More

Social Media

Light
Dark

প্রকাণ্ড ইতিহাসের দুয়ারে দাঁড়িয়ে

ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট। গেল বছর খানিকটা অবাক করে দিয়েই তাঁরা জিতে নিয়েছিল গেল বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শিরোপা। সেটা অবশ্য তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম শিরোপা। এর আগে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের শিরোপাটা থেকে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যদিও ওয়ানডে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ বিজেতা অজিরাই।

তবে এবার সুযোগ থাকছে প্রথমবারের মত ঘরের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ডিফেন্ড করবার। অস্ট্রেলিয়া দল নিশ্চিতরুপেই চাইবে এই সুযোগটা হাতছাড়া না করতে। তবে সে পথটা নিশ্চয়ই খুব একটা সহজ হবে না, সে কথা বলে দেওয়া যায় নির্দ্বিধায়। এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় থ্রেট ইংল্যান্ড ও ভারত। তবে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বাকি প্রতিপক্ষদের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবার।

অস্ট্রেলিয়ার সাত ভেন্যুতে এবার বসতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। ১৬ দলের টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বের ম্যাচ শুরু হবে শ্রীলঙ্কা আর নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। তবে মূল পর্ব শুরু হবে ২২ তারিখ থেকে। মূল পর্বে খেলবে ১০ দল। সে দশ দলের মধ্যেই আগে থেকে অবস্থান ভারত ও ইংল্যান্ডের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিংয়ে ভারতের অবস্থান এক নম্বরে। সুতরাং ঠিক কতটুকু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে দলটি তা তো আন্দাজ করে নেওয়াই যায়।

ads

তবে র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান নিজেদের দখলে রাখলেও ২০০৭ সালের পর থেকে এখন অবধি দ্বিতীয় দফা ভারত জিততে পারেনি শিরোপা। দীর্ঘ প্রায় দেড় দশকের অপেক্ষার অবসান নিশ্চয়ই ঘটাতে চাইবে রাহুল দ্রাবিড়ের শির্ষ্যরা। তবে সপ্তাহ খানেক আগেই ভারত পেয়েছে একটা ধাক্কা। তাদের প্রাইম পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ থাকছেন না বিশ্বকাপ মিশনে। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করবার মত তেমন ভাল বিকল্পও নেই ভারতের কাছে এই মুহূর্তে।

তাছাড়া দলটির অন্যতম আস্থাভাজন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও থাকছেন না। হাঁটুর ইনজুরি তাকে ছিটকে দিয়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে। এই দুই সেটব্যাক নিয়েই ভারত নিশ্চয়ই লড়াই করতে চাইবে। তাঁরা হয়ত নিজেদের হারানো গৌরব ফিরে পেতে চাইবে। আর বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে অস্ট্রেলিয়ার ঘরের মাঠের শিরোপা জয়ের স্বপ্নে। ভারত না পারলেও নিশ্চয়ই ইংল্যান্ড সেই ফায়দাটা লুফে নিতে চাইবে।

এই মুহূর্তে বেশ বিধ্বংসী ফর্মে রয়েছে গোটা ইংল্যান্ড দল। ব্যাটে বলে সমানতালে পারফরম করছে ইংলিশ ক্রিকেটাররা। তবে ইংল্যান্ড দলও নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবার আগেই পেয়েছে এক দুঃসংবাদ। গলফ খেলতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছেন দলের নিয়মিত ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। তবে তাতে অবশ্য তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি ইংল্যান্ডকে।

তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে অ্যালেক্স হেলসকে। তিনি বরাবরের মতই বেশ মারকুটে ব্যাটার। আর একেবারেই প্রস্তুত হয়েই যেন তিনি যুক্ত হয়েছেন জাতীয় দলের সাথে। এসেই তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজের জাত চিনিয়েছেন নতুন করে। আস্থা জিতেছেন দলের অভিভাবকদের। তাইতো খানিকটা নির্ভার হয়ে আরেকটিবার শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতোয়ারা হতে চাইবে ইংল্যান্ড। তেমনটা হলে অবশ্য কপাল পুড়বে অস্ট্রেলিয়ার।

অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বাধিক চ্যাম্পিয়ন দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভুলে গেলে চলবে না। তাঁরাও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না অস্ট্রেলিয়াকে। যদিও তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম তেমন কোন আশা জাগায়না। তবুও তাদেরকে একেবারেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই অস্ট্রেলিয়ার।

এই দলগুলো ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার হুমকি হতে পারে শ্রীলঙ্কা। দলটি যদিও প্রথম পর্ব খেলছে, তবে সেটা পেছনের কারণ তাদের বিগত দিনের বাজে সময়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একটা দল হিসেবে দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। অপ্রত্যাশিত দল হিসেবে জিতে নিয়েছে এশিয়া কাপের শিরোপা। বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ তাদেরও রয়েছে। তাই শ্রীলঙ্কার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে অ্যারন ফিঞ্চের সতীর্থদের।

অস্ট্রেলিয়া দলকে বেশকিছু বাঁধাই অতিক্রম করতে হবে। সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান নিজেদের মিডল অর্ডার সমস্যার সমাধান খুঁজে পেলে নিশ্চয়ই তাঁরা শিরোপা জয়ের দাবীদার। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডও সবমিলিয়ে রয়েছে দারুণ ছন্দে। ভাগ্য সহায় হলে তাঁরাও হয়ত নিজেদের প্রথম কোন সাদা বলের শিরোপা জিতে নিতে সক্ষম।

এই সব কিছুই সম্ভাবনা। তবে বাস্তবের ময়দানে ফলাফলটা কার পক্ষে যাবে সেটা সময়ই বলে দেবে। তারকায় ঠাসা দলটা শেষমেশ কতদূর এগোবে সেটা জানতে অপেক্ষাই একমাত্র পথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link