More

Social Media

Light
Dark

এক অনাহত স্বাপ্নিক অভিযাত্রী

সুরিয়াকুমার যাদব, সংক্ষেপে ‘এস কে ওয়াই’ কিংবা স্কাই – এর নিমিত্তে তাকে ভারতের এক আকাশ বললে খুব একটা ভুল বলা হয় না। আর সে আকাশটা যে এই মুহূর্তে মেঘমুক্ত শুভ্রতায় পূর্ণ – সেটার স্বীকৃতিতে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না বৈকি। 

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে এই মুহূর্তে ৪ নম্বর জায়গাটায় অটোমেটিক চয়েস সুরিয়া কুমার যাদব। ২০২২ সাল জুড়ে যে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন তাতে পুরো ভারতের ব্যাটিং লাইন আপেরই মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন তিনি৷ পাঁচ হাফ সেঞ্চুরি আর এক সেঞ্চুরিতে এ বছরেই করেছেন ৭৩২ রান। ঘরের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ সিরিজ পার করার পর সেই ফর্ম ধরে রেখেছেন দক্ষিণা আফ্রিকা সিরিজেও। প্রথম ম্যাচেই খেলেছেন ৫০ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস।  

ঠিক তার আগের ম্যাচেই, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ৩৬ বলে ৬৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন সুরিয়া কুমার যাদব। এ ইনিংসের পরেই টি-টোয়েন্টি ব্যাটার র‍্যাংকিং-এ তিন নম্বর থেকে চলে এসেছেন দুইয়ে। অথচ ৬৯ রানের ইনিংস খেলা সে ম্যাচের আগের রাতে নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেও মাঠে নামতে চেয়েছিলেন। ম্যাচসেরা হওয়ার পর সে গল্পই শুনিয়েছেন সুরিয়া কুনার যাদব।

ads

সে ম্যাচের পরে সুরিয়ার সাথে মাইক হাতে আলাপচারিতায় দেখা যায় অক্ষর প্যাটেলকে। সেখানে অক্ষর প্রশ্ন করেন, ‘গত কাল রাতে ফিজিওর ঘরে কী করছিলে? তুমি রাত ৩ টার সময় জেগেই বা ছিলে কেন?’

সুরিয়াকুমার সে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘হঠাৎ করেই আবহাওয়ার বদল হয়েছিল। সেই সঙ্গে যাত্রার একটা ধকল ছিল। তাই পেট খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ ম্যাচটা ছিল আমাদের জন্য সিরিজ ডিসাইডার ম্যাচ। তাই চিকিৎসক ও ফিজিও কে বলেছিলাম, এটা যদি বিশ্বকাপের ফাইনাল হত, তা হলে কি আমি না খেলে থাকতে পারতাম! তাই আমাকে ওষুধ দিন, বা ইঞ্জেকশন, যে ভাবেই হোক আমাকে মাঠে নামতে হবে। সত্যি বলতে ভারতের জার্সিতে যখন মাঠে নামি তখন আমার মধ্যে একটা অন্য আবেগ কাজ করে।’

সুরিয়াকুমার যাদবের এমন নিবেদন অবশ্য শেষ পর্যন্ত ভারতের কাজেই এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার করা ১৮৬ রান তাড়া করতে নেমে লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মাকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন সুরিয়া। বিরাট কোহলীর সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান তিনি।

৩৬ বলে খেলেন ৬৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। আর ঐ ইনিংসই ভারতকে দেখিয়েছিল জয়ের পথ। যদিও জয় থেকে ৫৩ রান দূরে থাকতেই আউট হয়ে ছিলেন। তারপরও শেষ পর্যন্ত ভারতের জয়ের পথে সেটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। ৬ উইকেটের জয়ে সিরিজটাও নিজেদের করে নিয়েছিল তারা।

ফ্লিক থেকে শুরু করে কাভার ড্রাইভে উঁচিয়ে ছক্কা মারা, দারুণ সব শটের পসরা সাজিয়ে সুরিয়া কুমার যাদব এই মুহূর্তে সেরাদের কাতারেই রয়েছেন। তবে নিজের দুর্দান্ত ফর্ম আর সাথে দলের জন্য অসীম নিবেদন- এ দুইয়ের মিশেলে তিনি হয়ে উঠেছেন আরো অনন্য। এ অনন্যতায় এবার তাঁর আকাশ ছোঁয়ার পালা। যে আকাশ তার উপস্থিতিতিতে হবে মেঘমুক্ত আর শুভ্রময়।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link