতটাই মুগ্ধ শ্রীরামে ততটাই বিরক্ত টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের ওপর। বিরক্ত শ্রীরাম নিজেও।

কারণ, বিশ্বকাপের মঞ্চে সাকিব যে দলীয় নীতি প্রণয়ন করেছিলেন সেটা ভেঙেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সুজন। বিশ্বকাপে যাতে দলের মনোযোগে বিভ্রাট না ঘটে সেজন্য সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলায় জারি ছিল অলিখিত নিষেধাজ্ঞা।

খেলোয়াড় তো বটেই সাকিবের এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে না কোচিং স্টাফ ও সাথে থাকা বাকি সদস্যরাও। এমনকি বোর্ড কর্মকর্তা ও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও ছিলেন এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও ‘বিস্মিত’ হয়েছিলেন নিষেধাজ্ঞার কথা শুনে।

ads

বাংলাদেশের দলের বিবেচনায় সত্যিই বিষয়টা বিস্ময়কর হলেও সাকিব যা করছিলেন সেটা দলের স্বার্থেই। সুজন সেই নির্দেশনা না মেনে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। সাকিব বিষয়টা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। আর সাকিবের এই ক্ষোভ প্রকাশের ঘটনাটাও মিডিয়ায় বলে দেন সুজন।

তিনি বলেছিলেন, ‘সাকিব সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে দেখে রাগ করেছে। সে বললো, আপনি কথা বলতে কেন গেলেন? আমি তো বলেই দিলাম কথা বলা হবে না। এরপর থেকে নিজেকে নিয়ে বিব্রত বোধ করছি।’

বিব্রত বোধ করারই কথা। আর সাকিবই তো একমাত্র ব্যক্তি নন, যিনি ক্ষেপেছিলেন সুজনের ওপর। টিম কারফিউ ভাঙায় খোদ শ্রীরামও বিরক্ত ছিলেন সুজনের ওপর। তিনি সুজনকে সরাসরি এই ব্যাপারে চার্জও করেন। সব মিলিয়ে বিষয়টা সাকিব-শ্রীরাম বনাম সুজনে রূপ নিয়েছিল। ফলে, শ্রীরাম সাকিবের সুপারিশে এই যাত্রায় টিকে গেলেও সুজনের টিম ডিরেক্টর বদে আপাতত একটা বিরতি আসতে পারে।

এরকম বিরতি অবশ্য সুজনের ক্যারিয়ারে নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে টিম ম্যানেজারের দায়িত্ব থেকে সুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আর সেটাতে ভূমিকা ছিল তখনকার কোচ চান্দিকা হাতুুরুসিংহের।

শ্রীরাম অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী দলের সহকারী কোচ ছিলেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) শীর্ষস্থানীয় কোচ। বাংলাদেশেও এসেছেন তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে। আর এখানে তিনি নিজের মন মত পরিবেশ না পেলে থাকবেন না, আর তিনি না থাকলে তাঁর চাকরির অভাব না হলেও বিসিবির কোচের অভাব হবে। কারণ, আধুনিক ফ্র্যাঞ্চাইজির যুগে যেকোনো জাতীয় দলেরই কোচ পাওয়া মুশকিল। সেখানে বাংলাদেশের মত দলগুলোর জন্য মানসম্পন্ন কোচ পাওয়া যেন আরও দুস্কর।

আর ফলাফল যাই হোক, এটাই সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। দলের টি-টোয়েন্টি অ্যাপ্রোচে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। আর একটা ব্যাপার ঠিক যে টিম ম্যানেজমেন্টের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন অধিনায়ক সাকিব।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দলীয় সংস্কৃতিতে বিরাট এক পরিবর্তন এসেছে। এবার বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। বিষয়টা সহজ ছিল না, অধিনায়ক সাকিব ও টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীরাম রীতিমত বোর্ডের সাথে কথাবার্তা বলে বিষয়টা নিশ্চিত করেছিলেন। ড্রেসিংরুমে বাইরের হস্তক্ষেপ দলের জন্য ক্ষতিকর – বিষয়টা বোর্ড সভাপতি ও পরিচালক মহলে বোঝাতে পেরেছিলেন তাঁরা।

অন্য সব সময়ের মত তাই এবার বোর্ডের উচ্চমহল সরব ছিলেন না মিডিয়াতে। এমনকি বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও মিডিয়াতে মুখোমুখি হয়ে কোনো বেফাঁস মন্তব্য করেননি যেটা তিনি আগে বহুবার করেছেন। ব্রিসবেনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় দেখে দেশে ফিরে গিয়েছিলেন তিনিও। সেখানে সুজনের ‘মিডিয়া-বান্ধব’ হওয়াকে সাকিব-শ্রীরামের মত বোর্ডেরও এবার আর সহজ চোখে দেখার কথা নয়।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link